ড. মাহবুব উল্লাহ : কেমন আছে দেশের মানুষ-এ প্রশ্নের জবাবে সবাই বলবেন, আমরা ভালো নেই, বড় অশান্তিতে আছি, ভীষণ উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি, আমাদের জীবনে কোনো শান্তি নেই, স্বস্তি নেই। অচিরেই এই পরিস্থিতির অবসান হবে এমনটিও আশা করতে পারি না। রাতের বেলায় টেলিভিশনের টকশোতে যারা রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করেন তাদের আলোচনা শুনেও একই কথা মনে আসে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দশ দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। সরকারি লোকদের এমন বক্তব্যের পর দু-তিন দিন অতিবাহিত হয়েছে।
এরপরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সরকারি মহল কীভাবে এমন আÍবিশ্বাসী হলেন তারও কোনো ব্যাখ্যা নেই। বাংলাদেশে এখন যে পরিস্থিতি চলছে সেটি একটি রাজনৈতিক সংকট। রাজনৈতিক কারণেই এই পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে। পৃথিবীর কোনো দেশেই রাজনৈতিক সমস্যাকে আইন-শৃংখলার সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে সমাধান করা যায়নি। রাজনৈতিক সমস্যার জন্য রাজনৈতিক সমাধানই একমাত্র পথ। সরকারের উচ্চমহল থেকে সপ্তাহ কিংবা দশ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার যে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে, তাতে মনে হয় সরকার তার নিয়ন্ত্রণে থাকা বিভিন্ন আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের দমন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চায়। সরকারের এই অভিপ্রায় সরাসরি ব্যক্ত না হলেও বিজিবিপ্রধান, পুলিশপ্রধান, র্যাবপ্রধান এবং সর্বশেষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা থেকে আঁচ করা যায়।
সংকটের গভীরতা উপলব্ধি করে সুধী সমাজের অনেকেই বলেছেন, ‘পরিস্থিতি এমন যে, বাংলাদেশ ব্যর্থ রাষ্ট্র হওয়ার পথে চলছে।’ আবার কেউ কেউ গৃহযুদ্ধেরও আশংকা ব্যক্ত করেছে। আসলে ব্যর্থ রাষ্ট্রের পরিস্থিতি প্রধানত গৃহযুদ্ধের পথ ধরেই আসে। আমি ভাবতে পারি না, যে রাষ্ট্র লাখ লাখ মানুষের জীবন ও মায়ের অশ্র“র বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয়েছে সেই রাষ্ট্র ব্যর্থ হতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যে সর্বাÍক গণঐক্য সৃষ্টি হয়েছিল সেটি এমনভাবে হারিয়ে গেল কেন? জ্ঞানী-গুণী লোকেরা জাতীয় ঐকমত্যের প্রয়োজনীয়তার কথা বললেও কঠিন বাস্তবতা হচ্ছে সমগ্র জাতি আজ দুই মেরুতে বিভক্ত। এই বিভক্তি সহসা কেটে যাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। বরং দিনে দিনে তীব্র হচ্ছে। এর একটি বড় কারণ গত ৪৩ বছরে এ দেশে সাচ্চা গণতন্ত্রের কোনো চর্চা হয়নি। গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হল, এতে বহু মতের এবং বহু পথের অবারিত সুযোগ থাকলেও জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হওয়াতে বাধা থাকে না। জনগণের ইচ্ছায় দেশ পরিচালিত হবে এটিই হচ্ছে গণতন্ত্রের মর্মকথা। কিন্তু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে নস্যাৎ করে একটি মাত্র মত বা একটি মাত্র পথ যখন জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়ার প্রয়াস চলে তখন গণতন্ত্র হয় নির্বাসিত এবং স্বৈরতন্ত্র বা
একনায়কতন্ত্র হয়ে ওঠে অবধারিত। বাংলাদেশে আমরা বহুবার গণতন্ত্রের পথ থেকে বিচ্যুতি লক্ষ্য করেছি। এই বিচ্যুতি ঘটেছে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করে, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে, সামরিক শাসন জারি করে, ভোটারবিহীন নির্বাচন করে, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী ব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করা এবং জনগণের ন্যায্য আন্দোলনকে দমন করার প্রয়াসে। গণতন্ত্র নস্যাতের এসব প্রয়াস পৃথকভাবে ব্যাখ্যা করতে হলে এই কলামের কলেবর অনেক বড় হয়ে যাবে। আমি নিশ্চিত যে পাঠক এসব উপসর্গ সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন। তাই এগুলো ব্যাখ্যা করে বলার প্রয়োজন নেই।
বাংলাদেশে গণতন্ত্রের একটি বড় সমস্যা হল অতিকথন ও অশালীন বাক্য উচ্চারণ। ইদানীংকালে অতিকথন ও অশালীন উক্তি সমস্যাকে আরও প্রকট করে তুলেছে। যারা অতিকথন কিংবা অশালীন উক্তি করে চলেছেন তারা এর পরিণতি বোঝেন না এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই। তারপরও কেন তারা এসব করছেন তার ব্যাখ্যা করা মুশকিল। তবে এসবের পরিণতি যে জাতির বিভক্তিকে আরও প্রকট করে তুলবে এবং পারস্পরিক যুদ্ধংদেহি তৎপরতাকে আরও তীব্র করে তুলবে সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই। ১৭ জানুয়ারি ঢাকার সেগুনবাগিচায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদফতরের (এনএসআই) বিশতলা প্রধান কার্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের পেট্রলবোমায় একজন অন্তঃসত্ত্বা মায়ের গর্ভেই তার সন্তান মারা গেছেÑ একথা শুনে আমি খুবই কষ্ট পেয়েছি। যারা বোমা বানায় ও তা ছুড়ে মারে, গ্রেফতারের পর তাদের হাত পুড়িয়ে দেয়া উচিত, যেন তারা পোড়ার যন্ত্রণা বুঝতে পারে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘অনেক আঁতেল (তথাকথিত বুদ্ধিজীবী) আমার কথার সমালোচনা করবেন। তাদের বলছি, বার্ন ইউনিটে (হাসপাতাল) গিয়ে বিএনপি-জামায়াত চক্রের সন্ত্রাসীদের নৃশংসতায় আক্রান্তদের কান্না ও দুর্ভোগ
দেখে আসুন।’ বোঝা যাচ্ছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জানেন তার বক্তব্যের সমালোচনা হতে পারে। প্রথম কথা হল, গ্রেফতারের পরই হাত পুড়িয়ে দেয়া কেন? গ্রেফতারের পর বিচার হওয়ার কথা। বিচার না করে হাত পুড়িয়ে দেয়া হলে আইনের শাসন থাকবে কি? সর্বোপরি একজন আইনজ্ঞ না হলেও এটুকু জানি যে, বাংলাদেশের অপরাধ আইনে কাউকে পুড়িয়ে মারার জন্য অপরাধীকে পুড়িয়ে দেয়ার বিধান নেই। নিঃসন্দেহে একথা মেনে নিতে আমার কোনো আপত্তি নেই যে, কোনো মানুষকে পুড়িয়ে মারা কিংবা মারাÍকভাবে আহত করা চরম নৃশংসতা। সত্যিকার অপরাধীরা এই নৃশংসতার দায় এড়াতে পারে নাÑ সে যেই হোক না কেন। তাদের শাস্তির জন্য আইনের পথেই এগোতে হবে। অন্য কোনো পথে নয়। প্রধানমন্ত্রীর উক্তি প্রসঙ্গে রাজা হাম্মুরাবীর কোড কথা মনে পড়ে গেল। ব্যবিলনের রাজা হাম্মুরাবীর নির্দেশে এই কোড প্রণীত হয় খ্রিস্টপূর্ব ১৮ শতকে অর্থাৎ যিশুখ্রিস্টের জšে§রও আঠারোশ’ বছর আগে। এই কোড ব্যবিলনীয়দের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে সর্বাÍকভাবে কার্যকর ছিল। এই কোডে বলা হয় যে, পুত্র যদি পিতাকে আঘাত করে তাহলে তার হাত কেটে দেয়া হবে। যদি কোনো মুক্ত মানুষ কোনো অভিজাত ব্যক্তির চক্ষু নষ্ট করে দেয় তাহলে তারও চোখ নষ্ট করে দেয়া হবে। একইভাবে অন্য কোনো মু
ক্ত মানুষ যদি আরেকজন মুক্ত মানুষের হাড় ভেঙে দেয় তাহলে তারও হাড় ভেঙে দেয়া হবে। যদি কোনো মুক্ত মানুষ তারই মর্যাদাসম্পন্ন মানুষের দাঁত উপড়ে ফেলে তাহলে তারও দাঁত উপড়ে ফেলা হবে। হাম্মুরাবীর কোডে হত্যাজনিত অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান ছিল। তবে হাম্মুরাবীর রাজত্বে দুটি প্রধান শ্রেণী ছিলÑ এগুলো হল মুক্ত মানুষ ও দাস। দাসের প্রতি যদি কোনো মুক্ত মানুষ অবিচার করে তাহলে তার লঘু শাস্তি হতো। অর্থাৎ সমাজের নিচুতলার মানুষ উঁচুতলার মানুষের মতো সুবিচার পেত না। হাম্মুরাবীর কোডের পর গত ২০০০ বছরে আইনের অনেক বিবর্তন ঘটেছে। কোনো সভ্য দেশের আইনে এখন চোখের জন্য চোখ, দাঁতের জন্য দাঁত তুলে নেয়ার বিধান নেই। অপরাধীর শাস্তি অন্য রকম হয়। এটা হতে পারে কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড এবং হত্যার ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড। মৃত্যুদণ্ডও অনেক দেশ রহিত করে দিয়েছে। যেসব দেশে মৃত্যুদণ্ড বহাল আছে সেসব দেশ থেকে মৃত্যুদণ্ড রহিত করে দেয়ার দাবিও তুলছেন মানবাধিকার কর্মীরা। সুতরাং আজকের এ দিনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে যারা মানুষ হত্যা করে তাদের বিচার করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া যেতে পারে। অন্য কোনো দণ্ড নয়, যেমনটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। তিনি বলতে পারতেন, যারা মানুষ পুড়িয়ে দিচ্ছে তাদ
েরও যদি কেউ পুড়িয়ে দিত তাহলে তারা পোড়ার যন্ত্রণা ও কষ্ট উপলব্ধি করতে পারত। আশা করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই আমার এ সমালোচনাকে নিছক আঁতেলদের কথা বলে বিবেচনা করবেন না।
অনেকেই অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের প্রশাসনে বড় রকমের দলীয়করণের ঘটনা ঘটে গেছে। নবনিযুক্ত পুলিশপ্রধান রংপুরে এক সভায় সম্প্রতি বলেছেন, ‘আমার বক্তব্য রাজনৈতিক বক্তব্য হয়ে যায়। আমিও তো মতামত দিতে পারি। আমিও দেশের নাগরিক। আমিও ট্যাক্স দিই। আমিও মতামত দিতে পারি। এটা আমার অধিকার।’ তার এ বক্তব্যের মধ্য দিয়েই ফুটে উঠেছে কীভাবে আমাদের দেশের প্রশাসনের রাজনীতিকীকরণ হয়েছে। পুলিশপ্রধান প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। চাকরির বিধান অনুযায়ী তিনি কোনো রকম রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ করতে পারেন না। তিনি কেবল আইনপ্রদত্ত ক্ষমতানুযায়ী কাজ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে
তার কোনো রাগ বা অনুরাগ থাকার কথা নয়। এর ব্যত্যয় ঘটলে প্রশাসন নিরপেক্ষতা এবং নৈর্ব্যক্তিকতা হারিয়ে ফেলবে। তিনি আরও বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া আইনের
প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন।’ তার এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে যে বিরাগ ফুটে উঠেছে, সেটাও প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারীর জন্য মোটেই কাক্সিক্ষত নয়। পুলিশ প্রধান টকশোতে অংশগ্রহণকারীদের যেভাবে ‘আরে ব্যাটা’ সম্বোধন
করেছেন সেটি রুচির দিক থেকে মোটেও শোভন নয়। আমরা পুলিশপ্রধানের মতো দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে সুরুচিসম্পন্ন বক্তব্য আশা করি। তারা যদি সভ্যতার মাপকাঠিতে উন্নত রুচির পরিচয় দেন তাহলে দেশে সংঘাত-সংঘর্ষ অনেকটুকুই হ্রাস পাবে।
পুলিশপ্রধান আরও বলেছেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে ও তাদের মদদেই আপনারা নির্বাচনে আসেননি। আপনারা নির্বাচনে না এসে ভুল করেছেন। এর খেসারত আপনাদেরই দিতে হবে। এই দায় কেন জনগণ নেবে? আপনারা ক্ষমতায় গিয়ে কী করবেন তা জনগণ জানে।’ শাসক দলের লোকেরা হরহামেশা যে বক্তব্য দেয় তার সঙ্গে এ বক্তব্যের তফাৎ কোথায়? এটি স্রেফ রাজনৈতিক বক্তব্য। এমন বক্তব্য তার মতো দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছ থেকে আশা করা যায় না। অবশ্য তিনি নিজেই কবুল করে নিয়েছেন যে, তার বক্তব্য রাজনৈতিক হয়ে যায়। ওই একই সভায় র্যাবের ডিজি বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের পরে নির্বাচন হবে। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। এর বাইরে আমরা কোনো কিছুই চাই না।’ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ প্রায়ই ২০১৯ সাল পর্যন্ত নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে বলেন। তার আগে কোনো নির্বাচন হবে না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশের প্রয়োজনে এ রকম নির্ধারিত সময়ের আগেই নির্বাচন হওয়ার বহু দৃষ্টান্ত রয়েছে। আমাদের সংবিধান অনুযায়ীও এটা হতে পারে। র্যাবপ্রধান নির্বাচনের দিনক্ষণ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে পারেন না। নির্বাচনের দিনক্ষণ তার রাজনৈতিক ওপরওয়ালারাই স্থির করবেন। তার কাজ হল যখনই নির্বাচন হয় সরকার চাইলে তার বাহিনীর সহায়তা
নিশ্চিত করা। নির্বাচন সংক্রান্ত বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি নিজেকে বর্তমান রাজনৈতিক বিরোধের একটি পক্ষে মিশিয়ে ফেলেছেন। তার কাজ হল আইনশৃংখলা রক্ষায় যথাযথ ভূমিকা পালন। তিনি কোনোক্রমেই চলমান রাজনৈতিক বিতর্কের সঙ্গে নিজেকে জড়াতে পারেন না। যাই হোক, আমরা আশা করব, সব স্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা রাজনৈতিক পক্ষাবলম্বন নিজেদের থেকে দূরে রাখবেন। নিজের ব্যক্তিগত বিশ্বাস, পছন্দ-অপছন্দ নিজের কাছেই রাখা শ্রেয়। এককথায় বলা যায়, গত ৪৩ বছরে এদেশের শাসক গোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনকে ব্যবহারের জন্য প্রশাসনে নিজ পছন্দের ব্যক্তিবর্গকে বসিয়েছে। ফলে প্রশাসন নিরপেক্ষতা হারিয়ে ফেলেছে। অন্যদিকে প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের মনসই আচরণ করেছেন। এগুলোর কোনোটাই কাম্য নয়। সমস্যার সমাধান না করে এ ধরনের আচরণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। এর ফলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় জনগণও।
দেশবাসী আন্তরিকভাবে কামনা করে বর্তমান সংকট দ্রুত কেটে যাবে। সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সংলাপ ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। আশা করব, সব পক্ষ নিজ নিজ অহমিকা দূরে সরিয়ে রেখে টেবিলে বসে আলোচনা করবেনÑ কীভাবে আমাদের খোঁড়া গণতন্ত্রকে সুস্থ সবল করা যায়। এই সংলাপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা হল সব দলের অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধি-ব্যবস্থা কী হতে পারে তা নির্ধারণ করা। কথার পিঠে কথা বলে, একে অপরের ওপর দোষ চাপিয়ে সংকট থেকে বেরোনো যাবে না। আশা করব, সব পক্ষই বিষয়টি উপলব্ধি করবেন।
লেখক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক।
Discussion about this post