অফিস ডেস্ক
চুয়াডাঙ্গা আদালতে আইনজীবী ও জজশিপের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে হাতাহাতির অভিযোগ উঠেছে। এ সময় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ এর (ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ) কার্যালয় ভাঙচুরেরও অভিযোগ ওঠে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে আদালত ভবনে এ ঘটনা ঘটে। হামলার অভিযোগ এনে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বজলুর রহমানকে প্রত্যাহারের দাবিতে আদালত বর্জন করেছেন আইনজীবীরা।
জানা গেছে, বিদায়ী জেলা জজ একজনকে দুই মাস আগে নাজির পদে পদোন্নতি দেন। তারপর নাজিরের দায়িত্ব হস্তান্তরের পর ওইদিন রাতেই সেই পদোন্নতির আদেশ বাতিল করে আরেক কর্মচারীকে নাজির নিয়োগের আদেশ করেন। এই আদেশটির পেছনে আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারির প্রভাব ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিদায়ী জেলা জজের ওই আদেশ মোতাবেক পরবর্তী ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ নতুন নাজিরের নিয়োগপত্র গ্রহণ করেননি। তিনি বলেন, বিষয়টি নতুন জেলাজজ যোগদানের পর সুরাহা করবেন।
ওই বিষয় নিয়ে আজ ভারপ্রাপ্ত জেলা জজের চেম্বারে এসে বারের সভাপতি-সেক্রেটারিসহ কিছু আইনজীবী ভারপ্রাপ্ত জেলা জজকে নতুন আদেশ অনুযায়ী অাজকের মধ্যেই নিয়োগ দিতে বলেন। ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ রাজি না হওয়ায় আইনজীবী নেতারা ক্ষিপ্ত হন এবং বিচারকের টেবিল ভাংচুর করেন। ওই সময় আদালতের স্টাফ ও পুলিশ এসে তাকে রক্ষা করে।
আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিচারকের কার্যালয়ে গেলে আইনজীবীরা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর আইনজীবীর এক সহকারীকে আটকের খবরে আবারও উত্তপ্ত হয় আদালত প্রাঙ্গণ। আইনজীবীরাও বাঁশ লাঠি নিয়ে পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এ সময় পুলিশ তাদেরকে শান্ত করে।
এ ঘটনার পর জেলা আইনজীবী সমিতির এক জরুরি সভায় ওই বিচারকের প্রত্যাহার দাবি করে আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয়া হয়।

আইনজীবীরা জানান, সুষ্ঠু সমাধানের জন্য বিচারকের কাছে গেলে সেখানে আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে দুই আইনজীবী আহতও হয়েছে।জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আলমগীর হোসেন জরুরি সভায় বলেন, ‘আমাদের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। একইসঙ্গে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বজলুর রহমানকে প্রত্যাহার করতে হবে। এ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য সব আদালত বর্জন করা হলো।’
অপরদিকে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির ওসমান গণি সাংবাদিকদের বলেন, ‘কর্মচারীর নিয়োগের বিষয় নিয়ে আইনজীবীরা বিচারকের কার্যালয়ে গিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে। এ সময় তারা বিচারকের টেবিলেও ভাঙচুর চালায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আইনজীবীদের একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। উভয় পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কাজ করছে।
Discussion about this post