আমি সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি। কিছু দিন পূর্বে ভার্চূয়াল কোর্ট সম্পর্কে সাতক্ষীরা বারে একটি সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সভায় উপস্থিত সদস্য দের সংখ্যা গরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
১)ভার্চূয়াল কোর্টের সিদ্ধান্ত কে স্বাগত জানানো হয়,।তবে সাতক্ষীরা সহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ অপ্রতুল হওয়ায় এই মুহূর্তে ভার্চূয়াল কোর্টেরসুবিধা থেকে অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছেন।
২)ধীর গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট এর কারণে ভার্চূয়াল কোর্টের কার্যক্রম বাধা গ্রস্ত হচ্ছে।
৩)কোর্টের P O.,CO,এবং BO গন কে মিনিমাম একটা প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত বলে মনে হয়। ৪)ভার্চূয়াল আদালতের পরিধি বিস্তৃত করতে হবে। (যেমন ফাইলিং(সকল ধরনের মামলা),স্যারেন্ডার,হাজিরা,সাক্ষী,যুক্তি তর্ক সহ একটি মামলা পরিচালনার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
৪) শুধুমাত্র ফৌজদারি মামলা নয়,একই ভাবে দেওয়ানী মামলা সমূহের ফাইলিং সহ যাবতীয় বিচারিক পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যবস্হা নিতে হবে। এই সঙ্গে আমার কিছু কথা এবং আমাদের কিছু সমস্যার কথা জানাতে চাই। জীবন এবং জীবিকা শব্দ দুই টা খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক যুক্ত। জীবনের জন্যই জীবিকার প্রয়োজন।বেচেঁ থাকার তাগিদে সবাই, সব কাজ করতে পারছেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে।
শুধু আইনজীবী গন পারছেন না, কেন আইনজীবী দের প্রতি এ জাতীয় বৈষম্য মূলক আচরণ? দেশের ১০% আইনজীবী হয়তো বৈরী সময়ে ভালো আছেন।উনারা দেশের সর্বোচ্চ আদালতে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা শহরে গাড়ি সহ অট্টালিকার মালিক। তাঁদের একটা ফ্ল্যাটের যে ভাড়ার টাকা পান, মফস্বল শহরের অনেক আইনজীবী তা একমাসে ইনকাম করতে পারেন না। মহামান্যআদালত আমাদের প্রথম শ্রেনীর নাগরিক হিসেবে সম্মানিত করেছেন, তবে আমি নিজ কে ডে লেবারের বেশী কিছু আপাতত ভাবতে পারছি না কোর্টে যেয়ে ক্লাইন্টের কাজ করলে তবে আমার পকেটে টাকা আসবে। তা নাহলে খালি পকেটে বাড়ি ফিরতে হবে।
আমাদের দেশের সরকারি চাকরিজীবী দের যেমন সংসার আছে, সন্তানাদি আছে , আমাদের ও তেমন আছে, আমাদের সন্তানরা আশা করে থাকে বাবা কোর্টে গেছে আজ ভালো মন্দ খাবো।কিন্তু আমাকে তো অনেক দিন খালি পকেটে বাড়ি ফিরতে হয়,তারপর এখন ভার্চূয়াল কোর্ট, আমারমতো অনেক কেই প্রশিক্ষণের অভাবে খালি পকেটে বাড়ি ফিরতে হয়। তাই সদাশয় সরকার বাহাদুরের নিকট দাবি জানাচ্ছি বিনা সুদে বিজ্ঞ আইনজীবী গন কে সম্মানজনক ঋণের ব্যবস্থা করুন। আমরা খেয়ে পরে বেঁচে থাকলে এই ঋন পরিশোধ করবো।
সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী ভবন থেকে মামলা পরিচালনার জন্য প্রতিনিয়ত আমাদের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিঃ কোর্টে যাতায়াত করতে হয়, একটি মেইন রোড পার হয়ে, যেখানে সব সময় যানজট লেগেই আছে। ইতিমধ্যে দুই টা তাজাপ্রাণ এইরোডে যানজটের কারণে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে। আমাদের মাননীয় আইনমন্ত্রী মহোদয় যখন চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিঃভবন উদ্বোধন করতে এসেছিলেন, সে দিন আমাদের সমস্যা টা উনাকে জানিয়ে ছিলাম, উনি বলেছিলেন বার্লিনেরপ্রাচীর একমাসের মধ্যে উঠে যাবে। অথচ আজ চার বছরে ও বার্লিনের প্রচীর উঠলো না। আমার জানার ভুল হতে পারে, তবে আমি যতটুকু জানি দেশের চীফ জুডিশিয়াল ভবন গুলো নির্মানের পূর্বে একনেকে পাস হয়।এবং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মহোদয় অনুমোদন করেন, আমাদের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিঃ ভবনে যাওয়ার জন্য মূল নকশায় পথের উল্লেখ ছিল এবং সেখানে একটা বড় গেটের ব্যবস্হা ওছিল।জানি না কোন কালো হাতের ইশারায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়ের আদেশ টা কার্যকরী হয়নি।
এ বিষয়ে আমি মাননীয় রাষ্ট্রপতি,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় আইন মন্ত্রী মহোদয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। অতিসম্প্রতি জেলা আইনজীবী সমিতির মূল ভবনের সামনে ৮/১০ গজ দুরে পি ডব্লিউ ডি র অনুমোদন ছাড়া একটি ডীপ কলের ২/৩গজ দুরে জেলা প্রশাসনের নকল খানার জন্য একটি ল্যাট্রিন তৈরি করা হচ্ছে, যার সোবট্যাংকি থেকে ডীপ কলের দুূরত্ব মাত্র ২/৩ গজ দুরে। এটা কি দন্ডবিধির ২৭৮ ধারা অনুযায়ী অপরাধ নয়? এক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন কে? আমি এই অপরাধীর শাস্তি দাবি করছি। সব শেষে আবারও ভার্চূয়াল কোর্ট সম্পর্কে বলতে চাই, শেরপুর জেলার বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিঃ জনাব এসএম হুমায়ুন কবির সাহেবের সাথে কথা বলে(রাত দশ টার সময়) জানতে পেরেছি সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সকল প্রকার ফাইলিং এবং স্যারেন্ডার চলছে। সাতক্ষীরা জেলার বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিঃ সাহেব কে অনুরোধ করবো বিষয় টি বিবেচনার জন্য।
Discussion about this post