নিজস্ব প্রতিবেদক: অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় চার পুলিশসহ সাত আসামিকে সাত দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হলে তাদের কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে তাদের আদালতে হাজির করলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠান। এর আগে ১২ আগস্ট এ মামলায় চার পুলিশ সদস্যসহ সাতজনের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো সাত আসামি হলেন- কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল-মামুন ও এএসআই লিটন মিয়া। অন্য তিনজন পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়ার মারিশবনিয়া এলাকার মো. নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াছ।
মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্তকৃত ইনচার্জ লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতের তৃতীয় দিনের মতো রিমান্ড চলছে।
৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরিদর্শক লিয়াকত আলী, ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পরদিন বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপসহ সাত আসামি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তদন্তকারী কর্মকর্তার রিমান্ডের আবেদেন করলে আদালত ওসি প্রদীপ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত ও এসআই নন্দদুলাল রক্ষিতের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি চার পুলিশ সদস্যকে দুদিন কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, চার পুলিশ সদস্যকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। যে কারণে সোমবার (১০ আগস্ট) বিকালে তাদের বিরুদ্ধে পুনরায় ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। পাশাপাশি পর দিন মঙ্গলবার দুপুরে টেকনাফ মারিশবনিয়া থেকে আটক করা হয় পুলিশের দায়েরকৃত মামলার তিন সাক্ষীকে। তাদেরও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসে। যে কারণে ওই দিন তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়।
আদালত সাতজনের রিমান্ডের শুনানি দিন ধার্য করেন বুধবার। এদিন র্যাবের করা পৃথক দুই রিমান্ড আবেদনের শুনানি করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ। শুনানি শেষে আদালত চার পুলিশসহ সাতজনকে সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষী সম্প্রতি গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছিলেন, সিনহা হত্যার ঘটনা তারা কেউ নিজের চোখে দেখেননি। ঘটনার পর স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে তাদের ডেকে নেয়া হয়। পরে সকালে টেকনাফ থানায় নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন তারা। পরে জানতে পারেন তাদের সাক্ষী করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত ঈদের আগের রাতে (৩১ জুলাই) কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ রোডে টেকনাফের বাহারছড়া চেকপোস্টে তল্লাশির সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
Discussion about this post