নিজস্ব প্রতিবেদক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করবে আজ। আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় ধানমণ্ডি থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ এবং মনোনয়ন ফরম জমা দিতে হবে। মনোনয়ন ফরম জমা দেয়া যাবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।
আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদের ৫০ সংরক্ষিত নারী আসনের মধ্যে ৪৩টিই পাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি পাবে ৪টি। সংরক্ষিত নারী আসনের আইন অনুযায়ী তারা এ সংখ্যক আসন পাবে।
আইনে বলা আছে- সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে যে দলের যতটি আসন, তার আনুপাতিক হারে ৫০ আসন দলগুলোর মধ্যে ভাগ করে দেয়া হবে। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৫৭ আসন পেয়েছে। এ হিসাবে তারা পাবে ৪৩ আসন। জাতীয় পার্টি পেয়েছে ২২ আসন। এর বিপরীতে তারা পাবে ৪ নারী আসন। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট পেয়েছে ৮ আসন। এই অনুপাতে তারা পাবে ১ আসন। বাকি ২ আসন পাবে অন্য দলগুলো।
আইন অনুযায়ী, যে দলের অনুকূলে যতটি আসন নির্ধারিত হবে, দলগুলো সেই আসনপ্রতি এক বা একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারবে। একজন করে প্রার্থী দেয়া হলে ভোটাভুটির প্রয়োজন হবে না।
মনোনয়নে যেসব গুণ বিবেচনায় নেয়া হবে: আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, একাদশ জাতীয় সংসদকে প্রাণবন্ত করতে বিভিন্নভাবে যাচাই-বাছাই করে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যদের মনোনীত করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সে লক্ষ্যে এখন থেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি দলীয় আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দেয়ার পর সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করেই ৪৩টি আসনে মনোনীত করা হবে।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানা গেছে, কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ও জেলায় পর্যায়ে দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত জনপ্রিয় নারীদের অনুসন্ধান করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। দলটির বিভিন্ন নেতা ও সংস্থার মাধ্যমে বিস্তারিত খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিষয়ে। পরিবারের রাজনৈতিক ঐতিহ্য, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত, এক-এগারো পরবর্তী সময়ে ভূমিকা, বিভিন্ন সময়ে দলের জন্য ত্যাগ, বিভিন্ন সেক্টরে অবদান আছে ও অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে প্রার্থী বাছাই করা হবে। এই সব গুণাবলির পাশাপাশি জাতীয় সংসদে কথা বলতে পারবেন এমন প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে জায়গা পেতে ইতোমধ্যেই দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার গুডবুকে থাকার চেষ্টা করছেন অনেকেই। মনোনয়ন পেতে আগ্রহীরা গণভবনে গিয়ে দেখা করার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড চূড়ান্ত মনোনয়ন প্রদাণ করবেন বলে জানান নেতারা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও দলটির মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, যেকোনো নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ক্রাইটেরিয়া সবসময় একটাই, সেটা হচ্ছে যোগ্যতা। এলাকায় প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, যে কর্মকাণ্ড করার জন্য মনোনয়ন চেয়েছেন সে কর্মকাণ্ড করার মতো দক্ষতা-সক্ষমতা এইগুলো দেখা হবে সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে। রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার পাশাপাশি পেশাজীবী, সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য অঙ্গন থেকেও বিবেচনা করা হবে।
Discussion about this post