বিডি ল নিউজঃ বিয়ের আগে একসাথে থাকার বৈধতা দিল সুপ্রিম কোর্ট।
কোন মামলায়?
কার মামলায়?
কোন সুপ্রিমকোর্ট?
কোন বিচারক? এ বৈধতা দিল তা জানার প্রয়োজনীয়তাও কারো মধ্যে দেখলাম না। তার আগেই শিক্ষিত, অশিক্ষিত, জ্ঞানীগুণী জন হাইকোর্ট সুপ্রিমকোর্টকে যা তা বলে ফেলেছে। অনেকেই আবার মিটিমিটি হেসে বিরাট খুশি, কেউবা আবার বয়স চলে গেল বলে আফসুস করছে। এ সিদ্ধান্তের জন্য আইন, সুপ্রিমকোর্ট বিচারকদেরও গালাগালি দেয়া শেষ।
মূল ঘটনা ভারতে। ভারতের কেরালা হাইকোর্টে ২০১৭ সালের একটি মামলা দায়ের হয় যে, এপ্রিল২০১৭ সালে থুসারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় কেরলেরই নন্দকুমারের সঙ্গে। থুসারার পিতা মেয়েকে ফেরত পেতে আদালতের দারস্থ হয়।
কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় কেরালা হাইকোর্ট ঘোষণা করে যে নন্দকুমার ও থুসারা একসঙ্গে থাকতে পারে না। তাকে বাবার সাথে থাকতে হবে। কারণ ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী একটি ছেলে ২১ বছর এবং একটি মেয়ে ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিবাহর বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারেনা।
ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টের CRIMINAL APPEAL NO. 597 OF 2018
নন্দকুমার বনাম রাষ্ট্র মামলায়
কেরালা হাইকোর্টের রায়ে সন্তুষ্ট না হয়ে বউকে ফেরত পেতে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন জানান নন্দকুমার।
সেই আবেদনের ভিত্তিতেই সুপ্রিম কোর্ট গত ২০/৪/১৮ তারিখে এই রায়দান। রায়দানে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, দুজনই প্রাপ্তবয়স্ক এবং এটা পুরোপুরি থুশারার সিদ্ধান্ত যে সে কার সঙ্গে থাকতে চায়। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট এও জানিয়েছে, দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ লিভ-ইন রিলেশনশিপে নিজেদের ইচ্ছামত থাকতেই পারে। তবে আদালত দাম্পত্য ক্ষেত্রে জাতির পিতার ভূমিকা নিয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। সিদ্ধান্ত পারিবারিক, সামাজিক ও বাস্তব অবস্থা অনুযায়ী হবে।
এর মানে এই না যে, যে কেউ অবৈধ ভাবে লিভটুগেদার করবে, সমাজে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করবে, প্রতারনা বা মিথ্যা প্রলোভনে দিনযাপন করবে।
এ রায়ের সাথে বাংলদেশের মানুষের কোন সম্পর্ক নেই, বাংলাদেশের সুপ্রিমকোর্টেও সম্পর্ক নেই। তবে বাংলাদেশে এমন কোন মামলার ঘটনা সৃস্টি হলে এ দেশের উচ্চ আদালত সংবিধান ও আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
ভারতীয় মিডিয়ার এ নিউজটিকে আমাদের দেশের অনলাইন মিডিয়া মানুষের মধ্যে শিরোনামকে ইস্যু করে ভুল খবর পরিবেশন করে নিজেদের নিউজকে হাজার হাজার মানুষের সামনে পৌছিয়ে নিজেরা লাভবান হয়েছে। নিউজের ভেতরে কোথায় মামলা, রায় আদালত, দেশ সম্পর্কে কোন তথ্য প্রদান করা হয়নি।
কোন কিছু বা কাওকে নিয়ে মন্তব্য বা ঘটনা ছড়িয়ে দেয়ার আগে নিজে জানুন, বুঝুন পরে জানান। নইলে সমাজে, দেশে, সম্পর্কে অশান্তি নেমে আসে।
লেখকঃ মতিউর রহমান ফয়সাল।
এডভোকেট, ময়মনসিংহ জজ কোর্ট