ভারতের পশ্চিমবঙ্গে একটি বিশেষ দ্রুত বিচার আদালত বসানো হয়েছে যেখানে শুধুই নারী নির্যাতন সংক্রান্ত মামলাগুলির বিচার হয়। ভারতে প্রথম বিশেষ এই নারী আদালতের বিচারক, আইনজীবী, কর্মচারী- সবাই নারী। পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলায় এ আদালত অবস্থিত।
ভারতে মহিলাদের ওপরে যৌন নির্যাতনের ক্রমবর্ধমান ঘটনা এবং দিল্লির সাম্প্রতিক গণ ধর্ষণের ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রতিটি রাজ্যকেই এধরণের বিশেষ মহিলা আদালত তৈরির উপদেশ দিয়েছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত, সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশে অনুসারেই, পশ্চিমবঙ্গে ২০১৪ সালে প্রথম এই ধরণের বিশেষ নারী আদালত গঠিত হয়।
শুরুতেই এই আদালতের জন্য দুজন মহিলা বিচারক ও কর্মী নিয়োগ করা হয়। সরকারী উকিল হিসাবে মালদা আদালতেরই দুজন মহিলা সরকারী আইনজীবীকে নিয়োগ করা হয়।
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র বিশেষ আদালত তৈরির জন্য জারী করা আদেশে বলেছেন, মহিলাদের ওপরে অত্যাচারের মামলাগুলি যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি করা যায়, তার জন্যই এই মহিলা আদালত।
এতে বিচারক, আইনজীবী ও কর্মীরাও মহিলা হলে বিচার প্রার্থী নির্যাতিতা মহিলারা সচ্ছন্দ্য বোধ করবেন বলে তাঁর নির্দেশে জানিয়েছেন বিচারপতি মিশ্র।
অল ইন্ডিয়া বার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ মুখার্জীও মনে করেন মহিলা বিচারক ও কর্মীদের সামনে সহজে অত্যাচারের ঘটনা বলতে পারবেন মহিলারা।
বিশেষ আদালতগুলিতে মহিলা বিচারক নিয়োগের বিষয়টিকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রবীণ আইনজীবী ভারতী মুৎসুদ্দি। কারণ, তাঁর কথা, পুরুষ বিচারকদের মধ্যে অনেক সময়েই মহিলাদের ওপরে নির্যাতনের মামলায় সংবেদনশীলতার অভাব থাকে।
আইনজীবীরা বলছেন, দেশে মহিলাদের ওপরে নির্যাতনের দ্রুত বিচারের জন্য বিশেষ মহিলা আদালত গঠন করতে ভারতের বিচারব্যবস্থা এমনিতেই অনেক দেরী করে ফেলেছে। এ নিয়ে বাড়তি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে দিল্লীতে সাম্প্রতিক গণধর্ষণ ও দেশজুড়ে তার প্রতিবাদের পরেই।
এদিকে সাবেক প্রধান বিচারপতি কে এস ভার্মা কমিশন নারী নির্যাতনের সংজ্ঞা বাড়ানো, নারী বিচারকসহ বিশেষ আদালতে নারী নির্যাতনের বিচার ও ধর্ষণ মামলা সংক্রান্ত আইন সংশোধনসহ বিভিন্ন সুপারিশ করেছে। তিন সদস্যের কমিশন রিপোর্টে শাস্তি বাড়ানোর সুপারিশ করলেও মৃত্যুদণ্ড দেয়ার সুপারিশ করেনি।
Discussion about this post