বর্তমানে শিক্ষানবিশদের আইনজীবীদের জন্য একটা ভালো লাগার বিষয় হল জুনিয়রদের দাবী-দাওয়াগুলো নিয়ে সিনিয়র বিজ্ঞ আইনজীবীরা শুরুতে দ্বিমত পোষণ ও কটু মন্তব্য করলেও বর্তমানে বাস্তবতা বুজতে পেরে জুনিয়রদের জন্য তারা সহানুভূতির হাত প্রসারিত করতেছেন। এ বোধগম্য টুকু বার কাউন্সিলের বিজ্ঞ কর্তাদের হৃদয়ে একটু জাগ্রত হলেই আশা করি হাজার হাজার জুনিয়রদের হৃদয়বিদারক কান্নার রোল থেমে যাবে। আসলে আইন পেশায় জুনিয়রদের প্রতি সিনিয়রদের ভ্রাতৃত্ব ও সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে না দিলে নবীনরা এ পেশায় হতাশ ও সিনিয়রদের প্রতি আশাহত হবে।
সিনিয়রদের উচিত আগামী প্রজন্মের জুনিয়রদের জন্য পথ কে মসৃণ করে দিয়ে যাওয়া। বর্তমানেও যারা বার কাউন্সিল -কে সক্রিয় করার জন্য বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রাম করে যাচ্ছে কিছুদিন পরে তারও হয়ত আর শিক্ষানবিশ থাকবে না, কিন্তু তাদের পরিশ্রমের ফলশ্রুতিতে পরবর্তী জেনারেশনে যারা আইনজ্ঞনে আসবে তারা এই সুবাতাসের ঘ্রাণ ভোগ করতে পারবে। একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা ক্লিয়ার হবে। তা হল- গত কয়েক বছর আগে যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স -মাস্টার্স করতো তাদের মধ্যে অনেকে দীর্ঘ সেশন জটের চাকায় পিষ্ট হয়ে হতাশ হয়ে সুইসাইডের ঘটনাও ঘটিয়েছিল। ৮-৯ বছর চলে গেলেও তখন তারা গ্রাজুয়েশন এবং পোস্ট গ্রাজুয়েশন শেষ করতে পারত না। কিন্তু বিভিন্ন আন্দোলন, পদক্ষেপ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের ফলশ্রুতিতে এখন পাব্লিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনেক দ্রুত বাৎসরিক কার্যক্রম সম্পন্ন করতেছে।
তেমনিভাবে ইনশাল্লাহ বার কাউন্সিলও একদিন সংস্কার হবে এ আন্দোলনগুলো ও সিনিয়রদের বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে। বর্তমানে চলমান আন্দোলন সম্পর্কে অনেকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন, শিক্ষানবিশরা সনদ দেয়ার দাবী না তুলে দ্রুত পরীক্ষা নেয়ার দাবী তুলতেছে না কেন??
বিষয়টা হল- সরকারীভাবে ঘোষণা এসেছে সরকারী নিয়োগ পরীক্ষা নভেম্বরের পরে হবে। সে ক্ষেত্রে পরীক্ষার জন্য আন্দোলন করলেও বার কাউন্সিলের পরিক্ষার ডেট নভেম্বর এর আগে দেয়ার সম্ভাবনা কম। দ্বিতীয়ত, আমাদেরকে নিয়ে মূল হয়রানিটা রিটেন এর পরেও থেকে যাবে, দেখা যাবে যে রিটেন নিলেও তার রেজাল্ট দিতেও ২০২১ সালের অর্ধ বছরের বেশী পার হয়ে যাবে, তখন এই শিক্ষানবিশদেরকে আবার রিটেনের রেজাল্ট পাব্লিশড এর জন্য রাস্তায় নামতে হবে।
তারপর ভাইভা ও অন্যান্য প্রসিডিউর সম্পন্ন করতে বিলম্বের প্রহর আরও কতদিন গুনতে হবে তার কোন ইয়ত্তা নাই। পৃথিবীর ইতিহাসে এইরকম ন্যাক্কারজনক ঘটনা আছে কিনা আমাদের জানা নেই যেখানে দ্রুত সিড়ি বেয়ে আইনঙ্গনে দাপিয়ে বেড়ানোর এই বয়সে পরীক্ষার জন্য রাস্তায় নেমে কান্না কাটি করতে হয়েছে। জানিনা আমাদের কান্নাকাটি আরও কতদিন এভাবে চলতে থাকবে। অন্তত বার কাউন্সিল-কে ঘুম থেকে জাগ্রত করার জন্য হলেও চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখার কোন বিকল্প নেই।
Discussion about this post