ফৌজদারী কার্যবিধি আইন সম্পর্কে বিস্তারিত
ফৌজদারী কার্যবিধি আইন মুলত কি, কিভাবে অপরাধের তদন্ত করা হবে, একটি ফৌজদারী মামলার বিচারকার্য কিভাবে পরিচালনা করা হবে, গ্রেফতার ও জমিন সম্পর্কে কি বলা রয়েছে এবং কোন ধরনের মামলার পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে । চলুন আমরা সে সম্পর্কে আইনের ধারার আলোকে
বিস্তারিত জানবার চেষ্টা করবো।
The Code of Criminal Procedure (ফৌজদারি কার্যবিধি) ১৮৬২ সালের ১লা জানুয়ারী হতে বলবৎ হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে এই আইনের সংশোধনী আনা হয় এবং কিছু কিছু ধারা বিভিন্ন সময়ে বাতিল করা হয়।
ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ সনের ৫ নং আইন এটি ১৮৯৮ সনের ২২ শে মার্চ প্রকাশিত হয় এবং ১৮৯৮ সনের ১লা জুলাই হইতে কার্যকর হয়। ফৌজদারি কার্যবিধি তে ৫৬৫ টি ধারা এবং ৫ টি তফসিল রয়েছে। এসব ধারাগুলোর অনেকগুলোর উপধারা রয়েছে।
ফৌজদারী কার্যবিধি আইন মুলত কিঃ-
ফৌজদারী কার্যবিধি এটি একটি পদ্ধতিগত আইন ।ফৌজদারী কার্যবিধি সর্বপ্রথম ১৭৯৩ সালে গোড়াপওন/উৎপত্তি হয় এবং পরর্বতীতে ফৌজদারী কার্যবিধি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ১৮৬১ সালে সর্বপ্রথম আইন আকারে পাশ করা হয় ।
পরর্বতীতে ১৮৭২্ এবং ১৮৮২ সালে আইনটি দুইবার সংশোধন করে ১৮৯৮ সালের ২২ মার্চ ইং তারিখে বর্তমান ফৌজদারী কার্যবিধি আইনটি প্রকাশিত হয় ।
বর্তমান ফৌজদারী কার্যবিধি আইনে ৫৬৫ টি ধারা ও ৫ টি তফসিল এবং ৪৬ টি অধ্যায় রয়েছে এবং ৫টি তফসিলের মধ্যে ১নং তফসিলটি বাতিল করা হয়েছে ।বর্তমানে ৪টি তফসিল কার্যকর রয়েছে এবং এটি ২০১২ সালে সর্বশেষ সংশোধন করা হয়েছে।
কিভাবে অপরাধের তদন্ত করা হবে ?
তদন্ত বলতে সাধারণত বলা যায় কোনো কিছু অনুসন্ধান করা বা খুজে বের করা।যে ব্যক্তি বা সংস্থা তদন্ত করে তাকে তদন্তকারী বলা হয়।
সাধারণত পুলিশ বা গোয়েন্দা সংস্থা অপরাধী খুজে বের করতে তদন্ত কার্য সম্পাদন করে থাকেন। এছাড়াও তদন্ত করার জন্য বিশেষ দল বা কমিটি গঠন করা হয়। এদের কাজই হলো তদন্ত করা। যা তদন্ত কমিটি নামে পরিচিত।
ফৌজদারি অপরাধ তদন্তের ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার ও জিজ্ঞাসাবাদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।একজন তদন্তকারীর সাক্ষাৎকার ও জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক কলাকৌশলগুলোর উপর পর্যাপ্ত তাত্ত্বিকেএবং ব্যবহারিক জ্ঞান থাকা একান্ত আবশ্যক।একজন তদন্তকারীর সাক্ষাৎকার ও জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক কৌশলগুলো রপ্ত করে তা প্রয়োগ করলে পুলিশের পেশাদারিত্ব বাড়বে এবং মানবাধীকার লঙ্ঘনের দায় থেকে পুলিশ রক্ষা পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
জিজ্ঞাসাবাদের বৈজ্ঞানিক কৌশলে সন্দিগ্ধকে কিছু বিশেষ পদ্ধতির নাম হলো ফরেনসিক মূল্যায়ন সাক্ষাৎকার (Forensic Assessment Interview বা সংক্ষেপে Faint বলা হয়।
এই ধরনের কৌশল অবলম্বন করে সাক্ষাৎকার নিলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধের তদন্ত করা য়ায় এবং কোন ব্যক্তি আসলে কি অপরাধী নাকি নির্দেোশ সে সম্পর্কে খুব তাড়াতাড়ি অনুমান করা সম্ভব হয়।
এই পদ্ধতিটি প্রয়োগ করে শতকরা ৩০ ভাগ আসামীর নির্দোষতা বা সম্পৃক্ততা সম্পর্কে নিশ্চিত করা যায়। ফরেনসিক মূল্যায়ন বা ফেইন্ট পদ্ধতি এমআইটিটি পদ্ধতির চেয়ে আরো বেশি নির্ভরযোগ্য।
ফেইন্ট সাক্ষাৎকারে দুই ধরনের সাক্ষাৎকারের সমন্বয় থাকে যেখানে মৌখিক বা ভাষিক এবং আচরণগত উভয় বিষয়ে উপস্থিত বুদ্ধির প্রয়োগ থাকে। মৌখিক মূল্যায়নটি করা হয় কিছু প্রক্ষেপণমূলক প্রাসঙ্গিক এবং তুলনামূলক প্রশ্নের মধ্য দিয়ে।
জন রিডস পরিচালিত একটি গবেষণা অনুসারে ৯১% সত্যবাদী এবং ৮০% প্রবঞ্চক সন্দিগ্ধদের সম্পর্কে পূর্বানুমান সঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছে।
মনে রাখতে হবে সাক্ষাৎকার শুরু করতে হবে কিছু অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন দিয়ে । প্রথম দিকে থাকবে কিছু অভয়সূচক সাধারণ আলোচনা। এরমধ্য দিয়ে সন্দিগ্ধের সত্যবাদীতার অনুমান করার চেষ্টা করতে হবে।
আপনি প্রথমেই যদি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করেন তাহলে সত্যতা অনুমান করতে অনেকটা বেগ পতে হবে এমনকি সত্যতা অনুমান করা সম্বব নাও হতে পারে।
তদন্ত করার সময় পুলিশ অফিসার সাধারণ বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারে- যেমন:- আপনার পড়াশোনা কোথায় , আপনার পূর্ববতী চাকরি বা পেশা কোথায়, পারিবারিক খোঁজখবর এ সকল অপ্রাসঙ্গিক বিষয় দিয়ে প্রথমে কথা শুরূ করতে হবে।
এসবের মাধ্যমে সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী ও সন্দিগ্ধের মধ্যে একটি উঞ্চ সম্পর্ক তৈরি হবে।এরপর শুরু হবে প্রক্ষেপণমূলক প্রশ্ন। প্রক্ষেপণমূলক প্রশ্ন এমনভাবে প্রস্তুত করতে হবে যে সন্ধিগ্ধ ব্যক্তির উত্তর প্রদানকালেই তার অপরাধে জড়িত থাকার বিষয়টির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়।
ফৌজদারী মামলার বিচারকার্য মূলত অপরাধীদের খুঁজে বের করা, তাদের বিচারের জন্য আদালতে সোপর্দ করা এবং অপরাধ দমনের জন্য নির্দিষ্ট কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। সেই প্রক্রিয়া সমূহ ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধিতে নির্দেশ করা হয়েছে।
ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা অনুযায়ী ফৌজদারী মামলার বিচারকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে সাধারণত ফৌজদারি মামলায় দুইভাবে ভাগ করা হয়।যথা :-
১. আমলযোগ্য মামলা ও ২. আমলঅযোগ্য মামলা।
আবার আমলযোগ্য মামলাকে দুই ভাগেভাগ করা যায় । যথা :-
১. জি আর বা পুলিশিমামলা ও ২. সি আর বা নালিশি মামলা।
আমলযোগ্য মামলা :-
যদি আমলযোগ্য মামলায় অপরাধ সংঘটিত হয় তাহলে পুলিশ অফিসার ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেপ্তার করতে পারবে।এই ক্ষেত্রে থানার ভারপ্রাপ্ত র্কমর্কতা আদালতে প্রতিবেদন দিয়ে থাকেন। যে সকল অপরাধের মামলায় অপরাধ সংঘটিত হলে পুলিশ অফিসার ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেপ্তার করতে পারে তাকে আমলযোগ্য মামলা বলা হয়।
আমলঅযোগ্য মামলা :-
যদি আমলঅযোগ্য মামলায় অপরাধ সংঘটিত হয় তাহলে পুলিশ অফিসার ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেপ্তার করতে পারবে না।এই ক্ষেত্রে অপরাধ সংঘটিত হলে পুলিশ অফিসার সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে প্রসিকিউিশন ওয়ারেন্ট বা নন-এফআইআর মামলা আদালতে দাখিল
করেন তাকে আমলঅযোগ্য মামলা বলে।এ ধরনের অপরাধের মামলা কোর্টের নন-জিআর রেজিস্ট্রারভুক্ত হয়ে পরিচালিত হয় বলে এ মামলাকে নন- জিআর মামলা বলা হয়।
নালিশি বা সিআর মামলা :-
ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সরাসরি গিয়ে কোর্ট ফি দিয়ে বিচার প্রার্থনা করা যায়। এই ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির ২০০ ধারায় শপথ নিয়ে আবেদনের উল্টো পিঠে জবানবন্দি রেকর্ড করতে হয়।কোর্ট রেজিস্ট্রার মামলা নথিভুক্ত করে পরিচালিত হয় সেজন্য এটাকে সিআর মামলা বলা হয়।
পুলিশি মামলা :-
থানার ভারপ্রাপ্ত র্কমর্কতার কাছে এজাহার দায়েরের মাধ্যমে যে মামলা করা হয় তাকে পুলিশি মামলা বলা হয়। পুলিশি মামলাকে আবার দুই
ভাগে ভাগ করা যায়। একটি হলো জিআর মামলা ও অন্যটি নন জিআর মামলা।
জিআর মামলা :-
কোন আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটনের খবর পেলে থানার ভারপ্রাপ্ত র্কমর্কতা ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫৪ ধারা অনুসারে এফ আই আর দাখিল করে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫৬ ধারা অনুসারে মামলার তদন্ত শুরু করেন তাকে জিআর মামলা বলা হয়।
নন জিআর মামলা :-
আমলযোগ্য মামলা সংঘটিত হওয়ার খবর পেলে সংশ্লিষ্ঠ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেটিকে এজাহার হিসেবে গণ্য না করে পুলিশি প্রবিধান ৩৭৭ অনুসারে জিডি এন্ট্রি করে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে উক্ত বিষয়টি তদন্ত করে আদালতে নন-এফআইআর প্রসিকিউশন রিপোর্ট দায়ের করেন তাকে নন-জিআর মামলা বলা হয়।
ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে কোন অভিযোগ আমলে নেওয়া হলে মামলা নিষ্পত্তি পর্যন্ত যে কয়টি ধাপ রয়েছে তার কিছু ধারনা পর্যায়ক্রমে দেয়া হলোঃ-
১. সমন :- আসামীদের বিরুদ্ধে আদালত স্বাক্ষরিত সমন ইস্যু করা হয় ।যেখানে আদালতে হাজির হবার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট তারিখ থাকবে।
২. ওয়ারেন্ট :- যদি সমনে উল্লেখিত তারিখে আসামী হাজির না হয় তাহলে আদালত তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন। এরূপ প্রসেস কে W/A বা Warrant of Arrest বলা হয়।
৩. WP & A :- ওয়ারেন্ট এ উল্লেখিত তারিখে আসামীকে হাজির করা না গেলে বা আসামী পলাতক থাকলে আদালত তার বিরুদ্ধে WP & A (Warrant of Proclamation and Attachment) ইস্যু করেন।এটি‘হুলিয়া’ বলা হয়ে থাকে।
৪. পত্রিকা বিজ্ঞপ্তি :- WP & A এতে উল্লেখিত তারিখে আসামীকে হাজির করা না গেলে বা আসামী পলাতক থাকলে এবং আদালত তার বিরুদ্ধে দুটি বহুল প্রচলিত বাংলা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রদানের আদেশ দিবেন।
৫. অনুপস্থিতিতে বিচার :- পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রদানের পরেও যদি উল্লেখিত তারিখে আসামী হাজির না হয় বা আসামী পলাতক থাকে তাহলে তার অনুপস্থিতিতে উক্ত মামলার বিচার শুরু হবে। এটিকে আইনের ভাষায় (Trial InAbsentia) বলা হয় ।
৬. চার্জ শুনানী :- যদি উপরোক্ত প্রক্রিয়ায় বা স্বেচ্ছায় অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতে হাজির হয় তাহলে আদালত তাদের উপর আনীত অভিযোগ তাদের কে পড়ে/পাঠকরে শোনাবেন।
তাদের বিরূদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করলে আদালত সেটির জন্য তাদের কে শাস্তি প্রদান করবেন।অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করলে উহার সত্যতা নিরূপনের জন্য সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহনের নিমিত্তে সাক্ষীদের প্রতি সমন এবং ক্ষেত্র বিশেষে অনান্য প্রসেস যেমন :-WW বা witness warrant
এবং NWW বা Non Bailable Witness Warrant ইস্যু করা হবে।
তবে চার্জ শুনানীতে যদি আদালতের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, আসামীদের বিরূদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রাথমিকসত্যতা নেই তাহলে আদালত মামলাটি বিচারে না গিয়ে আসামী/আসামীদের কে অব্যাহতি দিয়ে দেবেন।
৭. সাক্ষ্য গ্রহন :- সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে ফরিয়াদী পক্ষের আইনজীবী ফরিয়াদীসহ তার মনোনীত সাক্ষীদের জবানবন্দী গ্রহন করেন এবং আসামী পক্ষ তাদের জেরা করেন।সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহন সমাপ্ত হলে আদালত উভয় পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শ্রবণ পূর্বক রায় ঘোষনার জন্য তারিখ ঘোষনা করে থাকেন।
৮. রায় প্রদান :- আদালত সাক্ষীদের সাক্ষ্য,নথিস্থ কাগজাত ও অনান্য পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিশ্লেষন করে আদালতের নিকট সন্দেহাতীত ভাবে আসামীদেরে বিরূদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুসারে আদালত শাস্তি প্রদান করেন কিন্তু অভিযোগ প্রমাণিত না হলে খালাস প্রদান করেন।
৯. আপীল :- কোন পক্ষ আদালতের প্রদত্ত রায়ে সন্তুষ্ট না হলে এখতিয়ার সম্পন্ন উচ্চ আদালতে আপীল দায়ের করতে পারেন।
গ্রেফতারের পদ্ধতি সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা হলোঃ
ধারা ১৫৫ অনুযায়ী যে সকল আইনগত কার্যক্রমের মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যাক্তিকে আটক করে বিচারের জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হয় তাকে গ্রেফতার বলা হয় । আমল-অযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে আদালতের গ্রেফতারী ওয়ারেন্ট ছাড়া কোন আসামীকে গ্রেফতার করা যায়না এবং আমলযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা বলে পুলিশ অফিসার অপরাধীকে গ্রেফতার করে বিচারের জন্য আদালতে উপস্থিত করতে পারেন।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৬/১ ধারায় গ্রেফতারের পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। গ্রেফতারকারী পুলিশ কর্মচারি বা অন্য ব্যাক্তি, যাকে গ্রেফতার করবেন সেই ব্যাক্তির প্রকৃতপক্ষে দেহ স্পর্শ করবেন বা বন্দী করবেন ।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৬/২ ধারা অনুযায়ী গ্রেফতারে বাধা প্রদান করলে পুলিশ কর্মকর্তা বা অন্য ব্যাক্তি গ্রেফতার কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল পন্থা অবলম্বন করতে পারবেন।সুতরাং কোন অপরাধীকে বিচারের জন্য বা আদালতে হাজির করার জন্য তার ব্যক্তি স্বাধীনতাকে খর্ব করে পুলিশের হেফাজতে আনাকে গ্রেফতার বলা হয়।
সাধারণত ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে প্রাপ্ত গ্রেফতারী ওযারেন্ট ছাড়া একজন পুরিশ অফিসার আমলঅযোগ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে তার অপরাধের জন্য গ্রেফতার করতে পারে না।তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ আমল অযোগ্য অপরাধের জন্য অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পারেন। ফৌজদারী কার্যবিধি আইন ৫৪ ধারায় ওয়ারেন্ট ছাড়াই পুলিশ কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে পারেন-
(১) যদি কেউ আমলযোগ্য অপরাধের সাথে জড়িত থাকলে বা জড়িত থাকার যুক্তিসঙ্গত অভিযোগ বা সন্দেহ থাকলে।
(২) আইন সঙ্গত কারণ ছাড়া কারও কাছে ঘর ভাঙার সরঞ্জাম থাকলে।
(৩) আইন অনুযায়ী বা সরকার আদেশ দ্বারা কাউকে অপরাধী বলে ঘোষণা করলে।
(৪) যে ব্যক্তি কাছে চোরাই মাল আছে বলে সন্দেহ করা হয।
(৫) পুলিশের কাজে বাধা দিলে, বা কেউ আইনগত হেফাজত থেকে পলায়ন করলে বা করার চেষ্টা করলে।
(৬) বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর হাত থেকে পলায়ন করেছেন এই মর্মে যৌক্তিক সন্দেহ থাকলে;
(৭) যে কাজ বাংলাদেশে করা হলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচনা করা হত সেকাজ বাংলাদেশের বাইরে করে থাকলে;
(৮) গুরুতর অপরাধে দন্ডিত ব্যক্তিরা খালাস পাওয়ার পরও তাদের কিছু নিযম মেনে চলতে হয় ,সেই নিযম যারা ভঙ্গ করে;
(৯) যেসব আসামী বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতারের জন্য অন্য থানা থেকে অনুরোধ করা হলে।
একজন সাধারণ নাগরিক কি একজন অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পারেন:
১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৯ ধারা অনুযায়ী একজন সাধারণ নাগরিক একজন অপরাধিকে গ্রেফতার করতে পারেন।ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৯ ধারা অনুযায়ী একজন সাধারণ নাগরিক তার মতে জামিন অযোগ্য ও আমলযোগ্য অপরাধকারী ব্যাক্তিকে অথবা অপরাধী মর্মে ঘোষিত কোন ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করতে পারেন এবং অযথা বিলম্ব না করে তাকে পুলিশ অফিসারের নিকট অর্পণ করবেন বা নিকটস্থ থানা হেফাজতে নিয়ে যাবেন। পুলিশ অফিসার যদি তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করার কারণ আছে বলে মানে করেন তাহলে তাকে পুনরায় গ্রেফতার করবেন।
গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ কখন আসামীর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে:
১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৬ ধারার ৩ উপধারা এবং পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল,১৯৪৩ এর নিয়ম-১৫৩ অনুযায়ী, যেক্ষেত্রে মৃত্যুদন্ড, যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডনীয় কোন আসামীকে গ্রেফতার করার সময় উক্ত আসামী গ্রেফতাররত পুলিশকে আক্রমণ বা বলপ্রয়োগ করে গ্রেফতার প্রতিরোধ করে বা প্রতিরধের চেষ্টাকরে, সেক্ষেতে পুলিশ উক্ত আসামীকে গ্রেফতার করারজন্য গুলি করতে পারে এবং তাতে আসামীর মৃত্যু হলে উক্ত কর্তব্যরত পুলিশের কোন অপরাধ হবেনা বলে গণ্য হবে।
ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৪৬ ধারা মোতাবেক কোন ব্যক্তিকে কথা বা কার্য দ্বারা গ্রেফতার করা সম্ভব না হলে তার দেহ স্পর্শ করা যাবে।পিআরবি-১৫৩ বিধি অনুযায়ী উক্ত ব্যক্তি যদি মৃত্যুদন্ড বা যাবতজীবন কারাদন্ডে দন্ডিত আসামী বা শাস্তি যোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত হয় তবে উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা যাবে।
ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৪৭ ধারা মোতাবেক যাকে গ্রেপ্তার করা হবে সে ব্যক্তি যে স্থানে প্রবেশ করেছ সেই বাড়ীর মালিকের অনুমতি নিয়ে উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা যাবে।
ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৪৮ ধারা মোতাবেক বাড়ীর মালিকের অনুমতি পাওয়া না গেলে সে ক্ষেত্রে বাড়ীর দরজা জানলা ভেঙ্গে প্রবেশ করা যাবে ।
ফৌজদারি কার্যবিধি বিধি আইনের ৪৯ ধারা মোতাবেক কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে বাড়ীর ভিতরে আটকা পড়লে সে ক্ষেত্রে মুক্তি লাভের জন্য বাড়ীর দরজা জানলা ভেঙ্গে বাহির হওয়া যাবে ।
১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৫০ ধারা মোতাবেক কোন পুলিশ হেফাজতে হতে কোন আসামী পলায়ন করলে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৫৮, ৬৬ ধারা মোতাবেক পুলিশ অফিসার উক্ত আসামীকে বাংলাদেশের যে কোন স্থান হতে গ্রেফতার করতে পারবে।
ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৫১ ধারা মোতাবেক গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির জামিনের ব্যবস্থা না থাকলে তার দেহ তল্লশী করে পরিধেয় বস্ত্র ব্যতীত যা পাওয়া যাবে তা হেফাজতে নিতে হবে।
বিশেষ পরিস্থিতিতে আসামীকে গ্রেফতার করার জন্য ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৪২ ধারা মোতাবেক জনসাধারণের সাহায্য নিয়ে আসামীকে গ্রেফতার করা যাবে। পিআরবি-৩১৬ বিধি।
ফৌজদারী আদালত কর্তৃক কোন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালতে হাজিরায় বাধ্য করার জন্য যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়ে থাকেঃ-
(১) ফৌজদারী কার্যবিধির ৬৮ ধারা মতে,আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সমন ইস্যু করে পুলিশ কর্তৃক তা জারি করে।
(২) ফৌজদারী কার্যবিধির ৭৫ ধারা মতে, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালত গেফতারী পরোয়ানা জারি করে পুলিশ কর্তৃক তা কার্যকর করে।
(৩) ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৭ ধারা মতে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালত হুলিয়া জারি করবেন এবং ধারা-৮৮ অুনযায়ী আদালত চাইলে তার সম্পত্তি ক্রোক করতে পারেন ।
(৪) যদি অভিযুক্ত ব্যক্তি দেশের বাইরে পালায়ন করেন সে ক্ষেত্রে আদালত ৯৩(খ) ধারা অনুযায়ী ঐ দেশের সংশ্লিষ্ট আদালতে ডাকযোগ ওয়ারেন্ট কার্যকরী করার অনুরোধ জানিয়ে নোটিশ প্রেরণ করবেন।
হুলিয়া যার ইংরেজী শব্দ Proclamation বা ঘোষনা। যখন কোন আসামীকে সমন দেয়া হয় বা আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হয় সে সময় যদি আমাসি আদালতে উপস্থিত না থাকে তাহলে আদালত তাকে হাজির করার জন্য বাধ্য করার যে প্রক্রিয়ায় তাকে হুলিয়া বলা হয় ।
ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৭ ধারা অনুযায়ী, কোন আদালতের যদি এইরুপ বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে, উক্ত আদালত যার বিরুদ্ধে সমন প্রদান করেছেন সেই ব্যক্তি সাক্ষ্য গ্রহণের পুর্বে বা পরে পলাতক রয়েছেন বা সমন যাতে কার্যকর না হতে পারে সে জন্য আন্মগোপন করে আছেন, তাহলে আদালত উক্ত ব্যক্তিকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে ও নির্দিষ্ট স্থানে ৩০ দিনের মধ্যে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে একটি লিখিত ঘোষণা প্রকাশ করতে পারেন। এই ঘোষণাটি কে হুলিয়া বলা হয়।
হুলিয়া যাতে সর্বসাধারণের গোচরে আসে সেই জন্য নিম্নোক্তভাবে প্রকাশ করতে হবেঃ
১) উক্ত ব্যক্তি যেখানে বাস করে সেই শহর বা গ্রামের প্রকাশ্য স্থানে হুলিয়া পড়ে শুনাতে হবে।
২) যে গৃহে উক্ত ব্যক্তি সাধারণত বাস করে সেই গৃহের কোন প্রকাশ্য স্থানে উক্ত হুলিয়া লটকাইয়া দিতে হবে।
৩) সংশ্লিষ্ট আদালতের কোন প্রকাশ্য স্থানে উক্ত হুলিয়া পত্রটির নকল লটকাইয়া দিতে হবে।
পলাতক ব্যক্তি সম্পর্কে ঘোষণা ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ৮৭ ধারায় হুলিয়া জারি :-
(১) যদি কোন আদালতের এমন বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে , উক্ত আদালত যার বিরুদ্ধে পরোয়ানা প্রদান করেছেন সে ব্যক্তি পলাতক হয়েছে, তাহলে উক্ত আদালত তাকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে ঘোষণা প্রকাশের তারিখ হতে ৩০ দিনের কম নয়, হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে একটি লিখিত ঘোষণাপত্র (হুলিয়া) জারি করতে পারেন।
(২) হুলিয়া নিম্নলিখিত ভাবে প্রকাশ করতে হবেঃ
(ক) উক্ত ব্যক্তির বাসস্থানের শহরের বা গ্রামের কোন প্রকাশ্য স্থানে হুলিয়াটি পাঠ করতে হবে।
(খ) উক্ত ব্যক্তির বাসস্থানের প্রকাশ্য স্থানে হুলিয়াটি লটকিয়ে দিতে হবে।
(গ) হুলিয়ার একটি কপি আদালতের কোন প্রকাশ্য স্থানে লটকিয়ে দিতে হবে।
(৩) ঘোষণা প্রদানকারী আদালত যদি এই মর্মে একটি লিখিত বিবৃতি দেন যে হুলিয়াটি একটি নির্দিষ্ট দিনে যথাযথভাবে জারি হয়েছে তবে বিবৃতিটি চুড়ান্ত প্রমান্য বলে গণ্য হবে।
পলাতক ব্যক্তির সম্পত্তি ক্রোক ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ৮৮ ধারাঃ-
(১) ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ৮৭ ধারা অনুসারে ঘোষণা প্রদাণকারী আদালত যেকোন সময়ই ঘোষিত ব্যক্তির স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করার আদেশ দিতে পারেন।
(২) এইরূপ আদেশ যে জেলায় দেয়া হবে সেই জেলার মধ্যে অবস্থিত উক্ত ব্যক্তির যেকোন সম্পত্তি ক্রোক করা যাবে এবং অন্য জেলায় উক্ত ব্যক্তির সম্পত্তি থাকলে সেখানকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদনক্রমে একই আদেশ দ্বারা উক্ত সম্পত্তিও ক্রোক করার নির্দেশ দিবেন
যেই সম্পত্তি ক্রোক করার আদেশ দেয়া হয়েছে তা ঋণ বা অস্থাবর সম্পত্তি হলে নিম্নলিখিত ভাবে ক্রোক করতে হবেঃ-
(১) আটক করে
(২) রিসিভার নিয়োগ করে
(৩) লিখিত আদেশ দ্বারা ঘোষিত ব্যক্তি বা তার পক্ষে অপর কোন ব্যক্তিকে উক্ত সম্পত্তি প্রদান নিষিদ্ধ করে।
(ঘ) আদালতের ইচ্ছানুসারে এইরূপ সকল ব্যবস্থা বা যেকোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
স্থাবর সম্পত্তি ক্রোকঃ
যে সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেয়া হয়েছে তা স্থাবর হলে এই ধারানুসারে ক্রোক, সরকারকে রাজস্ব দেয়া জমি হলে সংশ্লিষ্ট জেলার কালেক্টরের মারফত করতে হবে এবং অন্যান্য সমস্ত ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত রূপে করতে হবেঃ-
(১) দখল করে।
(২) রিসিভার নিয়োগ করে।
(৩) লিখিত আদেশ দ্বারা ঘোষিত ব্যক্তি বা তার পক্ষে অপর কোন ব্যক্তিকে খাজনা প্রদাণ অথবা সম্পত্তি হস্তান্তর নিষিদ্ধ করে।
(৪) আদালতের ইচ্ছানুসারে এইরূপ সকল ব্যবস্থা বা যেকোন ০২ (দুই) টি ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
(৫) যে সম্পত্তি ক্রোক করার আদেশ দেয়া হয়েছে তা যদি জীবন্ত প্রাণী বা পচনশীল দ্রব্য হয় তাহলে আদালত প্রয়োজন মনে করলে অবিলম্বে তা বিক্রয়ের আদেশ দিতে পারেন, এবং বিক্রয়লব্ধ অর্থ আদালতের আদেশ অনুসারে ব্যবহৃত হবে।
(৬) এই ধারা অনুসারে নিযুক্ত রিসিভারের ক্ষমতা, কর্তব্য ও দায়িত্ব, ১৯৮০ সালের দেওয়ানী কার্যকিধির প্রথম তফসিলের চল্লিশ আদেশ অনুসারে নিযুক্ত রিসিভারের ক্ষমতা, কর্তব্য ও দায়িত্বের অনুরূপ হবে।
(৬-(১) ক্রোকের তারিখ হতে ০৬ মাসের মধ্যে ঘোসিত ব্যক্তি ব্যতীত অপর কোন ব্যক্তি এই ভিত্তিতে ক্রোককৃত কোন সম্পত্তি দাবী করে অথবা ক্রোকের বিরুদ্ধে দাবি উত্থাপন করে যে উক্ত সম্পত্তিতে তার স্বত্ব আছে এবং উক্ত স্বত্ব ক্রোকযোগ্য হয় তাহলে এইরূপ দাবি বা আপত্তি সম্পর্কে তদন্ত করতে হবে এবং উহা সম্পূর্ণ বা আংশিক মেনে নেয়া বা অগ্রাহ্য করা যেতে পারে।
তবে শর্ত থাকে যে, এই উপধারায় বর্ণিত সময়ের মধ্যে কোন দাবি বা আপত্তি করা হয়ে থাকলে দাবিদার বা আপত্তিকারীর মৃত্যুর পর তার আইনসঙ্গত প্রতিনিধি উক্ত দাবি বা আপত্তি পরিচালনা করতে পারেন।
(৬-(২) যে আদালত ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন (৬-১) উপধারা অনুসারে দাবি বা আপত্তি সেই আদালতে করতে হবে।
(৬-(৩) এইরূপ প্রত্যেকটি দাবি বা আপত্তি যে আদালতে করা হয়েছে সেই আদালত এই বিষয়ে তদন্ত করবেন।
(৬-(৪) যার দাবি বা আপত্তি (৬-১) উপধারা মোতাবেক প্রদত্ত আদেশ দ্বারা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে অগ্রাহ্য করা হয়েছে তিনি বিরোধীয় সম্পত্তিতে তার দাবিকৃত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য উক্ত আদেশের তারিখ হতে ০১ বৎসরের মধ্যে মামলা দায়ের করতে পারবেন, এবং এই মামলার ফলাফল সাপেক্ষে উক্ত আদেশ চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
(৬-(৫) ঘোষণাধীন ব্যক্তি যদি উল্লেখিত সময়ের মধ্যে হাজির হয়, তাহলে আদালত উক্ত আদেশ দ্বারা সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি ক্রোক হতে মুক্ত করে দিবেন।
(৭) ঘোষণাধীন ব্যক্তি যদি ঘোষণায় উল্লেখিত সময়ের মধ্যে হাজির না হয়, তাহলে ক্রোককৃত সম্পত্তি সরকারের এখতিয়ারভুক্ত হবে। কিন্তু ক্রোকের তারিখ হতে ০৬ মাস অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত এবং (৬-(১) উপধারা অনুসারে কোন দাবি বা আপত্তি করা হয়ে থাকলে তা উক্ত উপধারা অনুসারে নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সম্পত্তি বিক্রয় করা যাবেনা।
অবশ্য সম্পত্তি যদি দ্রুত ও স্বাভাবিক ধ্বংসশীল হয়, অথবা আদালত যদি মনে করেন বিক্রয় করা মালিকের জন্য লাভজনক হবে তাহলে আদালত যখন উপযুক্ত বলে মনে করবেন তা বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে পারবেন।
ফৌজদারী কার্যবিধি আইন ৮৯ ধারাঃ
ফৌজদারী কার্য বিধি আইনের ৮৮ ধারা মোতাবেক যে সম্পত্তি ক্রোক করা হয়েছে সেই সম্পত্তি যে আদালতের এখতিয়াধীন রয়েছে সেই আদালত বা যে আদালতে অধীনে আছে সেই আদালতে হাজির হয়ে ক্রোককৃত ব্যক্তি ক্রোকের তারিখ হতে ২ বছরের মধ্যে হাজির হয়ে যদি এই মর্মে আদালতের সন্তোষ্টি করতে পারেন যে, সে পলাতক ছিল না বা আন্মগোপন করে নাই বা সে কোন প্রকার হুলিয়া নোটিশ পায় নাই তাহলে আদালত তাকে উক্ত ক্রোককৃত সম্পত্তি ফেরত প্রদান করবেন।
পরিশেষে যেটি বলতে চাই ফৌজদারী কার্যবিধির আলোচনা অনেক ব্যাপক এবং বেশি তাই এখানে যতুটুকু দেওয়া সম্ভব ততোটুকু আলোচনা করার চষ্টো করা হয়েছে । ফৌজদারী আইন সম্পর্কে আরো জানতে বিডি ল নিউজের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ
লেখকঃ ল ফর ন্যাশনস, ইমেইলঃ lawfornations.abm@gmail.com, মোবাইল: 01842459590.
Discussion about this post