নিজস্ব প্রতিবেদক: চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা ভ্যানচালক আফসার আলীর মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেচনা চেয়ে রিট করা হয়েছে। রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
আজ রবিবার (১২ জুলাই) পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে জনস্বার্থে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইয়াদিয়া জামান ও অ্যাডভোকেট শাহীনুজ্জামান শাহীন।
রিট আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান জানান, রিটে আফসার আলীর মৃত্যর ঘটনায় সঙ্গে কোনো পুলিশ কর্মকর্তা জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।
আইনজীবী জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা আফসার আলীর মৃত্যুর বিষয়ে সেখানকার পুলিশ সুপার (এসপি) বলছেন যে, এটা একটা ‘আত্মহত্যা’। থানায় এ বিষয়ে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। ওই ভিডিও ফুটেজ দেখেই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান এসপি। তবে চিকিৎসক বলছেন, আফসার আলীকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তখন তার বুকে ব্যথা ওঠে। বুকের ব্যথায় তিনি মারা যান। আবার একই ঘটনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলছেন, থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা আফসার আলী অসুস্থতা অনুভব করলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের স্ত্রীর দাবি, আফসারকে খুন করা হয়েছে। তাই রিটে উক্ত ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনার চাওয়া হয়েছে। কারণ সেদিন কী ঘটেছিল তা বেরিয়ে আসা দরকার।
তিনি বলেন, হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসানের ভার্চুয়াল বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে।
৫ জুলাই সদর উপজেলার সুন্দরপুর বাগডাঙ্গা শুকনাপাড়া এলাকা থেকে ১ কেজি ১৯৫ গ্রাম হেরোইনসহ আফসার আলীকে আটক করে র্যাব। সদর থানায় মামলার পর ৬ জুলাই একদিনের রিমান্ডে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ওইদিন রাত ১২টার দিকে মৃত্যুর খবর জানানো হয়।
আফসারের স্ত্রী জুলেখা বেগমের অভিযোগ, অভাব-অনটনের সুযোগে সোর্স ওয়াসিম আর মোহন তার স্বামীকে কৌশলে মাদক ধরিয়ে দিয়েছে। পরে সে র্যাবের হাতে ধরা পড়ে। ৬ জুলাই থানায় দেখা করতে গেলে সন্তানদের সামনেই হাতকড়া পরা অবস্থায় একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাকে মারধর করছিল। তার দাবি পুলিশই তার স্বামীকে হত্যা করেছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মঈদুল ইসলাম জানান, আফসার আলী কর্মঠ আর নিরীহ প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। রিকশা-ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতেন।
Discussion about this post