কিছু কিছু কাজ অপরাধ কি না তা নির্ভর করে পরিস্থিতির উপর।অপরাধ হলো কোন ব্যাক্তি কর্তৃক আইনবিরুদ্ধ কাজ।দেশ বা অঞ্চলের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রণীত আইনের পরিপন্থী কাজই অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে সরকার কিছু আইন তৈরি করে যার ফলে কোন ব্যাক্তি অপর কোন ব্যাক্তির অধিকার নষ্ট করতে পারে না,অপর কোন ব্যাক্তির ক্ষতি করতে পারে না বা তাকে আঘাত করতে পারে না।কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে শুধু আঘাত নয় কোন ব্যাক্তির মৃত্যু ঘটালেও তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না।মনে করুন কোনো ব্যাক্তি আপনাকে মারার জন্য আপনার দিকে পিস্তল তাক করেছে এখন আপনার আইনের আশ্রয় নেওয়ার মতো কোনো সময় নেই আপনি যদি তাকে প্রতিহত না করেন তাহলে সেই ব্যাক্তি আপনাকে মেরে ফেলবে এই মুহূর্তে আপনি যদি নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য ঐ ব্যাক্তিকে আঘাত করেন বা তার মৃত্যু ঘটান তাহলে তা অপরাধ হবে না। বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৯৬ ধারায় বলা আছে আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়োগজনিত কোন কাজই অপরাধ নয় ।
কোন কোন ক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটালেও তা অপরাধ হবে না তা দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ১০০ ধারা এবং ১০৩ ধারায় বলা আছে।১০০ ধারায় বলা আছে দেহ রক্ষা করার জন্য কোন কোন ক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটালেও তা অপরাধ নয়। এই ধারায় ৬ টি ক্ষেত্রের কথা বলা আছে।
১/ এরূপ আক্রমণ যার ফলে ন্যায়সঙ্গতভাবেই এমন আশঙ্কার সৃষ্টি হয় যে, ব্যক্তিগত আত্মরক্ষামূলক অধিকারের অবাধ প্রয়োগ না করলে সে আঘাতে সে আসন্ন মৃত্যু অনিবার্য।
২/এরূপ আক্রমণ যার ফলে ন্যায়সঙ্গতভাবেই এমন আশঙ্কার সৃষ্টি হয় যে, প্রতিরোধ না করলে সে আঘাতের বা আক্রমণের ফলে আসন্ন মৃত্যু অনিবার্য।
৩/ধর্ষণের উদ্দেশ্যে আঘাত বা আক্রমণ।
৪/অস্বাভাবিক কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে আঘাত বা আক্রমণ।
৫/শিশু অপহরণ বা ব্যক্তি হরণের উদ্দেশ্যে আক্রমণ বা আঘাত।
৬/কোন ব্যক্তিকে অন্যায় বা বেআইনীভাবে আটক করার উদ্দেশ্যে এমন পরিস্থিতিতে তার উপর হামলা, যে পরিস্থিতিতে ন্যায়সঙ্গতভাবেই সে ব্যক্তির মনে এই আশঙ্কার সৃষ্টি হয় যে, সে মুক্তির জন্য সরকারী কর্তৃপক্ষের আশ্রয় নিতে সমর্থন হবে না।অর্থাৎ অবৈধ আটক করলে।
উপরোক্ত এই ৬ টি ক্ষেত্রের যে কোন একটি ক্ষেত্র কারো সাথে ঘটলে সে যদি আক্রমনকারীর মৃত্যুও ঘটায় তা অপরাধ হবে না।
১০৩ ধারায় বলা আছে সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য কোন কোন ক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটালেও তা অপরাধ নয়। এই ধারায় ৪ টি ক্ষেত্রের কথা বলা আছে।
১/ দস্যুতা।
২/রাত্রিবেলা ঘর ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করা।
৩/কোন ঘর, তাবু বা যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে ক্ষতি সাধন, যদি ঘরটি, তাবুটি বা যানবাহনটি মানুষের বাসস্থান হিসেবে অথবা সম্পত্তি রাখার স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
৪/চুরি, অনিষ্টকারিতা, অথবা গৃহে অনধিকার প্রবেশ, যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে, সংশ্লিষ্ট আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকারটি প্রয়োগ না করলে মৃত্যু বা গুরুতর আঘাত অনিবার্য বলে ন্যায়সঙ্গতভাবেই আশঙ্কার উদ্ভব হয়।
উপরোক্ত এই ৪ টি ক্ষেত্রের যে কোন একটি ক্ষেত্র কারো সম্পত্তির সাথে ঘটলে সে যদি আক্রমনকারীর মৃত্যুও ঘটায় তা অপরাধ হবে না।
লেখকঃ
মোঃ মনিরুজ্জামান
শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
Discussion about this post