বরগুনা প্রতিনিধি: স্ত্রীর সামনে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ ছেলের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি করে বলেন, বাবা মারা গেলে ছেলে এতিম হয়, আমি এতিম হয়ে গেছি। আমার একমাত্র ছেলেকে কীভাবে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে তা পুরো বিশ্ববাসী দেখেছে। আমার ছেলে সকালে তার মায়ের কাছ থেকে পাঁচশ টাকা নিয়ে বেড়িয়ে লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরেছে। কিন্তু আমার ছেলের হত্যাকারীদের পুলিশ এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি।
আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টন্তমূলক শাস্তির দাবিতে বরগুনা প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে ‘বরগুনার সর্বস্তরের জনগণ’ এর ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন শেষে বরগুনা জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে নানা শ্রেণি-পেশার তিন সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে।
সমাবেশে জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীসহ অন্যরা বরগুনায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। তাদের নামে মাদক ব্যসবা ও সন্ত্রসী কার্যক্রমের অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় পুলিশ তাদের অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে। এরা কাদের প্রশ্রয়ে বরগুনায় এ রকম একটি নির্মম হত্যাকাণ্ডসহ মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিল, সেইসব প্রশ্রয়দাতাদেরও খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জন্য আইনসৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি। এছাড়াও দুলাল শরীফের একমাত্র ছেলে রিফাত শরীফের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের আদনান অনিক বলেন, রিফাত হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ডের মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম নিয়ে বরগুনা প্রেসক্লাবে গত বছরে ২৮ এপ্রিল দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ। এই সংবাদ সম্মেলনের সংবাদ দেশের প্রধান প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরও নয়নের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার খবর আমরা পাইনি। বরং একাধিক মামলা ও ছাত্রলীগের সংবাদ সম্মেলনের পরও নয়ন বরগুনায় বীরদর্পে ঘুরে বেড়িয়েছে।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন নিহত রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ, জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রইসুল আলম রিপন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দীন সাবু, জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুনাম দেবনাথ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জুবায়ের আদনান অনিক প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এ/কে




Discussion about this post