নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে দূষিত পানির বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। এতে সাম্প্রতিক সময়ে প্রথমবারের মতো রাজধানীর ৬৯টি এলাকায় নিজেদের সরবরাহ করা পানি দূষিত বলে স্বীকার করেছে ঢাকা ওয়াসা।
আজ বৃহস্পতিবার আদালতে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে একথা উল্লেখ করা হয়। বিচারপতি জেবিএম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়।
প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় আদালত মন্তব্য করেন, কেবল পানি উৎপাদন করা ওয়াসার এমডির দায়িত্ব নয়, মানুষের দোরগোড়ায় বিশুদ্ধ পানি পৌঁছে দেওয়ায় তার কাজ। একই সাথে ওয়াসার পানি দূষণের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধানের মতামত জানতে চায় আদালত। ২১ মে তাকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ওয়াসার প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার ৬৯ এলাকার পানি বেশি দূষিত। ওয়াসার সরবরাহকৃত বাসা বাড়ির ট্যাপের পানি পরীক্ষা করে এই প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ঢাকা ওয়াসার পানি পরীক্ষায় কত টাকা খরচ হবে, তা জানিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় হাইকোর্টে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এই প্রতিবেদন গতকাল বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে পৌঁছে। আজ বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
প্রতিবেদনে দুই দফায় পানির এক হাজার ৬৪টি নমুনা পরীক্ষায় খরচ ধরা হয়েছে ৭৫ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে নিজস্ব ল্যাবে খরচ হবে ৫০ লাখ ৭৬ হাজার ৫০০ টাকা এবং দ্বিতীয় দফায় বুয়েটের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষায় খরচ হবে ২৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
এর আগে গত ১৭ এপ্রিল বুধবার টিআইবি ‘ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক প্রতিবেদনে জানায়, ঢাকা ওয়াসার পানির নিম্নমানের কারণে ৯৩ শতাংশ গ্রাহক বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি পানের উপযোগী করে। এর মধ্যে ৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে পান করে। গৃহস্থালি পর্যায়ে পানি ফুটিয়ে পানের উপযোগী করতে প্রতিবছর আনুমানিক ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাসের অপচয় হয়।
এরপর গত ২০ এপ্রিল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে করে টিআইবির গবেষণা প্রত্যাখ্যান করেন ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান। এসময় তিনি বলেন, ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ করা পানি উৎস থেকে গ্রাহকের জলাধার পর্যন্ত পানি সম্পূর্ণ শতভাগ বিশুদ্ধ ও নিরাপদ।
তিনি আরো বলেন, ওয়াসার পানির নিম্ন মান সম্পর্কে টিআইবির তথ্য সঠিক নয়। ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়। কোনো ধরনের ল্যাব টেস্ট না করেই টিআইবি এ মন্তব্য করেছে।
আমরা গত ১১ থেকে ১৯ নভেম্বর ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ২৪৩টি পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এই নমুনা পরীক্ষা করে পানির মান সন্তোষজনক পাওয়া গেছে। তবে মাঝে মধ্যে কিছু পুরোনো সরবরাহ লাইনে দূষণ পানি পাওয়া যায়। যা দ্রুত সময়ের মধ্যে ঠিক করা হয়।




Discussion about this post