জমি সংক্রান্ত মামলার রায়, ডিক্রি ও আদেশের নিষ্পত্তির জন্য ‘ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল’ গঠন করতে ভূমি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ-সংক্রান্ত বিষয়ে প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে রায়ের আদেশ বাস্তবায়ন করে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে হলফনামা দাখিল করতে বলা হয়েছে।
স্বপ্রণোদিত হয়ে জারি করা এ-সংক্রান্ত এক রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৯ সালের ২৫ জুলাই সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করেছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ।রায় প্রদানকারী বিচারকদের স্বাক্ষরের পর সোমবার (১২ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে বিস্তারিত নির্দেশনাগুলো এসেছে।
রায়ের পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, ‘২০০৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৫ বছরে ভূমি মন্ত্রণালয় আপিল ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করতে না পারায়, লাখ লাখ মানুষ চরম ও সীমাহীন দুর্ভোগে নিমজ্জিত হয়েছে। সরকার নিজের আইন নিজে যথাযথ এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে, এটাই সবার কাম্য।’
রায়ে বলা হয়, ‘যেখানে জাতির পিতা সংগ্রাম করেছেন সাধারণ মানুষকে হয়রানিমুক্ত বিচার পাইয়ে দেয়ার জন্য, যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে জাতীয় সকল গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি শাসনতন্ত্র তথা সংবিধানের মতো গুরুত্বপূর্ণ আইন ৯ মাস সময়ের মধ্যে প্রণয়ন করেছেন, সেখানে ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ‘এক পাতার’ একটি প্রজ্ঞাপন করতে না পারা ভূমি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী এবং সচিবের চরম ব্যর্থতা।’
‘সংবিধানের ৭(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এদেশের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। সেই মালিককে তথা জনগণকে ২০০৪ সাল থেকে দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত হয়রানি করে চলেছে ভূমি মন্ত্রণালয়।’
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৯ সালের ২৫ জুলাই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে জারি করা এ সংক্রান্ত রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় প্রদান করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর বিচারপতিদের স্বাক্ষরের পর সেই রায়ের লিখিত অনুলিপি প্রকাশিত হলো।
রায়টি লিখেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল। তাতে সম্মতি দিয়েছেন হাইকোর্টের অপর বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী।
Discussion about this post