নিজস্ব প্রতিবেদক: বাড্ডায় স্কুলে সন্তান ভর্তির খবর নিতে গেলে তাসলিমা বেগম রেণুকে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে গণপিটুনি দেয় এমন ৭-৮ জনের নাম বলেছে রেণু হত্যা মামলার প্রধান আসামি হৃদয়। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশকে এ তথ্য দিয়েছে।
আজ বুধবার (২৪ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিবির এডিশনাল কমিশনার আবদুল বাতেন।
আবদুল বাতেন বলেন, হৃদয় যাদের নাম বলেছে তদন্ত ও গ্রেফতারের স্বার্থে আমরা তাদের নাম-পরিচয় এখনই প্রকাশ করছি না। যে অভিভাবক রেণুকে ছেলেধরা বলে সম্বোধন করেছিলেন, তার বিষয়েও আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি এবং বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। হৃদয় জানিয়েছে, সেসহ আরও ১০-১৫ জন দরজা ভেঙে ওই নারীকে (রেণু) বাইরে বের করে আনে। এরপর তাকে মারধর করে তারা। গণপিটুনির একপর্যায়ে রেণুর মৃত্যু হয়।
ডিবির এডিশনাল কমিশনার বলেন, গ্রেফতারকৃত হৃদয়ের মা-বাবা নেই। সে ওই এলাকার সবজি বিক্রেতা। ঘটনার দিন ওই স্কুলের পাশে সবজি বিক্রি করছিল সে। সেদিন ওই নারী (রেণু) স্কুলে তার সন্তান ভর্তির বিষয়ে খোঁজ নিতে এলে একজন অভিভাবক তার পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। এ সময় ওই অভিভাবকের সন্দেহ হলে রেণুকে ছেলেধরা বলে সম্বোধন করেন। হৃদয় এ কথা শুনে সবজি বিক্রি রেখে সেখানে ছুটে যায়। এ সময় সেখানে হৃদয় এবং ওই অভিভাবকসহ ১৫-২০ জন লোকের একটা জটলা তৈরি হয়। এর মধ্যে স্কুল কর্তৃপক্ষ ভিকটিম রেণুকে তাদের স্কুলের একটি রুমে নিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখে। একপর্যায়ে ছোট জটলাটি বড় জটলায় রূপ নেয় এবং ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এরপর লোকজন উত্তেজিত হয়ে স্কুলের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে ১০-১৫ জনের একটি দল স্কুলের ভেতরে ঢুকে পড়ে। তারা তালা ভেঙে ওই নারীকে বাইরে বের করে নিয়ে আসে এবং তাকে গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান রেণু।
আবদুল বাতেন বলেন, এই ঘটনার পরে হৃদয় যখন জানতে পারে পুলিশ তাকে খুঁজছে, তখন সে নারায়ণগঞ্জের ভুলতায় পালিয়ে যায়। গ্রেফতার এড়াতে মাথার চুল ন্যাড়া করে ফেলে। সে ঢাকায় তার নানির সঙ্গে থাকতো। নানিকে সে বলে, তার জামাকাপড়গুলো পুড়িয়ে ফেলতে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের ভুলতা থেকে আমরা হৃদয়কে গ্রেফতার করি এবং তার ব্যবহৃত কাপড়গুলো উদ্ধার করি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আবদুল বাতেন বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির সুনির্দিষ্ট কোনও প্রমাণ আমরা এখনও পাইনি। পুলিশ ৪০ মিনিট পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায়’ এই তথ্যটি সঠিক নয়। ঘটনার সময় পুলিশ পাশেই ছিল। তারা ঘটনার পরপরই সেখানে উপস্থিত হয় এবং জনগণকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে।




Discussion about this post