ফেনী প্রতিনিধি: ফেনীর সোনাগাজীতে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে দগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির (১৮) মৃত্যুর ঘটনায এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এঘটনার রেশ না কাটতেই আবারো হাত পা বেঁধে আগুনে পুড়িয়ে আবু সালেহ মীম (২২) নামে এক যুবককে হত্যার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা।
গতকার বুধবার সন্ধ্যার পর পরই সোনাগাজী পৌরসভার চর গণেশ এলাকায় এই নতুন আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে।
পারিবারিক সূত্রে জানায়, আবু সালেহ মীম ঢাকার পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। গত ৭ এপ্রিল তিনি ঢাকা থেকে বাড়ি আসেন।
বুধবার সন্ধ্যায় চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন ছুটে এসে আবু সালেহকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উঠানে পড়ে থাকতে দেখে। এ সময় তার শরীরের পোশাক কেরোসিন তেলে ভেজা দেখতে পান স্বজনরা। পরবর্তিতে বাড়ির লোকজন তাকে সজ্ঞাহীন অবস্থায় ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবসাথার অবনতি হলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল (চমেক) কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
আবু সালেহের বোন বলেন, দুর্বৃত্তরা কেরোসিন ঢেলে আগুন দিতে চেষ্টা করেছিলো, কিন্তু লোকজন এসে পড়ায় তারা আর আগুন দিতে পারেনি। আমার ভাইকে আল্লাহ রক্ষা করেছেন।
ফেনী জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ ওবায়েদুল্লাহ্ বলেন, ছেলেটির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় এজন্য তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এরআগে, গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার সলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসাকেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় মাদ্রারাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই ভবনের চার তলায় যান। এসময় বোরকা পড়া চার জন মামলা তুলে নিতে বলে। তাতে রাজি না হওয়ায় ওড়না দিয়ে হাত বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
আগুনে হত্যাচেষ্টার পর নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। আগুনে তার শরীরের ৭৫ শতাংশ আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠণ করা হয়। সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নুসরাত।




Discussion about this post