শেষ পর্যন্ত একতরফা নির্বাচনের দিকেই এগোচ্ছে দেশ। তবে এ নির্বাচন আদৌও অনুষ্ঠিত হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। তাদের ধারণা সরকার ও বিরোধী দলের অনমনীয় মনোভাবের কারনে আগামীতে বাড়বে রাজনৈতিক সহিংসতা। ইত্যেমধ্যে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া তাদের দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে ভ্রমন ও চলাফেরায় সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। এতে একদিকে যেমন অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্থ করে তুলবে তেমনি প্রশ্নবিদ্ধ করবে বাংলাদেশের ইমেজ সংকটকে।
আগামী নির্বাচন নিয়ে গ্রহনযোগ্য মতামতে পৌছতে দুই নেত্রীর টেলিফোন সংলাপের রেশ ইতিমধ্যে ফিকে হতে শুরু করেছে। বিশেষ করে টেলিফোন সংলাপের পর দিন থেকে ১৮ দলীয় জোটের ৬০ ঘন্টার হরতাল এ সংলাপের পথে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাড়ায়।
এরপর দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনের উদ্যেগে বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গে সাক্ষাতের পর দুই দলের মহাসচিব পর্যায়ে যে আলোচনা শুরুর প্রস্তাব করা হয়েছে সে উদ্যোগও ভেস্তে যেতে বসেছে। কেননা আজ থেকে শুরু হয়েছে বিরোধী জোটের আবারো ৬০ ঘন্টার হরতাল কর্মসূচী। বিরোধী পক্ষ বলছে সরকারকে নিদর্লীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে বাধ্য করতে এরপর লাগাতার কর্মসূচী দেয়া হবে। তবে সরকার পক্ষও অনঢ়।
সবশেষ রবিবার রাজধানীতে জেলহত্যা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট করেই বলেছেন আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবেই এবং তা হবে সংবিধান মোতাবেক। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এমনকি প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় ইতিমধ্যে শুরু করেছেন নির্বাচনী প্রচারণা। সে নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি যেমন অংশ গ্রহন করবে না তেমনি সরকারের শরীক জাতীয় পার্টির অংশ গ্রহনও অনিশ্চিত। তবে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সার্বিক প্রস্ততি শেষ করেছে। ফলে তা এক তরফা নির্বাচন হবে বলেই পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা।
আর বিরোধী পক্ষ নির্বাচন প্রতিহত করতে আগামীতে রাজনৈতিক কর্মসূচী জোরদার করবে বলেই তাদের বিশ্বাস। ১৮ দলীয় জোট ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে যে সে ভাবেই হোক তারা নির্বাচন প্রতিহত করবে। এতে করে আগামী নির্বাচন আদৌ অনুষ্ঠিত হবে কিনা তা নিয়ে শুরু হয়েছে নানামুখী গুঞ্জন।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে কূটনৈতিক মিশন সমূহের তৎপরতা এবার আর তেমনটা চোখে পড়ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে এবার দৃঢ় মনোভাব থাকায় উৎসাহ নেই তাদেরও। ১৮ দলীয় জোটের লাগাতার কর্মসূচী আগামীতে রাজপথকে করে তুলবে উত্তপ্ত। বাড়বে রাজনৈতিক সহিংসতা। ইতিমধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যে শুরু হয়েছে স্থবির অবস্থা। জাতীয় অর্থনীতিতে শুরু হয়েছে নিন্মমুখী প্রবণতা। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি আগামীতে বাংলাদেশের ইমেজ সংকটকে আবারো প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলবে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারনা।


Discussion about this post