নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ভ্রমণ পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ। এই আকর্ষণীয় স্থানটিতে এখন থেকে আর ইচ্ছা করলে যখন তখন যেতে পারবেন না। সেন্টমার্টিনে যেতে হলে আগে থেকেই অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। এছাড়া এ প্রবাল দ্বীপে প্রতিদিন কতজন যেতে পারবেন তাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এই নতুন নিয়মে প্রতিদিনে মাত্র ১২৫০ জন পর্যটক সেন্টমার্টিনে যেতে পারবেন। এমনকি এই প্রবাল দ্বীপের অস্তিত্ব রক্ষা ও পরিবেশ সংরক্ষণে রাত্রিযাপনের ওপরও বিধি নিষেধ আরোপ করা হতে পারে। গণমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সুলতান আহমদ।
মঙ্গলবার কক্সবাজারে পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘কক্সবাজারের পরিবেশ ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন দেশের বড় সম্পদ। প্রকৃতি পরিবেশ সুরক্ষা করা সম্ভব না হলে অচিরেই সেন্টমার্টিনের পরিবেশ ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। এসব বিষয় মাথায় রেখে সেন্টমার্টিন নিয়ে আরও নতুন নতুন এ্যাকশন প্ল্যান নেয়া হচ্ছে বলেও জানান ড. সুলতান আহমদ।
সেমিনারে বলা হয়, ইসিএ এলাকা হিসেবে বর্তমানে সেন্টমার্টিন, সোনাদিয়া ও সমুদ্র সৈকত এখন পরিবেশগত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ জন্য মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে উন্নয়ন কাজ করে ফিরিয়ে আনতে হবে আগের পরিবেশ। পরিকল্পনা ছাড়া স্থাপনা গড়ে ওঠায় দূষণের কবলে পড়েছে হোটেল মোটেল জোন। ৩২৫টি হোটেলের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়েছে মাত্র ৪৮টি। স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান (এসটিপি) বাস্তবায়ন করেছে মাত্র ৬টি হোটেল। কক্সবাজারে প্রতিদিন কঠিন ও তরল বর্জ্য সৃষ্টি হয় ৫০ থেকে ৭০ টন। ১২ টন বর্জ্য শোধনাগারের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু শোধনাগারে বর্জ্য আসে মাত্র ২ টন।
সেমিনারে বলা হয়, দিন দিন স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এখানে পানি ব্যবহারের চেয়ে অপচয় হয় বেশি। পাহাড় কাটার মাটি, হ্যাচারির বর্জ্য ও হোটেল মোটেলের বর্জ্য সরাসরি যাচ্ছে সাগর ও নদীতে। বাঁকখালী নদী ভরাট, দখল হওয়ার কারণে শহরের লবণাক্ত পানি বেড়ে গেছে।
সেমিনারে আরও বলা হয়, এসব নানা দূষণের কারণে কক্সবাজারে পর্যটক আসা হ্রাস পাবে এবং স্থানীয়দের জন্যও বসবাস অনুপযোগী হবে। কক্সবাজারের পরিবেশ সুরক্ষার এসময় এখনো ফুরিয়ে যায়নি। তবে দেরি করা যাবে না। দ্রুত উদ্যোগ নেয়া দরকার। এজন্য সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (মানব সম্পদ উন্নয়ন) এসএম সরওয়ার কামালের সভাপতিত্বে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি লে. কর্নেল আনোয়ারুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবেদিল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ও রিও প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ জিয়াউল হকসহ অনেকে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: ইউএনবি




Discussion about this post