ডেস্ক রিপোর্ট
ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার এএসআই ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।মামলার দুই আসামি হলেন এএসআই ওলিউল্লাহ সরকার সোহেল ও তার স্ত্রী রোকেয়া ওরফে রুনা। প্রধান আসামি হলেন হাফিজুর রহমান মেহেদী।
রোববার (১৯ ডিসেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম তামান্না ফারাহ’র আদালতে মামলা করেন এক কলেজছাত্রী ।আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ২৬ জানুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার বাদীর আইনজীবী আজাদ রহমান।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভিকটিমের সঙ্গে রোকেয়ার পরিচয় হয়। এ সূত্রে ভিকটিম তাদের সঙ্গে গত বছরের ২৫ জানুয়ারি সাবলেট হিসেবে রুম ভাড়া নেন। রোকেয়ার ভাই হাফিজুর রহমান মাঝে মধ্যে বোনের বাসায় আসা যাওয়া করতেন। ওলিউল্লাহ ও রোকেয়া ভিকটিমের সঙ্গে হাফিজুরকে অবিবাহিত বলে পরিচয় করিয়ে দেন।
এরপর ভিকটিম ও রোকেয়ার মধ্যে বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা একসঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করেন। বন্ধুত্বের সুবাদে ভিকটিমকে কুপ্রস্তাব দেন হাফিজুর রহমান। ভিকটিম তা প্রত্যাখ্যান করেন।
এরপর বিভিন্ন সময়ে হাফিজুর রহমান ভিকটিমকে প্ররোচনা দিয়ে শারীরিক সম্পর্কে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন। ভিকটিম অতিষ্ঠ হয়ে হাফিজুরকে বলেন বিয়ে করতে। এতে রাজি হন হাফিজুর। তবে বিয়ের বিষয়টি পরিবারকে জানাতে নিষেধ করেন। এতে ভিকটিম প্রথমে রাজি না হলেও পরে আসামির প্রতি ভালোবাসা ও দুর্বলতার কারণে রাজি হন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, বিয়ের রেজিস্ট্রির কথা বলে হাফিজুর ভিকটিমের কাছ থেকে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি নেন। গত ২১ মার্চ একটি হলফনামা তৈরি করে হাফিজুর দাবি করেন, ভিকটিমের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। ৬ লাখ টাকার একটি কাবিননামাও দেখান। পরে ভিকটিমসহ তিন আসামি একত্রে বসবাস করতে থাকেন। বিয়ের বিষয়টি ওলিউল্লাহ ও রোকেয়াকে জানালে তারা নীরব ভূমিকা পালন করেন।
এরপর হাফিজুর রহমান তার বিশেষ প্রয়োজনে ভিকটিমের কাছ থেকে গত ১৬ আগস্ট ৫০ হাজার এবং পরবর্তীতে আরও ৫০ হাজার টাকা নেন, যা পরে আত্মসাৎ করেন। এর আগে ওলিউল্লাহ ও রোকেয়াও ভিকটিমের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন।
হাফিজুরের কর্মস্থল ছিল ময়মনসিংহ শহরে। এজন্য ভিকটিমকে মাঝে মধ্যে সেখানে রেখে স্ত্রী হিসেবে ব্যবহার করতেন। এ অবস্থায় ভিকটিম গর্ভবতী হলে গত ৩০ অক্টোবর আসামিরা জোর করে তাকে ওষুধ সেবন করিয়ে বাচ্চা নষ্ট করেন। গত ২ নভেম্বর হাফিজুর রহমান আবার ময়মনসিংহ চলে যান।
পরে গত ৬ নভেম্বর হাফিজুরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ভিকটিম। তখন হাফিজুর ভিকটিমকে জানান, তাকে তিনি বিয়ে করেননি। তিনি স্ত্রী-সন্তানের কথাও জানান। পরে গত ১২ নভেম্বর ওলিউল্লাহ ও রোকেয়া একই কথা জানান। এরপর ওই দিন ভিকটিমকে বাসা থেকে বের করে দেন তারা।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে হলফনামা তৈরি করে তার কাছ থেকে দেড় লাখ আত্মসাৎ করেন আসামিরা। এছাড়া বিয়ে না করে হাফিজুর তাকে ধর্ষণ করেন ও এএসআই ওলিউল্লাহ এবং তার স্ত্রী রোকেয়া এতে সহযোগিতা করেন।
Discussion about this post