নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী অমিত সাহা ও হোসাইন মোহাম্মদ তোহাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে আবরার হত্যা মামলার এই দুই আসামিকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) ওয়াহিদুজ্জামান। তিনি মামলার স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম সারাফুজ্জামান আনছারী দুই আসামির প্রত্যেককে ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে ১০ অক্টোবর গাজীপুর থেকে হোসেন মোহাম্মদ তোহাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আবরার হত্যা মামলার ১১ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি তোহা। একই দিন রাজধানীর শাহজাহানপুর কালিমন্দির থেকে আটক করা হয় মামলার আরেক আসামি অমিত সাহাকে।
এদিন দুপুর ২টা ৫২ মিনিটের দিকে আসামি অমিত সাহা ও হোসেন মোহাম্মদ তোহাকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। হাতে হাতকড়া পরিয়ে তাদের এজলাসের ডকে (আসামি রাখার নির্ধারিত স্থান) রাখা হয়। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
এর এক ফাঁকে অমিত সাহার কথা হয়। আসামি অমিত সাহা বলেন, বুয়েটের ট্র্যাডিশনই এটা যে, অর্ডার উপরের (সিনিয়র) থেকে আসে। সিনিয়র ব্যাচ অর্ডার দিলে জুনিয়র ব্যাচ তা করতে বাধ্য। এটা করা ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় নেই।
এদিকে বিকেল ৩টা ১০ মিনিটের দিকে এজলাসে বিচারক আসলে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষে হেমায়েত উদ্দিন খানসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী আসামিদের রিমান্ড চেয়ে শুনানি করেন।
শুনানিতে তারা বলেন, আসামি তোহা ২০১১ নম্বর রুমে থাকতেন। যা ছিল টর্চার সেল। আর উপরের নির্দেশে আবরারকে ডেকে নিয়ে যায় তোহা। ৭ অক্টোবর রাত আড়াইটা পর্যন্ত ওই হলের ২০১১ ও ২০০৫ নম্বর রুমের ভেতর নিয়ে আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ক্রিকেট স্ট্যাম্প ও লাঠি-সোটা এবং রশি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় প্রচণ্ড মারধর করে। এতে ঘটনাস্থলেই আবরার মারা যায়।
উল্লেখ্য, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েট ক্যাম্পাসে আলোচনার শীর্ষে আছেন অমিত সাহা। সব ছাত্রছাত্রীর মুখে তার নাম। বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক তিনি। আবরার হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পলাতক ছিলেন তিনি। তার কক্ষেই ডেকে নিয়ে প্রথমে পেটানো হয়।
আবরার হত্যাকাণ্ডে অমিত সাহা যে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত, সেই অভিযোগ দুদিন ধরেই করে আসছিলেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। জানা গেছে, আবরার ফাহাদ হলে আছেন কিনা সে বিষয়ে প্রথম খোঁজ নিয়েছিলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের উপআইনবিষয়ক সম্পাদক অমিত সাহা। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় অমিত সাহা আবরারের এক বন্ধুকে ইংরেজি অক্ষরে আবরার ফাহাদ হলে আছে কিনা’ মেসেজ দেন। মেসেজের এক ঘণ্টার মধ্যেই শেরেবাংলা হলের ছাত্রলীগ নেতারা আবরারকে ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যায়। ২০১১ নম্বর কক্ষে এনে তাকে লাঠি, চাপাতি ও স্টাম্প দিয়ে পেটায়।




Discussion about this post