ডেস্ক রিপোর্ট: শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডি জেলায় বৌদ্ধ-মুসলমান সংঘর্ষের জের ধরে ১০ দিনের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার সরকারের এক মুখপাত্র এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে সোমবার শ্রীলঙ্কায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় এক সিংহলি নিহত ও মুসলমানদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় উত্তেজনা দেখা দেয়ায় দেশটির জনপ্রিয় পর্যটন শহর ক্যান্ডি জেলায় সান্ধ্য আইন জারি করা হয়েছে।
সোমবার পুলিশ জানিয়েছে, সাপ্তাহিক ছুটির দিন থেকে শহরটিতে দাঙ্গা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সান্ধ্য আইন জারি করা হয়েছে।
আল জাজিরা জানিয়েছে, দক্ষিণ এশীয় দ্বীপ রাষ্ট্রটি জুড়ে ব্যাপক দাঙ্গা ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হওয়ার আশঙ্কায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মুসলমানদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে উচ্ছৃঙ্খল জনতা অগ্নিসংযোগ করেছে। দেশটির পূর্বাঞ্চলের একটি মসজিদেও হামলা করা হয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ ঘটনায় পুলিশ দুই ডজন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে। পুলিশের আচরণ নিয়ে সেখানে তদন্ত কার্যক্রমও শুরু হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস শ্রীলঙ্কার নির্বাহী পরিচালক রজিত কার্থি টেন্নাকুন বলেন, সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ চরম অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। যে কারণে দাঙ্গা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সিংহলিদের সকাল ১০টায় টেলডেনিয়া শহরে জড়ো করা হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে সবাই জড়ো হলে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রবণতা তৈরি হয়। দুপুর ১টা থেকে মুসলমানদের সম্পদ ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ শুরু হয়।
দাঙ্গায় আহত হয়ে দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলীদের একজন নিহত হওয়ার পর সহিংসতা চরম মাত্রায় চলে যায়। সাম্প্রদায়িক ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহিংসতা শুরু হওয়া সর্বশেষ শহর হচ্ছে ক্যান্ডি।
ন্যাশনাল ফ্রন্ট ফর গুড গভর্নেন্স পার্টির নাজাহ মোহামেদ বলেন, দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। দেশটিতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও দাঙ্গা দিনে দিনে বাড়ছে।
চরমপন্থি বৌদ্ধদের অভিযোগ, মুসলমানরা জোর করে বৌদ্ধদের ধর্মান্তরিত করছে। বৌদ্ধ কিছু জাতীয়তাবাদী কয়েকটি গ্রুপ সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলমানদের শ্রীলঙ্কায় আশ্রয় দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভও করেছে।
মুখপাত্র দয়াসিরি জয়াসেকারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা যাতে ছড়িয়ে না পরে সেজন্য ১০ দিনের জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘যারা ফেসবুকের মাধ্যমে সহিংসতা উস্কে দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
Discussion about this post