আমাদের গাজীপুরের শ্রীপুরের লবলং সাগর । ইতিহাস থেকে জানা যায় এটি একটি নদী ছিল একসময় । নদীটি শুকিয়ে বর্তমানে একটি খাল হয়ে বেঁচে আছে এবং কিছুটা চিহ্ন রয়েছে এই নদীর । নদীটির প্রশস্ততার সম্পূর্ণ জুড়ে কিছুদিন আগেও ধান হত । ধানের মায়াময় গন্ধে চারিদিক হত আলাদা সুবাসের স্থান । বর্তমানে আস্তে আস্তে নদীর চিহ্নটিও এখন বিলীন হতে চলেছে ।প্রচুর পরিমানে শিল্প কারখানা গড়ে উঠছে এর বুক চিড়ে ।কোন কোনটি এমনভাবে গড়ে উঠেছে যা একেবারে এই নদীর প্রশস্ততার এপাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত । ধান হলেও সে ধানের শিরায় উপশিরায় ঢুকে যাচ্ছে দুষিত পানির প্রবাহমানতা !আমরা হারাচ্ছি ধানি জমি, স্বাস্থসম্মত খাবার প্রাপ্তির নিশ্চয়তা !
যেটুকু খাল আছে সেটুকুও এখন দূষণে ভরা ! কিন্তু পরিকল্পিত হলে এই অবস্থার সৃষ্টি হতনা । গাজীপুরের মত এমন শিল্পাঞ্চল গুলোতে দ্রুত পরিকল্পনা মত স্থাপনা, ফ্যাক্টরী তৈরীর ব্যপারে সরকারকে এক্ষনি মনোযোগী হতে হবে ।বিশেষ করে ধানী জমিগুলো রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে । একটি এলাকায় প্রথমত একটি আবাসিক এলাকা নির্ধারন করে দিতে হবে এবং আরেকটি এলাকা নির্ধারন করতে হবে বিভিন্ন শিল্প স্থাপনা নির্মাণের জন্য ।
যদি এদেশের অর্থনীতির মূল অংশ কৃষিকে বাঁচিয়ে রাখতে হয় তবে পরিকল্পনা করে শিল্প নির্মাণের কোন বিকল্প নেই । যদি একটি এলাকায় সেন্ট্রাল করে কয়েকটি শিল্প কারখানা একসাথে নির্মাণ করা হয় তবে দূষণও অনেক কমানো যাবে বলে মনে করি ।
কৃষি জমি বাঁচানোর জন্য আরেকটি পদক্ষেপ হতে পারে যুগান্তকারী । এর জন্য প্রথমেই বাছাই করতে হবে অনুর্বর বা ফসলের জন্য কম উপযোগী জায়গা । যেখানে কম উর্বর জমি থাকবে সেখানে শিল্প নির্মাণের ব্যপারে উদ্যোগী হতে হবে ।একসাথে পাঁচ বিঘার উপরে জমি কেউ বিক্রি করতে চাইলে সরকারের অনুমতির ব্যপার ভেবে দেখা যেতে পারে । বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেকে মিলে বেশি পরিমানে জমি কলকারখানার জন্য বিক্রি করে এবং সেগুলো সবই চাষাবাদ উপযোগী । যদি চাষাবাদ উপযোগী জমি এভাবে বিক্রি করা যায় তবে ফসলী জমিতে কলকারখানা স্থাপন কখনই বন্ধ করা যাবে না । একারণে একই দাগে সর্ব্বোচ্চ পাঁচ বিখা পর্যন্ত জমি বিক্রির বাইরে সরকারের অনুমতির বিষয়টিও বিবেচনায় আনা যেতে পারে ।
শুধু ফসলী জমি বাঁচানো নয় আমরা চাই দূষণ মুক্ত পরিবেশও আর একারণেই বাঁচাতে হবে সবুজ, একারণেই বাঁচাতে হবে নদী ও খালগুলো ।
গাজীপুরের শ্রীপুরের লবলং সাগরকে দূষণ মুক্ত হিসেবে দেখতে চাই । দেখতে চাই সব ফসলী জমিই আবার সবুজ হয়ে উঠছে আর দেখতে চাই দুষন মুক্ত পরিবেশ আর এ জন্য চাই সদূর প্রসারী পরিকল্পনা ।সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে আবেদন বিষয়গুলো ভেবে সুন্দর একটি দেশ গঠনে গতিশীল ভূমিকা নেওয়া হোক ।
লেখকঃ সাঈদ চৌধুরী
সদস্য, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি
Discussion about this post