নিজস্ব প্রতিবেদক: বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় শামীম বিল্লাহ ও মোয়াজ আবু হুরায়রার পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এর আগে চার দফায় ১৬ জনকে পাঁচদিন করে রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
আজ রবিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ এই আদেশ দেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ৬ অক্টোবর রাত ৮টা ৫ মিনিটের দিকে আবরারকে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে পরের দিন রাত আড়াইটা পর্যন্ত হলের ২০১১ এবং ২০০৫ নম্বর কক্ষে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ক্রিকেট স্ট্যাম্প এবং লাঠি-সোটা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় প্রচণ্ড মারধর করা হয়। এর ফলে ঘটনাস্থলে আবরারের মৃত্যু হয়। আবরারের মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামিরা ওই ভবনের দ্বিতীয় তলার সিঁড়িতে তার মৃতদেহ ফেলে রাখে। পরে কিছু ছেলে আবরারের মৃতদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, মূল রহস্য উদঘাটন, অন্যান্য সহযোগী ও এজাহারবহির্ভূত পলাতক আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার, কোনো হুকুমদাতা থাকলে তাদের শনাক্ত করা এবং কী কারণে এরকম নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সেসব তথ্য জানার জন্য আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন তদন্ত কর্মকর্তা। রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান (হিরণ) জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন।
শুনানিতে তিনি বলেন, আবরার হত্যা মামলা দেশবাসীর বিবেককে নাড়া দিয়েছে। বিশ্ব তাকিয়ে আছে এ মামলার কী বিচার হয়। আসামিরা এজাহারভুক্ত। আবরার মেধাবী ছাত্র। বুয়েট থেকে বিশ্বমানের ইঞ্জিনিয়ার হয়ে গ্রামে ফিরে গিয়ে সে তার বাবা-মায়ের মুখ উজ্জল করবে। কিন্তু বিনা কারণে নির্মমভাবে পিটিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।
উভয়পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে আদালত আসামিদের কাছে কিছু বলার আছে কি না জানতে চান। তবে আসামিরা কোন কথা বলেননি। এরপর আদালত আসামিদের ৫ দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির লালবাগ জোনের পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান। শুনানি শেষে আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি থেকে অচেতন অবস্থায় আবরার ফাহাদকে উদ্ধার করা হয়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই রাতে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরার ফাহাদকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন বেদম পেটায়।
এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে সোমবার সন্ধ্যায় চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা বরকতুল্লাহ। আবরারের বাবার করা হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ২০ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, তার মধ্যে ইফতিসহ ১৯ জন এজাহারভুক্ত আসামি।




Discussion about this post