কুবি প্রতিনিধিঃ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বেপরোয়া নেতাকর্মীদের হাতে বেধড়ক মারধরের শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাব্রী সাবেরিন গালিব। বেপরোয়া এসব ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পূর্বেও শিক্ষক, সাংবাদিক লাঞ্ছনাসহ বিভিন্ন সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও নিজ দলীয় নেতাকর্মীদেরও মারধরের অভিযোগ রয়েছে । তাদের এই উৎশৃঙ্খল ও বেপরোয়া হওয়ার কারণ হিসেবে শাখা ছাত্রলীগের নেতাদের প্রশ্রয় বলে দাবি করছেন সাংবাদিক নেতারা ।
জানা যায়, শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শেষে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বজন বরণ বিশ্বাসের কক্ষ ভাংচুর করতে কাজী নজরুল ইসলাম হলে যায় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সমর্থকেরা । এসময় ঐ হলে আইন বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাব্রী সাবেরিন গালিব পেশাগত কাজে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ ইসলাম গল্প, সহ-সভাপতি দ্বীন ইসলাম লিখন, উপ সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদক (বহিস্কৃত), মুনতাসির আহমেদ হৃদয়সহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী বেধড়ক মারধর করে এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে যায়।
পরে ঐ সাংবাদিককে ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিকরা উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। মারধরের শিকার সাংবাদিক এখন মেডিকেলে ভর্তি আছেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বিশ্রামে থাকতে বলেছেন।মারধরের শিকার সাংবাদিক বলেন, ‘আমি পেশাগত দ্বায়িত্ব পালন করতে গেলে আমাকে ৮-১০ জন একসাথে বেধরক মারধর করে। তখন আমি তাদের সাংবাদিক পরিচয়ও দিয়েছি। কিন্তু এটা বলাতে আরও মারধর করে। মাথায়, পিঠে, পেটে, বুকে কিল ঘুষি দেয়। আমার ফোনটিও কেড়ে নেয়।’
এর আগেও গত বছরের ২৬ জানুয়ারি বায়েজিদ ইসলাম গল্পকে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক নাহিদুল ইসলামকে স্বস্ত্রীক লাঞ্ছিত করার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত বছরের ১৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে দ্বীন ইসলাম লিখনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।এরপরেও গত ২২ নভেম্বর ১৬১ সদস্য বিশিষ্ট শাখা ছাত্রলীগের কমিটিতে দ্বীন ইসলাম লিখনকে সহ-সভাপতি করা হয়। অভিযুক্তরা সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদের সমর্থিত নেতাকর্মী।
এ বিষয়ে কথা বলতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে জেনেছি, এ ঘটনায় যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।’
সাংবাদিককে মারধরের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ বলেন, ‘প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে । সাংবাদিক সমিতি এ ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেছে। বিচারের জন্য সমিতি কঠোর অবস্থানে যেতেও প্রস্তুত রয়েছে।’
ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন প্রক্টরিয়াল বডিসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি বলেন, ‘এঘটনা কোনভাবেই কাম্য নয়। অভিযোগের পরে সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
Discussion about this post