ধর্ষণ মামলায় মেডিক্যাল রিপোর্ট মুখ্য নয়, ভুক্তভোগীর মৌখিক ও পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য দ্বারা আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হলেও তার ভিত্তিতে আসামিকে সাজা প্রদান করা যেতে পারে মর্মে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। বুধবার (১৪ অক্টোবর) বিচারপতি রেজাউল হকের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দিয়েছেন।
হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, ‘শুধুমাত্র ডাক্তারি পরীক্ষা না হওয়ার কারণে ধর্ষণ প্রমাণ হয়নি বা আপিলকারী ধর্ষণ করেনি এই অজুহাতে আসামি খালাস পেতে পারে না।’
ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান করে মঙ্গলবার অধ্যাদেশ জারি হয়। আগের সর্বোচ্চ সাজা থেকে সরে এসে এবার ধর্ষকের সাজা মৃত্যুদণ্ড হয়।
ধর্ষণের মামলার সংজ্ঞায় বলা আছে, মেডিক্যাল রিপোর্ট ছাড়া কোনোভাবেই সাজা দেয়া যাবে না আসামিকে। ধর্ষণ মামলা প্রমাণ করতে তাই অন্যতম অস্ত্র মেডিক্যাল রিপোর্ট। কিন্তু বুধবার (১৪ অক্টোবর) হাইকোর্ট তার এক রায়ে জানিয়ে দিয়েছে, এখন থেকে মেডিকেল রিপোর্ট ছাড়াও পারিপাশ্বিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে ধর্ষণের সাজা দেয়া যাবে।
২০০৬ সালে খুলনার দাকোপ থানায় তাসলিমা নামে ১৫ বছরের কিশোরী মামলা করতে যান। কিন্তু মামলা না নিয়ে সালিশের প্রস্তাব দেয় পুলিশ। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর বাবা আদালতে মামলা করেন। কিন্ত তাতেও পুলিশের চাপে হয়নি মেডিকেল পরীক্ষা। যে মামলায় আসামি ইব্রাহীম গাজীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্ট বলেন, বিলম্ব মানেই কোনো মামলা মিথ্যা নয়।
আদালত তার রায়ে বলেন, ধর্ষণের শিকার ঐ কিশোরী যেন বিচার না পায় সেজন্য খুলনার দাকোপ থানা পুলিশ সে সময় সব চেষ্টাই করেছিলো।
ভুক্তভোগী দেরিতে মামলা করলেও তা মিথ্যা নয় বলেও রায়ে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের সবশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের বর্তমানে ১ লাখ ৭০ হাজার মামলা বিচারাধীন।
Discussion about this post