ডেস্ক রিপোর্ট
মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের শিবচর কাঁঠালবাড়ী ফেরিঘাটে পদদলিত হয়ে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
ইমেইল ও কুরিয়ারযোগে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং নৌ-পরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালককে লিগ্যাল নোটিশে বিবাদী করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৩ মে) মানবাধিকার সংস্থা ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওসার এই নোটিশ পাঠান।
নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব।নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে নিহত প্রত্যেককের পরিবারকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।
তাছাড়া ফেরি পারাপারে যাত্রীদের বীমার আওতায় এনে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনায় সেখান থেকে অর্থ প্রদানের জন্য এবং ফেরিঘাটে সংঘটিত দুর্ঘটনাটি তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে অনুরোধ করা হয়েছে। তা না হলে আইনি প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ কর হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য সরকার গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন শুরু করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১৬ মে পর্যন্ত দেশব্যাপী লকডাউনের ঘোষণা রয়েছে। লকডাউনের সময়ে দূরপাল্লার বাসসহ আন্তঃজেলার যাত্রীবাহী বাস বন্ধ। বাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ নিয়োজিত রয়েছে। এত কিছুর পরও পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনে ঘরমুখো মানুষের জোয়ার ঠেকানো যায়নি।’
‘হাজার হাজার মানুষ গত কয়েকদিনে পদ্মা নদী পার হওয়ার জন্য বিভিন্ন ঘাটে জড়ো হয়েছেন। লকডাউনের কারণে ফেরিগুলো বন্ধ থাকার ফলে হাজার হাজার মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরিঘাটে অপেক্ষমান ছিলেন।’
নোটিশে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সীমিত সংখ্যক ফেরি চালু করলে হাজার হাজার মানুষ হুড়োহুড়ি করে ফেরিতে উঠে পড়েন। ফেরির যানবাহন রাখার খোলা জায়গায় তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। প্রখর রোদের তাপে ফেরি যখন বাংলাবাজার ঘাটের কাছাকাছি আসে তখনই অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করেন যাত্রীরা। পানির পিপাসায় হাঁসফাঁস করতে থাকেন তারা। ফেরি ঘাটে পৌঁছালে অসুস্থ যাত্রীদের মধ্যে পাঁচজনকে মৃত পাওয়া যায়।
নোটিশে আরও বলা হয়, ফেরিগুলো মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিটিএ’র সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থাকার পরও কর্তৃপক্ষ সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারার কারণেই এতগুলো প্রাণ অকালে ঝরে গেছে। তারা তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন।
বলা হয়, ‘দায়িত্ব পালনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলায় পাঁচজনের মৃত্যুসহ অসংখ্য মানুষ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছেন, যাদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।’
দেশের সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জীবনের অধিকার একটি মৌলিক অধিকার। ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২ -এর সরাসরি লঙ্ঘন করেছেন বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।।
Discussion about this post