নিজস্ব প্রতিবেদক: তুষার দাস ও সুষ্মিতা দেবনাথ অদিতি। দুই বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেন তারা। ইতিমধ্যে এই দম্পতির কোলজুড়ে এসেছে ফুটফুটে এক মেয়ে সন্তান। কিন্তু এখনো এই বিয়ে মেনে নিতে পারেনি সুষ্মিতার বাবা ও মা। আর একারণে তুষারের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা ঠুকেছেন অদিতির মা। সেই মামলায় মামলায় ১৪ বছরের সাজায় দন্ডিত হয়ে তুষার ২৮ দিন ধরে কারাগারে। তাকে কারামুক্ত করতে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন অদিতি।
আজ বৃহস্পতিবার তুষারের করা আপিলের শুনানি শুরু হবে বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে।
আদালতে তুষারের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেবেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তার সঙ্গে আছেন-আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসাইন।
আইনজীবী শিশির মনির গণমাধ্যমকে বলেন, মানবিক কারণে মামলাটি লড়তে যাচ্ছি। বিচারিক আদালতের ১৪ বছরের সাজা সঠিক হয়নি। আশা করি উচ্চ আদালতে ন্যায়বিচার পাবে ভুক্তভোগী এ দম্পতি। আর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত বলেছেন, হিন্দু ধর্মে অসম বর্ণের মধ্যে বিয়েতে আইনগত বাধা নেই।

সুষ্মিতা বলেন, আমাদের একটাই অপরাধ আমরা ভালোবেসে বিয়ে করেছি। আইনের মারপ্যাচে আমাদের জীবন আজ বিপন্ন। স্বামীকে মুক্ত করতে ৮৮ দিন বয়সের শিশু সন্তান নিয়ে আমাকে আদালতের দ্বারে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে।
এর আগে তুষারের বিরুদ্ধে অদিতির মায়ের করা অপহরণ ও মামলায় অদিতিকে ভালোবেসে বিয়ের করার বিষয়টিকে আমলে না নিয়ে তাকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন শরীয়তপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা জজ আবদুস ছালাম খান।
রায়ে আদালত বলেছেন, ‘আসামি তুষার দাস ওরফে রাজ সুষ্মিতা দেবনাথ ওরফে অদিতিকে অপহরণ করে নিয়ে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। আসামি শিশু সুষ্মিতাকে বিয়ে করবেন এই আশ্বাস দিয়ে এই অপহরণ করেছেন। যা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ কারণে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হলো।’
তবে আসামির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেয়া হয়েছে। রায়ের পর গত ৩ জুলাই আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত কারাগারে পাঠান তুষারকে। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন তুষার। সেখান থেকে তিনি আপিল করেন।




Discussion about this post