নিজস্ব প্রতিবেদক: ইতিহাসের দায় মোচনে অবিলম্বে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের ষড়যন্ত্রকারী ও উপকারভোগী এবং এ হত্যাকাণ্ডে বিভিন্নভাবে সম্পৃক্তদের স্বরূপ উন্মোচন প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
শনিবার বিকালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় রাজধানীর বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে সংযুক্ত হয়ে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এবিষয়ে মন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার দৃশ্যমান অপরাধীদের বিচার হয়েছে। কিন্তু বৃহত্তর পরিসরে ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচার হয়নি। বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তার জন্য সিভিল ও অন্যান্য এজেন্সির যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছিলেন, এমনকি যারা রাজনৈতিকভাবে যুক্ত ছিলেন তারা সেদিন কেন ব্যর্থ হলেন, তাদের ভূমিকা কী ছিল সেটাও খোঁজে বের করতে হবে। এজন্য বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা জড়িত ছিলেন, যারা উপকারভোগী, যারা ষড়যন্ত্র জানার পরও চুপ ছিলেন সকলের স্বরূপ উন্মোচনের জন্য একটা উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। অথবা বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলাটি ফৌজদারী কার্যবিধি অনুসারে আবারো তদন্ত করে সম্পৃক্তদের সম্পর্কে তুলে ধরা দরকার। তাহলে ইতিহাসে রেকর্ড থাকবে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে কারা কীভাবে জড়িত ছিল। এ কাজটি অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সময়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার খুনি, ষড়যন্ত্রকারী ও সুবিধাভোগীদের স্বরূপ উন্মোচন করতে না পারলে ইতিহাসে আমাদের দায় থেকে যাবে।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ছিল একটা স্বাধীন সার্বভেৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, যেখানে ধর্মীয় উগ্রতা থাকবে না, ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য থাকবে না। বঙ্গবন্ধুর দর্শন ছিল মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান দূর করা, ধর্মীয় ও অন্যান্য বৈষম্য দূর করে সকলকে একটি প্লাটফর্মে এনে বাঙালি প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করা। সেই দর্শনের ধারবাহিকতায় তিনি যখন দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি দিয়েছিলেন, তিনি যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়েছেন, তখন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে বঙ্গবন্ধু নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কার্যকরী সভাপতি রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন হালদারের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদষ্টো পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু এমপি। আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তথ্য ও সমপ্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান এমপি। এছাড়াও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট (অব.) আবদুল জলিল, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানা, সহসভাপতি অরুণা বিশ্বাস আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদান করেন।
Discussion about this post