নিজস্ব প্রতিবেদক: শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো গোডাউনে বিদেশ থেকে আমদানি করা বিপুল পরিমাণ মাস্ক চুরি ঘটনায় বিমান ও ঢাকা কাস্টমস হাউসের ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) গঠিত তদন্ত কমিটি। শনিবার তদন্ত কমিটির দেওয়া রিপোর্টে এই নির্দেশ প্রদান করে। আজ রবিবার (০৫ জুলাই) সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা রয়েছে।
বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান শনিবার রাতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, সিভিল এভিয়েশনের তদন্ত কমিটি তদন্ত শেষে দুই কার্টন মাস্ক চুরির তথ্য উদ্ঘাটন ও এর সঙ্গে জড়িত চোরদের তালিকা প্রদান করেছে। কমিটি তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও ঢাকা কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষের একটি সিন্ডিকেট এ চুরির সঙ্গে জড়িত ছিল।
চেয়ারম্যান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে তদন্ত রিপোর্টসহ চুরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের নামসহ দুটি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আজ-কালের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আশা করছি, তারা ব্যবস্থা নেবেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, চোরের খনিতে পরিণত হয়েছে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো গোডাউন। আর এ গোডাউন থেকে মালামাল খালাসের অফিসিয়াল দায়িত্ব হচ্ছে বিমান ও কাস্টমস হাউসের। এ সুযোগে দুটি প্রতিষ্ঠানের রক্ষকরাই এখন ভক্ষকের ভূমিকা পালন করছে। অভিযোগ রয়েছে, তাদের অপকর্মের কারণে দেশের একাধিক শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের সুমান ক্ষুন্ন হচ্ছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি বেবিচক চেয়ারম্যান বরাবর তমা গ্রুপের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরে তাদের আমদানি করা বিপুল পরিমাণ মাস্ক চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বেবিচক চেয়ারম্যান একটি শীর্ষ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এ তদন্ত কমিটি কার্গো কমপ্লেক্সে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে ও সিসি টিভির ফুটেজ যাচাই-বাছাই করে অভিযোগের সত্যতা পান। এরপর
জানা গেছে, সম্প্রতি তমা গ্রুপ কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের জন্য বিদেশ থেকে ৩ লাখ এন-৯৫ মাস্ক আমদানি করে। বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে আমদানি কার্গো এলাকায় তমা গ্রুপের আমদানি করা পণ্যের (এন-৯৫ মাস্ক) চালানের কিছু পণ্য চুরির ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেবিচকের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিবেদনে বিমানবন্দরের কার্গো গোডাউন অভ্যন্তরের চুরির সঙ্গে জড়িতদের নামের তালিকা প্রদান করা হয়েছে। মাস্ক চুরির সঙ্গে বাংলাদেশ বিমানের কার্গো শাখা ও ঢাকা কাস্টমস হাউসের অসাধু বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে; যা তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে তমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক রাতে বলেন, তিনি সিভিল এভিয়েশনে এ ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তিনি জানতে পেরেছেন তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয়েছে তাদের মাস্কগুলো বিমানবন্দরেই খোয়া গেছে।
Discussion about this post