অ্যাসিডদগ্ধ ব্যক্তি বা সারভাইভারদের প্রতি অবিচার করা হলে তা হবে বিচার বিভাগের কলঙ্ক। আইনে তদন্ত, সাক্ষ্য ও বিচারের সময় নির্দিষ্ট করা আছে। এসিড সন্ত্রাস মামলার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে ভিকটিম প্রটেকশন অ্যাক্ট প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি। শুধু আদালত চত্ত্বরেই নয়, আদালতের বাইরে ভিকটিমের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলে বিচার আরও ত্বরান্বিত হবে বলেছেন-সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. ইমান আলী।<br /> তিনি বলেন, তদন্ত যথাসময়ে শেষ না হলে তা তদন্তকারীর ব্যর্থতা। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা আছে। কিন্তু সমস্যা হলো পর্যাপ্ত নজরদারি নেই। বিশেষ ট্রাইব্যুনাল কতটুকু প্রাধান্য দিয়ে মামলা শেষ করছে তাও নজরদারির আওতায় আনতে হবে।<br /> বিচারপতি মো. ইমান আলী বলেন, অ্যাসিডের ক্ষত দৃশ্যমান। এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত প্রতিবেদন কীভাবে দেওয়া হয় তা বোধগম্য নয়। উচ্চ আদালত থেকে আসামির জামিন দেওয়া বিষয়ে কোনো নজরদারি নেই। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়কে জানাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।<br /> গতকাল শনিবার রাজধানীর ব্রাক ইন সেন্টারে এসিড সারভাইভার্স ফাউন্ডেশন (এএসএফ) আয়োজিত ‘দ্রুত বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অ্যাসিড সহিংসতার মামলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিচারপতি মো. ইমান আলী এসব কথা বলেন।</p> জধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক ইন সেন্টারে এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন (এএসএফ) এবং বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্লাস্ট, নারীপক্ষসহ বিভিন্ন আইন সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা এ সম্মেলনের আয়োজন করে।<br /> বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবি সমিতির (বিএনডব্লিউএলএ) চেয়ারপারসন ও এএসএফ ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্য অ্যাডভোকেট ফওজিয়া করিম ফিরোজের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (লেজিসলেটিভ ও সংসদ) নাসরিন বেগম, পুলিশের এআইজি (অপরাধ) আবু আলী সিদ্দিক।<br /> নাসরিন বেগম বলেন, এসিড মামলার বিচার দ্রুত নিস্পত্তি করতে কেন্দ্র থেকে জেলা পর্যন্ত বিভিন্ন কমিটি রয়েছে। তারা তৎপর হলে বিচার বিলম্বিত হওয়ার সুযোগ কম। পুলিশ, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি থেকে শুরু করে সকলে সম্মিলিতভাবে কাজ করলে মামলার অপরাধীরা অবশ্যই সাজা পাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।<br /> এআইজি (অপরাধ) আবু আলী সিদ্দিক বলেন, পুলিশ জনগণের সবচেয়ে বেশি কাছে থেকে কাজ করে। কিন্তু তাদের বদনাম বেশি। পুলিশের সাহায্য ছাড়া কোন জাতি এগুতে পারেনা। দেশে এসিড সন্ত্রাস হ্রাসের পিছনে পুলিশের অবদান রয়েছে।<br /> অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এএসএফের নির্বাহী পরিচালক সেলিনা আহমেদ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক (অধিকার বিভাগ) রীণা রায়, ব্লাষ্টের জেলা প্রকল্প কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট সালেহা খাতুন, বিএনডব্লিউএলের পরিচালক (লিগ্যাল) অ্যাডভোকেট তৌহিদা খন্দকার।<br /> সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এএসএফ কো অর্ডিনেটর (লিগ্যাল সাপোর্ট) অ্যাডভোকেট অনিমেষ চন্দ্র সরকার। এএসএফ ট্রাষ্টি বোর্ড সদস্য ও নারী পক্ষের সদস্য অ্যাডভোকেট হাবিবুন নেসার সঞ্চালনায় এসিড সারভাইভার্স গাইবান্ধার রাধা রানী ও বগুড়ার মনোয়ারা বেগম মনেজাসহ কয়েকজন বক্তব্য রাখেন।<br /> মুক্ত আলোচনা পর্ব সঞ্চালনা করেনÑএএসএফের ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য অ্যাড. হাবিবুন নেসা।<br /> সম্মেলনে পুলিশ, ২০টি জেলার পিপি-এপিপি, আইনজীবী এবং বিভিন্ন সংস্থার প্যানেল আইনজীবী ও স্টাফ ল’ইয়ার এবং এসিডে আক্রান্তরা উপস্থিত থেকে মতামত প্রদান করেন। এছাড়াও সারভাইভার রাধা রানী ও মনোয়ারা বেগম তাদের মামলার সফলতা ও জটিলতাগুলো তুলে ধরেন।</p>




Discussion about this post