ডেস্ক রিপোর্ট: মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আলোচিত নায়িকা পরীমণির ‘অনৈতিক’ কাজের সহযোগিতা করায় নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। শুক্রবার ৬ আগস্ট সন্ধ্যায় পান্থপথ এলাকা থেকে চয়নিকাকে আটক করা হয় বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে।
পান্থপথ থেকে আটকের পর তাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছ। সেখানে তাকে পরীমনিসহ বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আটকের সময় চ্যানেল আইয়ের স্টিকার লাগানো একটি গাড়িতে ছিলেন চয়নিকা। ওই গাড়িসহই তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
পরিমনী এই নির্মাতাকে নিজের ‘মম’ বলে সম্বোধন করেন। বিভিন্ন সময় তাদের দুজনকে একসঙ্গে দেখা যায়। পরীমণির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সবসময় পাশে ছিলেন এই নির্মাতা। বিশেষ করে গত মাসে ঢাকার সাভারে উত্তরা বোটক্লাবকাণ্ডে সর্বদা পাশে থেকে পরীমণিকে সাহস জুগিয়েছিলেন চয়নিকা।
ঢাকা বোর্ড ক্লাবের ঘটনায় পরীমণি চয়নিকাকে কাছে পেলেও পরীমণির বাসায় যখন র্যাব অভিযান চালায় তখন চয়নিকাকে দেখা যায়নি। পরীমনি আটকের খবরটি গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ার প্রকাশ হলেও তখনও নাট্যনির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীও লাপাত্তা ছিলেন। এবার বিপদে মেয়ের কাঁধে হাত রেখে সান্ত্বনা দিতে দেখা যায়নি তাকে।
এ নিয়ে আজকালের খবর অনলাইন ‘রহস্যের অন্তরালে পরীমনির ‘মা’ চয়নিকা চৌধুরী” এবং এর আগে ‘পরীমনির ডাকে সাড়া দেননি কেউ’ শীরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদন দুটিতেই স্পষ্ট চয়নিকা চৌধুরীর রহস্যজনক ভূমিকার কথা তুলে ধরা হয়। এরপর নিউজগুলো পাঠকমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে। চয়নিকার রহস্যজনক ভূমিকা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ফোরামে নানা আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। এরপরই আজ সন্ধ্যায় আটক হলেন রহস্যময় চরিত্র ‘সুগার মম’ চয়নিকা চৌধুরী। পাঠকের সুবিধার্থে তার কিছু অংশ তুলে দেওয়া হল-
প্রতিবেদনে লেখা হয়- গ্রেফতারের সময় এই ‘মা’কে দেখা যায়নি। ক্যামেরার ভিউ ফাইন্ডার চয়নিকা খুঁজে বেড়ালেও নিজেকে রহস্যের অন্তরালে রেখেছেন এই নির্মাতা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনরা বেশ ট্রল চালিয়ে যাচ্ছে। সবার প্রশ্ন ‘মম’ কোথায়? নেটিজেনদের সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে গণমাধ্যম চেষ্টা চালিয়েছিল কিছু জবাবের।
বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছয়বার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে কল দিলেও চয়নিকা চৌধুরী ধরেননি। এরআগেই তাকে ‘খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না’ এ জাতীয় শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ পায়। ফলে পরীমনির জীবনে তার রহস্যময় ভূমিকার অভিযোগ আরো জোড়ালো হল।
অভিযোগ রয়েছে- পরীমনির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ছায়া উপদেষ্টা এই মাদার ফিগার। বিশেষ করে ‘বিশ^সুন্দরী’ সিনেমা নির্মাণের শুরু থেকেই চয়নিকার এক ধরনের কর্তৃত্ব পরীমনির ওপর চেপে বসে। যা বুধবার দৃশ্যত অবসান হয়। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় এবং ‘রহস্যময়ী’ নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী। তিনি বেসরকারি টেলিভিশন ইন্ডিপেন্ডেন্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন-‘পরীমনির বাসায় অভিযান পুরোপুরি আইনি বিষয়, এ বিষয়ে তার কোনো সম্পর্ক নেই।’
ওই সাক্ষাৎকারে তাকে আরও বলতে শোনা গেছে- পরীমনি তার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কখনই জানায়নি। আর তিনিও কখনও তার ব্যক্তিগত বিষয়ে যেতে কিছু জানতে চাননি।
পরীমনির আইনি লড়াইয়ে পাশে থাকবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি না দিয়ে বলেন, “ওর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক ছিল না, কেবল হাই হ্যালো, কি করছ, কি খাচ্ছো এর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।”
নাট্যপাড়ায় চয়নিকা চৌধুরী মূলত ‘মাসী’ নামেই পরিচিত।
উল্লেখ্য, চয়নিকা চৌধুরী বাংলাদেশের একজন আলোচিত পরিচালক। ২০০১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ‘শেষ বেলায়’ নাটকের মধ্য দিয়ে পরিচালনা শুরু করেন তিনি।
‘বিশ্বসুন্দরী’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক ঘটে তার। ওই সিনেমার নায়িকা পরীমনি। এই সিনেমার কাজের পর থেকে নায়িকা পরীমনির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা বাড়ে।
Discussion about this post