
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ফেসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তাঁকে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকায় শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঐ পোস্টে শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তার প্রমাণ আছে বলেও দাবি করেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
যুক্তরাষ্ট্রে তার সম্পর্কে তথ্য পেতে এফবিআই কর্মকর্তাকে ঘুষ দেওয়ার অপরাধে এক বিএনপি নেতার ছেলের কারাদণ্ডের মামলা থেকেই ওই সব ‘প্রমাণ’ এসেছে বলে এক ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন তিনি।
গতকাল শনিবার (১৬ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর ইস্কাটনের বাসা থেকে বিএনপিঘনিষ্ঠ প্রবীণ এই সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের পর রাতে ওই পোস্ট দেন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা জয়।
এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে জয়কে অপহরণের চক্রান্তের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের অনুমতিতে শফিক রেহমানকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সজীব ওয়াজেদ জয় বলছেন, তার মা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে থাকায় এবং তাকে তিনি সহযোগিতা করায় এখন ঝুঁকির মধ্যে আছেন তিনি।
ফেইসবুকে জয় লিখেছেন, “কত হরহামেশা আপনি এমন কোন লোককে পাবেন যে আপনাকে হত্যার চেষ্টা করছে? আমার ক্ষেত্রে আপাতদৃষ্টিতে আমার জানার বাইরেও এটা প্রায়শই হচ্ছে। আমি অপরাধী বা কোন খারাপ মানুষও নই যে এমনটা হবে।
“এটা শুধু এজন্য ঘটছে যে আমার মা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আছেন এবং আমি সময়ে সময়ে তাকে সাহায্য করি। এটা এজন্যও যে আমাদের বিরোধী দল যারা বিশেষত সহিংস অপরাধমূলক কাজে নিমজ্জিত এবং দেশের শীর্ষ মৌলবাদী দল যারা সরাসরি আইএসআইএসের সাথে যুক্ত তাদের সাথে জোটভুক্ত।”
এরপর শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি লিখেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রে আমাকে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে সিনিয়র সাংবাদিক ও বিএনপি নেতা শফিক রেহমানকে আজ আমাদের সরকার গ্রেপ্তার করেছে। একজন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতার ছেলে, একজন সাবেক এফবিআই এজেন্ট এবং এই দুজনের অন্য একজন আমেরিকান বন্ধু- এরা সবাই এই ষড়য্ন্ত্রের কারণে সাজা ভোগ করছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের প্রেস রিলিজ থেকে এই মামলার বিষয়ে সরাসরি জানা যাবে জানিয়ে একটি লিঙ্ক শেয়ার করেছেন জয়।
সেখানে ‘খ্যাতিমান’ অংশটির বিষয়ে নিশ্চিত না হলেও ‘বাংলাদেশের নাগরিক’ বলতে তাকেই বোঝানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন জয়।
শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে ‘প্রমাণাদি’ সরাসরি এই মামলা থেকে এসেছে দাবি করে তিনি বলেন, “লক্ষ করুন, আমি সাংবাদিক শব্দটি উদ্ধৃত করেছি কারণ যখন আপনি অপহরণ ও হত্যার চেষ্টায় যুক্ত হবেন তখন আমার বিশ্বাস, আপনি আপনার পেশার ধরণ পরিবর্তন করে সাংবাদিক থেকে অপরাধী হয়ে গিয়েছেন।
“বিএনপি এসব কাজের জন্য একটি মধ্যবর্তী পেশার কার্যধারা পরিচালনা করে।”
জয় সম্পর্কে তথ্য পেতে এফবিআই এজেন্টকে ঘুষ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে কারাভোগ করছেন রিজভী আহমেদ সিজার।
বাংলাদেশি এক রাজনীতিকের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সংরক্ষিত তথ্য পেতে এফবিআইয়ের এক সদস্যকে ঘুষ দেওয়ায় ২০১৫ সালে সিজারের কারাদণ্ড হয়।
ওই রাজনীতিকের নাম মার্কিন আদালতের নথিপত্রে উহ্য রাখা হলেও যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী জয়ই ওই বাংলাদেশের ওই রাজনীতিক বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। জয় নিজেও ফেইসবুকে নিজের প্রাণহানির সংশয়ের কথা লেখেন।
এফবিআই সদস্যকে ঘুষ দিয়ে জয় সম্পর্কে যে তথ্য পেয়েছিলেন তা বাংলাদেশি এক সাংবাদিক, এক রাজনৈতিক মিত্র ও একজন প্রাইভেট গোয়েন্দাকে দিয়ে বিনিময়ে সিজার প্রায় ৩০ হাজার ডলার নিয়েছিলেন বলেও এতে বলা হয়েছিল।




Discussion about this post