ভৈরব প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সাদিয়া বেগম (১৮) নামে এক গৃহকর্মীকে লাঠিপেটা ও গরম পানি ঢেলে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগে স্বামী-স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। সাদিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার সিংগেরকান্দা গ্রামে। সাদিয়া বাবা-মা হারা একজন এতিম সন্তান। তার বাবার নাম জামাল মিয়া।
গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাদিয়াকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশের হাতে আটক স্বামী-স্ত্রী হলেন- ভৈরব বাজারের গিয়াস উদ্দিন মিয়ার মেয়ে গৃহকর্ত্রী মেহেরুন্নেছা অপি এবং তার স্বামী উপজেলার শিমুলকান্দি গ্রামের হাজী উসমান গণির ছেলে তানভীর রাফসান সাদলী।
জানা গেছে, সাত বছর আগে সাদিয়া বেগম তার দুঃসর্ম্পকের এক খালার মাধ্যমে ভৈরব বাজারের গৃহকর্ত্রী মেহেরুন্নেছা অপির বাসায় কাজের মেয়ে হিসেবে আসে। প্রথম দিকে তাকে কাজের জন্য নির্যাতন করা হতো না। কয়েক বছর যাওয়ার পর কাজ করতে গিয়ে তুচ্ছ ঘটনায় তাকে মারধরসহ প্রায়ই তার হাতে গরম খুনতির ছ্যাঁকা দিত। অনেক সময় তার হাত-পা বেঁধে বেধরক মারপিট করা হতো। তাকে কখনো বাসার বাইরে যেতে দিত না। এমনকি গৃহকর্ত্রী বাসার বাইরে গেলে তাকে তালাবদ্ধ করে ঘরে রেখে যেত।
সাদিয়া জানায়, সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কাজের সময় একটি ছুড়ি ভেঙে গেলে তাকে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। গরম পানি ঢেলে দেয়। ছুরি দিয়ে কপালে আঘাত করে। গলায় ওড়না পেঁছিয়ে মেরে ফেলতে চায়। এরপর রাতে গোপনে সে বাসা থেকে পালিয়ে এক পর্যায়ে খালার ভাড়া বাসায় আশ্রয় নেয়। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডাক্তার মো. ফেরদৌস হায়দার জানান, তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আঘাতগুলো গুরুতর বলে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ভৈরব থানার ওসি (তদন্ত) বাহালুল খান বাহার জানান, কাজের মেয়েকে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগে রাতেই স্বামী-স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।




Discussion about this post