নিজস্ব প্রতিবেদক: সাক্ষী না আসায় চার বছরেও শেষ হয়নি রাজধানীর পুরান ঢাকার হোসনি দালানে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় বোমা হামলা মামলার বিচার। এজন্য সাক্ষীদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিও করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৩১ মে জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) ১০ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। অভিযোগ গঠনের পর ৪৬ সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ১১ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। সর্বশেষ গত বছরের ২২ অক্টোবর জৈনিক আবু সাঈদ নামে এক ব্যক্তি আদালতে সাক্ষ্য দেন। এরপর আর কোনো সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেননি।
সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি বিচারাধীন। ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু এ প্রসঙ্গে বলেন, পুরান ঢাকার হোসনি দালানের তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলা মামলার সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত হচ্ছেন না। তাদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরও তারা আদালতে উপস্থিত হচ্ছেন না।
তিনি আরো বলেন, সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করার দায়িত্ব তো পুলিশের। তাদের আদালতে উপস্থিত করানোর বিষয়ে পুলিশকে আরও সচেতন হতে হবে।
এবিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, তদন্ত শেষে এ মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দেয়া হয়েছে। আদালত যখন বলবেন, তখন মামলার সাক্ষীদের হাজির করানো হবে।
আর আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেন, সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রপক্ষের। রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে সাক্ষী উপস্থিত না করায় মামলাটির সাক্ষ্য হচ্ছে না। রাষ্ট্রপক্ষের উচিত সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করানো।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে জেএমবির সদস্যরা হোসনি দালানে গ্রেনেড হামলা চালায়। এতে দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হন। পরে ওই ঘটনায় চকবাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করেন। পরবর্তিতে ২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর ঢাকা মহানগর হাকিম আব্দুল্লাহ আল মাসুদের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক শফি উদ্দিন ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটের সবাই জেএমবির সদস্য বলে উল্লেখ করা হয়।
২০১৭ সালের ৩১ মে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে মামলাটি অষ্টম অতিরিক্ত আদালতে বদলি করা হয়। গত বছরের ১৪ মে মামলাটি অষ্টম অতিরিক্ত আদালত থেকে সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে বদলি করা হয়। বর্তমানে সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
মামলার আসামিদের মধ্যে কবির হোসেন, জাহিদ হাসান, রুবেল ইসলাম আবু সাঈদ, আরমান ও মাসুদ রানা বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছে। হাফেজ আহসান উল্লাহ মাসুদ, শাহ জালাল, ওমর ফারুক ও চাঁন মিয়া জামিনে আছেন।




Discussion about this post