জুমার আজান শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মসজিদে প্রবেশ করে হামলাকারী। গায়ের রঙ ফর্সা, লম্বা, পাতলা গড়ন, তার পরনে ছিল কালো রঙের জ্যাকেট, মুখ মাফলার দিয়ে ঢাকা।
এসব কথা জানান, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের সৈয়দপুর চকপাড়া আহমেদিয়া জামে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় আহত ব্যক্তির স্বজন মোহনপুর ডিগ্রি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র সান্টু রহমান।
বোমা হামলায় তার দুই চাচা মৃত ভলয় তালুকদারের ছেলে ময়েজ উদ্দিন (৪০) ও বলয় তালুকদারের ছেলে সাহেব আলী (৩৬) গুরুতর আহত হন।
সান্টু জানান, চকপাড়া আহমেদিয়া জামে মসজিদে সাধারণত দুই থেকে তিন কাতার মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করেন। দুপুর দেড়টায় জামাত শুরুর কথা থাকলেও খুতবা শেষ হওয়ায় ১টা ২৫ মিনিটে নামাজ শুরু হয়। দ্বিতীয় রাকাতে যাওয়ার সময় ওই বোমা হামলাকারী তার কোমড় থেকে কিছু একটা বের করছে এমন বুঝতে পেরে নড়ে ওঠেন ময়েজ। এতে হামলাকারীর শরীরেই বোমা বিস্ফোরিত হয়।
বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে হামলাকারী পালানোর চেষ্টা করলে আহত সাহেব আলী তাকে ধরে ফেলেন। এর কিছুক্ষণ পরে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় কমপক্ষে ১০জন আহত হন। এদের মধ্যে ময়েজ উদ্দিন (৪০), তার চাচাতো ভাই সাহেব আলী এবং ওই গ্রামের মুকুল হোসেনের ১২ বছর বয়সী ছেলে নয়নকে গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকীরা বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নেন।
রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনজনই বর্তমানে আশঙ্কা মুক্ত বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
ময়েজ ও তার ভাই সাহেব আলী হাসপাতালের ২ নম্বর ওয়ার্ডে এবং শিশু নয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন।
এদিকে বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ও পুলিশ সুপার (এসপি) নিশারুল আরিফ।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান জানান, বর্তমানে ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ এবং আশেপাশের এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে।
নিহত হামলাকারীর পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে, পাশাপাশি কারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত তা বের করতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। রাতেই তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হবে, জানান মতিয়ার রহমান।
Discussion about this post