Thursday, July 3, 2025
  • Login
No Result
View All Result
Home
BDLAWNEWS.COM
  • বাংলাদেশ
    • খুলনা
    • চট্টগ্রাম
    • ঢাকা
    • বরিশাল
    • ময়মনসিংহ
    • রংপুর
    • সিলেট
    • রাজশাহী
  • জাতীয়
    • দেশ জুড়ে
    • রাজনীতি
    • অনিয়ম
    • দেশ ও দশ
    • একাদশ নির্বাচন
  • আন্তর্জাতিক
  • আইন আদালত
    • উচ্চ আদালত
    • কোর্ট প্রাঙ্গণ
    • আইন সংস্থা
    • যুগান্তকারী রায়
    • আইনী ভিডিও
  • আইন পড়াশুনা
    • দৈনন্দিন জীবনে আইন
    • গুণীজন
    • মতামত
    • আইন জিজ্ঞাসা
    • ইংরেজি
    • ব্লগ
  • আইন চাকুরী
  • সকল বিভাগ
    • ’ল’ ক্যাম্পাস
    • সাক্ষাৎকার
    • সাহিত্য
    • মানবাধিকার
    • খেলাধুলা
    • বিনোদন
    • খেলাধুলায় আইন
    • একাদশ নির্বাচন
    • আইন জিজ্ঞাসা
    • যুগান্তকারী রায়
    • আইন সংস্থা
    • দেশ ও দশ
    • সদ্যপ্রাপ্ত
    • সর্বশেষ সংবাদ
  • বাংলাদেশ
    • খুলনা
    • চট্টগ্রাম
    • ঢাকা
    • বরিশাল
    • ময়মনসিংহ
    • রংপুর
    • সিলেট
    • রাজশাহী
  • জাতীয়
    • দেশ জুড়ে
    • রাজনীতি
    • অনিয়ম
    • দেশ ও দশ
    • একাদশ নির্বাচন
  • আন্তর্জাতিক
  • আইন আদালত
    • উচ্চ আদালত
    • কোর্ট প্রাঙ্গণ
    • আইন সংস্থা
    • যুগান্তকারী রায়
    • আইনী ভিডিও
  • আইন পড়াশুনা
    • দৈনন্দিন জীবনে আইন
    • গুণীজন
    • মতামত
    • আইন জিজ্ঞাসা
    • ইংরেজি
    • ব্লগ
  • আইন চাকুরী
  • সকল বিভাগ
    • ’ল’ ক্যাম্পাস
    • সাক্ষাৎকার
    • সাহিত্য
    • মানবাধিকার
    • খেলাধুলা
    • বিনোদন
    • খেলাধুলায় আইন
    • একাদশ নির্বাচন
    • আইন জিজ্ঞাসা
    • যুগান্তকারী রায়
    • আইন সংস্থা
    • দেশ ও দশ
    • সদ্যপ্রাপ্ত
    • সর্বশেষ সংবাদ
No Result
View All Result
BDLAWNEWS.COM
No Result
View All Result
Home আইন পড়াশুনা
উত্তরাধিকার আইন এবং উত্তরাধিকারের বিশেষ আইনসমূহ ও ধারা

উত্তরাধিকার আইন এবং উত্তরাধিকারের বিশেষ আইনসমূহ ও ধারা

by প্রতিবেদক : বার্তা কক্ষ
September 1, 2020
in আইন পড়াশুনা, সদ্যপ্রাপ্ত, সর্বশেষ সংবাদ
0
A A
0
1.8k
VIEWS
Facebook

উত্তরাধিকার আইন

উত্তরাধিকার আইন ও মুসলিম আইনে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা অংশীদারগণ যে ওয়ারিশেরা সম্পত্তি পাওয়ার অধিকারী তারাই অংশীদার। তাদের তালিকা এবং মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে তাদের স্ব স্ব পরিমাণ অংশ কুরআনে আল্লাহপাক নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। এ জন্য এদেরকে জুল কুরআন বা কুরানী ওয়ারিশ বলা হয়। মূলত কোরআনের নির্দেশ, হাদিসের ব্যাখ্যায় এবং ইজমার সমর্থনে তাদের অংশ নির্ধারিত হয়েছে।অন্য সবার উপর তাদের অবস্থান হলেও তারা কোন সুবিধাভোগী শ্রেণী নয়; কারণ তারা খুবই ছোট বা সামান্য অংশ পেয়ে থাকেন। এই অংশীদারদের সংখ্যা ১২ জন; এরা বিবাহ সিদ্ধজাত এবং রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়। তার মধ্যে চারজন পুরুষ এবং আটজন মহিলা। মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বন্টনের ক্ষেত্রে অন্য সব উত্তরাধিকারীদের মধ্যে অগ্রাধিকার পান এবং তাদের অংশ রেখে পরে অন্যান্যদেরকে সম্পত্তি প্রদান করা হয়।

উত্তরাধিকার আইন
                                                           উত্তরাধিকার আইন

পুরুষ চার জন হলো:
(১) পিতা ( ২) দাদা বা তদুর্ধ (৩) স্বামী ( ৪) বৈপিত্রেয় ভাই
মহিলা আটজন হলো:
(১) স্ত্রী (২) মাতা ( ৩) কন্যা (৪) সহোদরা বোন (৫) বৈমাত্রেয়া বোন (৬) বৈপিত্রেয়া বোন (৭) কন্যা ও (৮) দাদী তাদের মধ্যে পিতা, স্বামী, মাতা, কন্যা ও স্ত্রী এই পাঁচজন কখনো উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়না। তাই তাদেরকে প্রতক্ষ্য অংশীদার বলা হয় এবং বাকীদেরকে পরোক্ষ অংশীদার বলা হয়। কারণ তারা কোন কোন ক্ষেত্রে উত্তরাধিকার হতে বঞ্চিত হয়।

তাছাড়া

অবশিষ্টাংশ ভোগীগণ মৃত ব্যক্তির যাদের সাথে রক্তের সম্পর্ক আছে এবং যারা অংশীদারদের নির্দিষ্ট অংশ নেবার পর কোন সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকলে তা অথবা কোন অংশীদার না থাকলে সমস্ত সম্পত্তি মৃত ব্যক্তির সাথে রক্তের সম্পর্ক আছে এমন সমস্ত নিকটবর্তী আত্নীয়র তালিকায় উল্লেখিত ক্রমানুসারে লাভ করে থাকে। মৃত ব্যক্তির এ সকল নিকটত্নীয়দেরকে অবশিষ্টাংশভোগী বলা হয়। এই অবশিষ্টংশ ভোগীদের কোন নির্দিষ্ট অংশ নাই। অংশীদারদের দেওয়ার পরেই কেবল অবশিষ্ট সম্পত্তি তারা পাবেন, কিন্তু এই অবশিষ্টাংশের পরিমাণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম হতে পারে। যদি কোন অংশীদার না থাকেন, তবে সমস্ত সম্পত্তিই আসাবা বা অংশীদারগণ পাবেন। এ সকল আসাবা বা অবশিষ্টাংশ ভোগীগণকে এগনেটিক ওয়ারিশ ও বলা হয়। কারণ এরা পুরুষ আত্নীয়ের মাধ্যমেই ওয়ারিশ হয়ে থাকে।

মুসলিম আইনে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি উত্তরাধিকারীরা কে কিভাবে পাবেন ?

উত্তরাধিকার আইন
                                                উত্তরাধিকার আইন

একজন মুসলমান যদি মারা যায় তবে তাঁর সম্পত্তি বন্টনের আগে কিছু বিষয়ে তাঁর আত্মীয় স্বজনদের বিশেষ মনোযোগ রাখতে হয় এবং ঐ সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেই কেবল মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারা করা যাবে।

একজন মুসলমানের মৃত্যুর পর তাঁর সম্পত্তি ভাগের আগে যা করনীয়ঃ

(১) যদি মৃত ব্যক্তির পর্যাপ্ত সম্পত্তি থাকে তবে তাঁর সম্পত্তি থেকে তাঁর দাফন কাফনের ব্যবস্থা করা।
(২) মৃত ব্যক্তির কোন প্রকারের ঋণ কিংবা ধার দেনা থাকলে তা ঐ ব্যক্তির সম্পদ থেকে পরিশোধ করার ব্যবস্থা করা।
(৩) মৃত ব্যক্তির স্ত্রীর দেনমোহোর পরিশোধ হয়েছে কিনা দেখা যদি না হয়ে থাকে তা পরিশোধ করা।
(৪) মৃত ব্যক্তি যদি কোন হেবা বা দান কিংবা অসিয়ত করে যান তবে উল্লেখিত সম্পত্তি দান করে দেয়া।
যদি উপরের কাজ সমূহ করার পরে মৃত ব্যক্তির কোন সম্পদ-সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকে তবে অবশিষ্ট সম্পত্তি তাঁর উত্তরাধিকারীদের মাঝে বন্টন করতে হবে। তবে বন্টনের ক্ষেত্রে মুসলিম আইন অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট পরিমাণ উল্লেখ আছে।

মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি তাঁর উত্তরাধিকারীরা কে কি পরিমাণ অংশ পাবেনঃ
স্বামী:-স্বামী দুই ভাবে স্ত্রীর উপরে সম্পত্তি পাবে,
যদি মৃত ব্যক্তির সন্তান-সন্ততি থাকে তবে স্বামী পাবে এক চতুর্থাংশ।
যদি মৃত ব্যক্তির সন্তান-সন্ততি না থাকে তবে স্বামী পাবে অর্ধেক সম্পত্তি।

স্ত্রীঃ মৃত ব্যক্তির স্ত্রী স্বামীর সম্পত্তি দুইভাবে পাবেন-
যদি মৃত ব্যক্তির এবং তাঁর স্ত্রীর সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকে তবে স্ত্রী স্বামীর সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ (১/৮) পাবেন।
যদি মৃত ব্যক্তি এবং তাঁর স্ত্রীর সংসারে কোন সন্তান না থাকে তাহলে স্ত্রী মোট সম্পত্তির চার ভাগের এক ভাগ (১/৪) পাবেন।
পুত্রঃ ছেলেরা মৃতের উপরে সকল ক্ষেত্রেই সম্পত্তি পেয়ে থাকে, মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির ক্ষেত্রে সকলের অংশ ভাগের পর অবশিষ্ট সকল অংশ ছেলে এবং মেয়ে পাবে।

তবে,

এই ক্ষেত্রে ছেলে সম্পদে যে পরিমাণ অংশ পায় মেয়েরা সম্পদের উপরে ছেলের অর্ধেক পরিমাণ পাবে।
যদি মেয়ে না থাকে তবে বাকী অংশ ছেলে পাবে।
মেয়েঃ মুসলিম সম্পত্তি আইন অনুযায়ী একজন মেয়ে ৩ নিয়মে মৃতের সম্পদ পেয়ে থাকে।
যদি একজন মেয়ে হয় তবে দুইভাগের একভাগ (১/২) পাবে।
যদি একাধিক মেয়ে হয় তবে সবাইকে তিন ভাগের দুই ভাগ (২/৩) দেয়া হবে।
যদি মৃত ব্যক্তির ছেলে মেয়ে উভয়েই থাকে তবে ছেলে যে পরিমাণ পাবে মেয়ে তাঁর অর্ধেক পাবে।
বাবাঃ মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি উপর তাঁর বাবা ৩ প্রকারে সম্পত্তি পাবেন,

যদি মৃত ব্যক্তির পুত্র, পুত্রের পুত্র কিংবা আরও নিচে পুত্রের পুত্রের পুত্র যত নিচেই হোক না কেন থাকে তবে মৃত ব্যক্তির পিতা পাবেন সম্পত্তি ছয় ভাগের এক ভাগ (১/৬)।
যদি মৃত ব্যক্তির কোন পুত্র কিংবা নিন্মগামী পুত্র না থাকে কেবল কন্যা থাকে তবে ছয় ভাগের এক ভাগ ( ১/৬) পাবেন এবং কন্যাদের ও অন্যান্যদের দেয়ার পর যে সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকবে তাও পাবেন।
যদি মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান না থাকে তবে বাদ বাকী অংশীদারদের দেয়ার পর সকল সম্পত্তি বাবা পাবেন। মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান না থাকলে যদি বাবাও না থাকে তবে তাঁর জীবিত ভাই পাবে, ভাই না থাকলে ভাইয়ের সন্তান পাবে।
মাতাঃ মৃত ব্যক্তির মা তিন ভাবে সম্পত্তি পাবেন।

যদি মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি, যত নিম্নেরই হউক, থাকলে অথবা যদি পূর্ণ, বৈমাত্রেয় বা বৈপিত্রেয় ভাই বা বোন থাকে তবে মাতা ছয় ভাগের এক ভাগ ( ১/৬) পাবেন।
যদি মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি, যত নিম্নের হউক না থাকে এবং যদি একজনের বেশি ভাই বা বোন না থাকে তবে মাতা তিন ভাগের এক ভাগ ( ১/৩) পাবেন।
যদি মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি, যত নিম্নের হউক না থাকে অথবা কমপক্ষে দুইজন ভাইবোন না থাকে এবং যদি মৃত ব্যক্তির স্বামী বা স্ত্রী অংশ দেয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকবে তার তিন ভাগের এক ভাগ ( ১/৩) মাতা পাবেন।

উত্তরাধিকার আইন ও মুসলিম আইনের কিছু সাধারণ বিষয়ঃ-

উত্তরাধিকার আইন
                                                                    উত্তরাধিকার আইন

অনেকেই ভাবেন পিতার সম্পত্তি সন্তানকে বঞ্চিত করতে ত্যাজ্য করা যায় অর্থাৎ ত্যাজ্য করলে সন্তান সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবে, কিন্তু বিষয়টি ঠিক নয় কেউ চাইলে কাউকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে ত্যাজ্য করতে পারবেনা।আবার অনেক ক্ষেত্রে সৎ ছেলে মেয়ের বিষয়টি আসে, কিন্তু ইসলামে পরিষ্কার বলা আছে সৎ ছেলে মেয়ে কখনোই সৎ বাবা মায়ের সম্পত্তির অংশীদার হবেনা একই সাথে সৎ বাবা মাও সৎ ছেলে মেয়ের সম্পত্তির অংশীদার হবেনা।ইসলামিক সরিয়া আইনে বলা আছে যদি পিতা বেঁচে থাকতে কোন বিবাহিত সন্তান, স্ত্রী রেখে মারা যায় তবে ঐ পিতার মৃত্যুর পর পিতার বর্তমানে মৃত সন্তান কোন সম্পত্তি পাবেনা, কিন্তু ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশে উত্তরাধিকার সংক্রান- বিধান সংশোধন করে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বিবাহিত মৃত পুত্রের ওয়ারিশরা অংশ পাবে এই বিধান সংযুক্ত করা হয়।

মুসলিম আইনে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে নারী উত্তরাধিকারীরা কে কি পরিমাণ অংশ পাবেনঃ-
মুসলিম উত্তরাধিকার আইন একজন ব্যক্তির সকল উত্তরাধিকারীকেই তার সম্পত্তির অধিকার প্রদান করেছে। মুসলিম আইনে সন্তানের উত্তরাধিকার আইন জন্মসূত্রেই সুস্পষ্ট, যা কোনোভাবেই খর্ব করা যায় না। সাধারণত মুসলিম আইন অনুযায়ী পিতা-মাতার কাছে তার সন্তান প্রাধান্য পাবে এটাই স্বাভাবিক, পিতা-মাতা ছাড়াও অন্য সম্পর্ক থেকেও নারীরা সম্পত্তির ভাগ পেয়ে থাকে এবং মুসলিম আইনে তাদের উত্তরাধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত। মুসলিম আইনে রক্তের সম্পর্কিত এবং বিয়ের মাধ্যমেই উত্তরাধিকার সৃষ্টি হয়।

মুসলিম উত্তরাধিকার আইনঃ-

মুসলিম আইন
মুসলিম উত্তরাধিকার আইন

একজন মুসলিম নারী বা পুরুষের মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে মৃতের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার পর, তার দেনাশোধ বা তিনি যদি কোনো উইল সম্পাদন করেন তা হস্তান্তরের পর যে সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকে সে সম্পত্তির ওপর তার সন্তানাদি ও আত্মীয় স্বজনের যে অধিকার তাই উত্তরাধিকার আইন। এর মানে, ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী কোন মুসলমান মারা গেলে তার ফেলে যাওয়া সম্পত্তি বা ত্যাজ্য সম্পত্তি কিভাবে কাদের মধ্যে বন্টন করা হবে সে সম্পকির্ত বিধানকে মুসলিম উত্তরাধিকার বা ফারায়েজ বলে। একজন ব্যক্তি মৃত্যু বরণ করলেই উত্তরাধিকার আইন কার্যকর হয়।

মুসলিম আইনে সাধারণ তিন শ্রেণির উত্তরাধিকার আছে–

(১) কোরানিক অংশীদারগণ, ( ২) অবশিষ্টাংশ ভোগীগণ ও ( ৩) দূরবর্তী আত্মীয়স্বজনগণ।
কোরানিক অংশীদারঃ এ অংশীদারদের তালিকা এবং স্ব স্ব অংশের পরিমাণ পবিত্র কোরআন কর্তৃক নির্ধারিত। তাদের চার জন পুরষ, আর আটজন নারী।
এই আটজন নারীরা হলেনঃ মাতা, পিতা বা মাতার মাতা, স্ত্রী, কন্যা, পুত্রের কন্যা, আপন বোন, বিমাতা বোন, বৈপিত্রেয় বোন। তাহাদের মধ্যে স্ত্রী, মাতা, কন্যা এ তিনজন কখনো উত্তরাধিকার হতে বঞ্চিত হয় না। তাই তাদেরকে প্রতক্ষ্য অংশীদার বলা হয়।
অবশিষ্টাংশ ভোগীগণঃ মৃত ব্যক্তির যাদের সাথে রক্তের সম্পর্ক আছে এবং যারা অংশীদারদের নির্দিষ্ট অংশ নেবার পর কোন সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকলে তা অথবা কোন অংশীদার না থাকলে সমস্ত সম্পত্তি মৃত ব্যক্তির সাথে রক্তের সম্পর্ক আছে এমন সমস্ত নিকটবর্তী আত্নীয়রা তালিকায় উল্লেখিত ক্রমানুসারে লাভ করে থাকে।

মৃত ব্যক্তির এ সকল নিকটত্নীয়দেরকে অবশিষ্টাংশভোগী বলা হয়। এই অবশিষ্টংশ ভোগীদের কোন নির্দিষ্ট অংশ নাই। অংশীদারদের দেওয়ার পরেই কেবল অবশিষ্ট সম্পত্তি তারা পাবেন, কিন্তু এই অবশিষ্টাংশের পরিমাণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম হতে পারে। যদি কোন অংশীদার না থাকেন, তবে সমস্ত সম্পত্তিই আসাবা বা অংশীদারগণ পাবেন। এ সকল আসাবা বা অবশিষ্টাংশ ভোগীগণকে এগনেটিক ওয়ারিশ ও বলা হয়। কারণ এরা পুরুষ আত্নীয়ের মাধ্যমেই ওয়ারিশ হয়ে থাকে।দূরবর্তী আত্নীয়গণঃ মৃত ব্যক্তির অংশীদার এবং অবশিষ্টাঅংশভোগী না থাকলেই এরা সম্পত্তি পাবে।

মুসলিম আইনে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে নারী উত্তরাধিকারীরা কে কি পরিমাণ অংশ পাবেনঃ

মৃত ব্যক্তি (স্বামীর) সম্পত্তিতে বিধবা স্ত্রীর অধিকার:

মুসলিম উত্তরাধিকার আইন
                                                 বিধবা স্ত্রীর অধিকার

মৃত ব্যক্তির স্ত্রী একজন থাকুক আর একাধিক থাকুক তাদের সম্পত্তি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দুটি অবস্থা উল্লেখ করা যায়; যথা-(১) মৃত ব্যক্তির সন্তান সন্ততি বা তার নীচে কেউ না থাকলে স্ত্রী ১/৪ অংশ পাবে।

(২) অপরদিকে মৃত ব্যক্তির সন্তান সন্ততি বর্তমান থাকলে সেক্ষেত্রে স্ত্রী ১/৮ অংশ পাবে।আর যদি মৃত ব্যক্তির একাধিক বিধবা স্ত্রী থাকে, তবে সব বিধবা স্ত্রীরাই উপরোক্ত ১/৪ বা ১/৮ অংশ হতে যেরকমই হয়, সমান হারে তাদের অংশ ভাগ করে পাবে।স্বামী পীড়িত অবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দিলে উক্ত তালাকী স্ত্রীর ইদ্দত কাল এর মধ্যে স্বামী মারা গেলে তালাকী স্ত্রী স্বামীর ওয়ারিশ হবে। কিন্তু স্বামী একইভাবে স্ত্রীর উত্তরাধিকারী হতে পারবেনা।

মৃত ব্যক্তি (পিতার) সম্পত্তিতে কন্যার অধিকারঃ

মুসলিম উত্তরাধিকার আইন মৃত ব্যক্তির ঔরশজাত কন্যার অংশ বন্টনের ক্ষেত্রে তিন অবস্থায় অংশ বন্টন করা হয়।যেমন-(১) মৃত ব্যক্তির কন্যা একজন থাকলে এবং পুত্র না থাকলে সে ১/২ (অর্ধেক) ভাগ সম্পত্তি পাবে।(২) দুই বা ততোধিক কন্যা থাকলে এবং কোন পুত্র না থাকলে তারা ২/৩ (তিন ভাগের দুই) ভাগ সমানভাগ পাবে।(৩) মৃত ব্যক্তির পুত্র থাকলে কন্যা/কন্যারা অংশীদার হিসেবে সম্পত্তি না পেয়ে পুত্রের সাথে ২:১ অনুপাতে অর্থাৎ অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে পুত্র যা পাবে কন্যা তার অর্ধেক পাবে। কন্যা কখনো পিতা/মাতার সম্পত্তি হতে বঞ্চিত হয়না।

মৃত ব্যক্তি (সন্তানের) সম্পত্তিতে মাতার অধিকারঃ

মৃত ব্যক্তির মা তিন ভাবে সম্পত্তি পাবেন
যদি মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি, যত নিম্নেরই হউক, থাকলে অথবা যদি পূর্ণ, বৈমাত্রেয় বা বৈপিত্রেয় ভাই বা বোন থাকে তবে মাতা ছয় ভাগের এক ভাগ ( ১/৬) পাবেন।যদি মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি, যত নিম্নের হউক না থাকে এবং যদি একজনের বেশি ভাই বা বোন না থাকে তবে মাতা তিন ভাগের এক ভাগ ( ১/৩) পাবেন।যদি মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি, যত নিম্নের হউক না থাকে অথবা কমপক্ষে দুইজন ভাইবোন না থাকে এবং যদি মৃত ব্যক্তির স্বামী বা স্ত্রী অংশ দেয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকবে তার তিন ভাগের এক ভাগ (১/৩) মাতা পাবেন।

মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে তার প্রকৃত মাতামহী/পিতামহী (নানী/দাদী) এর অধিকারঃ

উত্তরাধিকার লাভের ক্ষেত্রে নানী/দাদীর তিনটি অবস্থা লক্ষ্য করা যায়:

(১)মৃত ব্যক্তির মাতা, নিকটতম প্রকৃত মাতামহী কিংবা নিকটতম প্রকৃত পিতামহী না থাকলে নানী ১/৬ অংশ সম্পত্তি লাভ করেন।(২) মৃত ব্যক্তির মাতা, পিতা, নিকটতম প্রকৃত মাতামহী কিংবা নিকটতম প্রকৃত পিতামহী না থাকলে দাদী ১/৬ অংশ সম্পত্তি লাভ করেন।(৩) দাদী ও নানী উভয়েই থাকরে তারা একত্রে ১/৬ অংশ সমান পাবেন। প্রকৃত পিতামহী হলেন এমন একজন পূর্বনারী যার এবং মৃত ব্যক্তির মধ্যে মাতৃ সম্পর্কীয় কোন পিতামহ মধ্যবর্তী হননা।যেমন: পিতার মাতা, পিতার মাতার মাতা, পিতার পিতার মাতা, মাতার মাতা মাতার মাতার মাতা।

পুত্রের কন্যার অথবা পুত্রের পুত্রের কন্যা অর্থাৎ পোত্রীর অধিকারঃ

পুত্রের কন্যা বা পুত্রের পুত্রের কন্যা যত নিম্নের হোক এর উত্তরাধিকার আইন, ১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ এর ৪ ধারার প্রভাবে পরিবর্তন হয়েছে বিধায় তা মূল মুসলিম হানাফী আইন এবং পরিবর্তিত আইন এই দুই উপ-শিরোনামে আলোচনা করা যায়। মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশ এর ৪ ধারার প্রভাবে এই বঞ্চিত হওয়ার বিধান বাতিল হয়েছে।উক্ত ধারার মূল মুসলিম হানাফী আইনঃ মুল মুসলিম হানাফী আইন অনুসারে পুত্রের কন্যার সম্পত্তি লাভের ক্ষেত্রে চারটি অবস্থা লক্ষ্য করা যায়:

(১) মৃত ব্যক্তির পুত্র বা একাধিক কন্যা থাকলে পুত্রের কন্যা সম্পূর্ণরূপে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।

(২) মৃত ব্যক্তির পুত্র-কন্যা না থাকলে পুত্রের কন্যা একা হলে ১/২ অংশ এবং একাধিক হলে ২/৩ অংশ সম্পত্তি পায়।

(৩) মৃত ব্যক্তির যদি একমাত্র কন্যা তাকে, তবে পুত্রের কন্যা একা বা একাধিক যাই থাকুক একা বা সবাই শুধুমাত্র ১/৬ অংশ পাবে। একাধিক হলে এই ১/৬ অংশ সবাই সমানভাবে পাবে।

(৪) মৃত ব্যক্তির পুত্রের পুত্র থাকলে, পুত্রের কন্যা অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে তার বা তার সাথে ২:১ সম্পত্তি লাভ করবে।

পুত্রের পুত্রের কন্যা যত নিম্নের হোক পুত্রের কন্যার মত পুত্রের পুত্রের কন্যার সম্পত্তি লাভের ক্ষেত্রে ও চারটি অবস্থা লক্ষ্য করা যায়ঃ-

মুসলিম বিবাহ আইন বাংলাদেশ
                                                                        Property

(১) মৃত ব্যক্তির পুত্র বা একাধিক কন্যা বা নিকটতম পুত্রের পুত্র বা নিকটতম পুত্রের পুত্র বা নিকটতম পুত্রের একাধিক কন্যা থাকলে দুরবর্তী পুত্রের কন্যা উত্তরাধিকার হতে সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত হয়।

(২) মৃত ব্যক্তির পুত্র কন্যা বা নিকটতম পুত্রের পুত্র বা নিকটতম পুত্রের কন্যা না থাকলে দূরবর্তী কন্যা একা হলে ১/২ অংশ এবং একত্রে হলে সবাই ২/৩ অংশ পাবে।

(৩) মৃত ব্যক্তির যদি একমাত্র কন্যা বা নিকটতম পুত্রের একমাত্র কন্যা থাকে, তবে দূরবর্তী পুত্রের কন্যা এক বা একাধিক যাই থাকুক, একা বা সবাই একত্রে শুধুমাত্র ১/৬ অংশ পাবে।

(৪) পুত্রের পুত্রের কন্যার সাথে সমান স্তরে পুত্রের পুত্র থাকলে পুত্রের পুত্রের কন্যা অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে তার বা তাদের সাথে ২:১ হারে সম্পত্তি লাভ করবে। একই সাথে পুত্রের পুত্র/পুত্রের কন্যা এবং পুত্রের পুত্রের পুত্র/পুত্রের পুত্রের কন্যা অবস্থান করে তখন প্রথম ব্যক্তি শেষোক্ত ব্যাক্তির তুলনায় মৃত ব্যক্তির নিকটতম পুত্রের পুত্র/পুত্রের কন্যা হিসেবে গন্য করা হয়। একই সাথে যখন পুত্রের পুত্রের পুত্র ও পুত্রের পুত্রের কন্যা অবস্থান করে তখন তাদেরকে সমান স্তরের পুত্রের পুত্রের পুত্র এবং পুত্রের পুত্রের কন্যা হিসেবে উল্লেখ করা যায়।

মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে তার বৈমাত্রেয় বোনের অধিকারঃ

মুসলিম উত্তরাধিকার আইন

মৃত ব্যক্তির বৈমাত্রেয় বোন থাকলে তার অংশ ছয়টি অবস্থায় বন্টন করা হয়ে থাকে।

যেমন –

(১) মৃত ব্যক্তির বৈমাত্রেয় বোন একজন থাকলে সে ১/২ অংশ প্রাপ্ত এবং একাধিক বৈমাত্রেয় বোন একত্রে ২/৩ অংশ সমানভাগে পায়।

(২) মৃত ব্যক্তির বৈমাত্রেয় ভাই বর্তমান থাকলে সেক্ষেত্রে বৈমাত্রেয় বোন তার সাথে অবশিষ্টাংশভোগী বা আসাবা হবে এবং ভাই যত পাবে বোন তার অর্ধেক অংশ পাবে ২:১ হারে সম্পত্তি পায়।

(৩) মৃত ব্যক্তির একজন মাত্র আপন বোন থাকলে বৈমাত্রেয় বোন একজন হোক আর একাধিক হোক সবাই একত্রে ১/৬ অংশ পাবে।

(৪) কিন্তু আপন বোন একাধিক থাকলে বৈমাত্রেয় বোন বঞ্চিত হবে। যেমন: মৃত ব্যক্তি বৈমাত্রেয় বোন আপন বোন চাচা ২/৩ ১/৩

(৫) মৃত ব্যক্তির পুত্র, পুত্রের সন্তান যত নীচের হোক, পিতা অথবা পিতার পিতা অর্থাত্ দাদা, একাধিক আপন ভাই এর উপস্থিতিতে বৈমাত্রেয় বোন উত্তরাধিকার আইন থেকে বঞ্চিত হবে।

(৬) মৃত ব্যক্তির কন্যা বা পুত্রের কন্যা বর্তমান থাকলে তার সাথে অবশিষ্টাংশভোগী হবে এবং অবশিষ্ট সম্পত্তি পাবে।

বৈপিত্রেয় ভাই ও বৈপিত্রেয় বোনের উত্তরাধিকার আইনঃ

বৈপিত্রেয় ভাই/বোন এর উত্তরাধিকারলাভে দুটি অবস্থা লক্ষ্য করা যায়।

(১) মৃত ব্যক্তির পুত্র, কন্যা, পুত্রের পুত্র বা পুত্রের কন্যা ইত্যাদি কেউই বর্তমান না থাকলে ও একজন বৈপিত্রেয় ভাই বা বোন থাকলে ও সে ১/৬ অংশ এবং একাধিক বৈপিত্রেয় ভাই/বোন একত্রে ১/৩ অংশ সমানভাবে পাবে। বৈপিত্রেয় ভাই- বোনেরা সমান অংশ পায়। এক্ষেত্রে ভাই- বোনের অংশের অনুপাত ২:১ না হয়ে ১:১ হবে।

(২) মৃত ব্যক্তির পুত্র, কন্যা, পৌত্র (পুত্রের পুত্র), পৌত্রী (পুত্রের কন্যা), পিতা বা পিতার পিতা ইত্যাদি কেউ জীবিত থাকলে বৈপিত্রেয় ভাই/বোন উত্তরাধিকার আইন হতে বাদ পড়ে।

পরিবর্তিত আইনঃ

                                                                       উত্তরাধিকার আইন

মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে তার আপন বোনঃ মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে মৃত ব্যক্তির পুর্ণ বোন বা সহোদর বোন থাকলে তারা পাঁচটি অবস্থায় অংশ প্রাপ্ত হয়ে থাকে। যেমন –

(১) মৃত ব্যক্তির যদি একজন আপন বোন থাকে তাহলে সে ঐ ব্যক্তির সম্পত্তির ১/২ অংশ পাবে।

(২) যদি দুই বা ততোধিক সহোদর বোন থাকে তাহলে তারা ঐ সম্পত্তির ২/৩ অংশ পাবে।

(৩) আপন ভাইয়ের উপস্থিতিতে আপন বোন অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে ২:১ হারে সম্পত্তি পেতে পারে।

(৪) আপন বোন মৃত ব্যক্তির সন্তান, পুত্রের সন্তান যত নীচের হোক, বা পুত্রের উপস্থিতিতে ও সে অংশীদার হতে বাদ পড়ে অবশিষ্টাংশভোগী হিসেবে সম্পত্তি পেতে পারে । কিন্তু ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবরিক আইনের বিধান মোতাবেক আপন বোন কোন অংশ পাবেনা। পুত্রের কন্যাই সব অংশ পাবে।

(৫) মৃত ব্যক্তির পিতা বা দাদা বর্তমান থাকলে সহোদর বোন বঞ্চিত হবে।

এছাড়াও মুসলিম আইনানুযায়ী একজন নারী (স্ত্রী, মাতা, কন্যা, বোন) নিম্নে উল্লেখিত অধিকারগুলো পেতে হকদার।ইসলাম ধর্মে এসব দায়দায়িত্ব থেকে নারীকে অব্যাহতি দিয়ে শুধু তা পুরুষের ওপরই অর্পণ করা হয়েছে।

দেনমোহরের অধিকারঃ

মুসলিম আইন অনুযায়ী একজন মুসলিম নারী বিয়ের পর স্বামীর কাছ থেকে দেনমোহর বাবদ একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ পেয়ে থাকে। যা স্বামীকে অবশ্যই বিয়ের আগে অথবা বিয়ের পরে পরিশোধ করতে হয়। অন্যথা স্ত্রী তা যেকোনো সময় আইন অনুযায়ী আদায় করতে পারবে। কোনো কারণে স্বামী জীবিত অবস্থায় পরিশোধ করে যেতে না পারলে তার মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি থেকে তা পরিশোধ করতে হয়।

ভরণ পোষণের অধিকারঃ

মুসলিম আইন অনুযায়ী নারীদের যাবতীয় খরচের দায়-দায়িত্ব পুরুষের ওপর বর্তায়। পুত্রসন্তান উপার্জনক্ষম হলে তার ওপর সংসারের যাবতীয় দায়দায়িত্ব এসে পড়ে। আর সে যখন স্বামী তখন তাকে স্ত্রীর ভরণপোষণ দিতে হয়, সে যখন বাবা তখন তাকে তার ছেলেমেয়েদের ভরণপোষণ দিতে হয় এবং মেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থা করতে হয়। যখন সে ভাই তখন ছোট ভাইবোনদের ভরণপোষণ এবং অবিবাহিত বোনদের বিয়ের ব্যবস্থা করতে হয়। এ ছাড়া আমাদের দেশে মা-বাবার ভরণপোষণ নিয়ে আলাদা আইনও রয়েছে। ইসলাম ধর্মে এসব দায়দায়িত্ব থেকে নারীকে অব্যাহতি দিয়ে শুধু তা পুরুষের ওপরই অর্পণ করা হয়েছে। বিপরীতে কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে এসব দায়িত্ব পালন ঐচ্ছিক ব্যাপার। সে এসব দায়িত্ব পালন করতে না পারলে তাকে বাধ্য করা যাবে না।

অতএব,

উপরোক্ত পর্যালোচনা থেকে আমরা দেখতে পাই যে, মুসলিম আইনে বর্তমানে নারীদের সম্পত্তিতে যে অধিকার দেওয়া হয়েছে তা পুরোপুরিভাবে কার্যকর করা। কারণ এখনও অধিকাংশ গ্রামগঞ্জে এমনকি শহরেও নারীদের তাদের পিতৃ সম্পত্তি থেকে ব্যাপকভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে নানা রকম ছলচাতুরী দিয়ে। কখনো বা সরাসরি বলে দেওয়া হচ্ছে যে, পরিবারের কোন নারী সদস্যকে কোন প্রকার সম্পত্তি দেওয়া হবে না। তাই আমাদের আগে মুসলিম নারীর সম্পত্তিতে প্রাপ্য অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং কার্যকর করতে হবে।

মুসলিম পারিবারিক ও উত্তরাধিকার আইনঃ-

                                                                     উত্তরাধিকার আইন

মুসলিম পরিবার আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ উত্তরাধিকার, বিবাহ রেজিস্ট্রি, বহুবিবাহ, তালাক, দেনমোহর ও ভরণপোষণ সংক্রান্ত আইন। এ আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর মুসলিম পারিবারিক আইন সংশোধনের জন্য আইন কমিশনের কিছু সুপারিশ কার্যকর করার ঘোষণা প্রদান করা হয়। এ ঘোষণা অনুযায়ী ১৯৬১ সালে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট কর্তৃক এ অধ্যাদেশটি জারি করা হয়, যা ১৯৬১ সালের ৮নং অধ্যাদেশ নামে পরিচিত।এ অধ্যাদেশে পারিবারিক বিভিন্ন বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একটি সালিসী কাউন্সিল গঠনের কথা বলা হয়।

স্থানীয় ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এবং প্রতিযোগী পক্ষগণের মধ্য থেকে একজন করে প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিনিধি সমন্বয়ে এই কাউন্সিল গঠিত হবে। পৌর এলাকায় পৌরসভার চেয়ারম্যান এবং মিউনিসিপাল কর্পোরেশন এলাকায় কর্পোরেশনের মেয়র বা প্রশাসক সালিসী কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন।এ অধ্যাদেশের অন্তর্ভুক্ত বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সকল আইন, প্রথা বা রীতির উপর এ আইন কার্যকর হবে। এ আইনের ৪নং ধারায় উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী সংশোধন আনা হয়। মুসলিম উত্তরাধিকার আইন লা-ওয়ারিশ প্রথাকে বাতিল করা হয়।

উত্তরাধিকার আইন

এ আইনে বলা হয়, উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পত্তি বণ্টিত হওয়ার পূর্বে মৃত ব্যক্তির কোন পুত্র বা কন্যার মৃত্যু হলে, উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পত্তি বণ্টিত হওয়ার সময় ঐ পুত্র বা কন্যার সন্তানাদি যদি জীবিত থাকে, তাহলে ঐ মৃত পুত্র বা কন্যা বণ্টনের সময় জীবিত থাকলে সে যে অংশ পেতো, তার সন্তানাদি সমষ্টিগতভাবে অনুরূপ অংশ পাবে।৫নং ধারায় বহুবিবাহ সম্পর্কে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এ ধারায় বলা হয়, কোন ব্যক্তির একটি বিবাহ বলবৎ থাকা অবস্থায় সালিস পরিষদের পূর্বানুমতি ছাড়া পুনরায় বিবাহ করতে পারবে না এবং এরূপ অনুমতি ব্যতীত কোন বিবাহ সম্পন্ন হলে তা রেজিস্ট্রি করা যাবে না। বিবাহ করতে হলে সালিস পরিষদের অনুমতির জন্য নির্ধারিত ফি দিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করতে হবে এবং আবেদনপত্রে প্রস্তাবিত বিবাহের কারণ, প্রয়োজনীয়তা এবং এ বিবাহে বর্তমান স্ত্রী বা স্ত্রীগণের সম্মতি আছে কিনা তা উল্লেখ করতে হবে।আবেদনপত্র পাওয়ার পর চেয়ারম্যান আবেদনকারী ও তার বর্তমান স্ত্রী বা স্ত্রীগণকে তাদের নিজ নিজ

তাছাড়া,

প্রতিনিধি মনোনয়ন করতে বলবেন এবং এ সালিস পরিষদ যদি মনে করে যে, প্রস্তাবিত বিবাহটি প্রয়োজন ও ন্যায়সঙ্গত তাহলে পরবর্তী বিবাহে অনুমতি প্রদান করতে পারেন। আবেদনপত্র সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় সালিস পরিষদ তার সিদ্ধান্তের কারণসমূহ লিপিবদ্ধ করবে। কোন পক্ষ নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট মহকুমা হাকিমের নিকট পুনর্বিচারের আবেদন করতে পারবে এবং মহকুমা হাকিমের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। এর বৈধতা সম্পর্কে কোন আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না।কোন পুরুষ সালিস পরিষদের অনুমতি ব্যতীত যদি আরও একটি বিবাহ করে, তাহলে তাকে (১) অবিলম্বে তার বর্তমান স্ত্রী বা স্ত্রীগণের সমস্ত দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করতে হবে। পরিশোধ করা না হলে তা বকেয়া রাজস্বের ন্যায় আদায় করা যাবে; (২) অভিযোগক্রমে দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে এক বৎসর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদন্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা হবে।

মুসলিম বিবাহ উত্তরাধিকার আইন বাংলাদেশঃ-

মুসলিম বিবাহ আইন বাংলাদেশ
ইসলাম ধর্মের পবিত্র উৎস্ গুলো থেকে শরীয়া আইন অনুযায়ী পরিচালিত বিধায় এই আইনকে মুসলিম আইন বলা হয়। ইসলাম ধর্ম যেহেতু একটি সার্বিক জীবন বিধান, বিবাহের ব্যাপারেও এর কোন ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হয় না। এখানে বিবাহের আইনগত গুরুত্ব, সামাজিক ও ধর্মীয় মর্যাদা বিশেষ ভাবে পরিলক্ষিত হয়। একটি ছেলে ও মেয়ের বা পুরুষ ও নারীর সহবাস, জীবন যাপন ও সংসার ধর্ম পালন এর লক্ষে, ধর্মীয় ও সামাজিক সুরক্ষা দিতেই বিবাহ প্রথার জন্ম। মুসলিম আইন অনুযায়ী বিয়ে হলো দেওয়ানী চুক্তি ইসলাম ধর্মের অন্যকোন উৎস অথবা বাংলাদেশের প্রচলিত অন্য যে কোন আইনে যা কিছুই বলা হোক না কেন, মুসলিম পারিবারিক আইন এর অধীনে একটি আইন সম্মত নিকাহ/বিবাহ সম্পাদনের জন্য ৫ (পাঁচ) টি শর্ত অবশ্যই পালন করতে হবে। অর্থাৎ, একটি বৈধ বিবাহ সম্পন্ন হতে হলে নিম্ন বর্ণিত বিষয় গুলো উপস্থিত থাকতে হবে:
(১) পক্ষ গণের প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হবে (ছেলেদের ২১ এবং মেয়েদের ১৮), অর্থাৎ বিয়েটি বাল্য বিবাহ হওয়া যাবে না।

(২) পক্ষ গণের বিয়েতে সম্মতি থাকতে হবে (ইজাব ও কবুল); বিশেষভাবে নারীদের ক্ষেত্রে জোরপূর্বক বিয়েতে বাধ্য করা যাবেনা।

(৩) প্রাপ্ত বয়স্ক/বয়স্কা ২ (দুই) জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়েটি সম্পন্ন হতে হবে; [3]

(৪) দেনমোহর বা মোহরানা নির্ধারণ; [বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন ]

(৫) বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করা।যদিও বাংলাদেশের পারিবারিক আইনের আওতায় মুসলিমদের বেশীরভাগ গুরুত্বপূর্ণ পারিবারিক বিধান গুলো মুসলিম পারিবারিক আইন, অধ্যাদেশ, ১৯৬১ (Muslim Family Laws Ordinance, 1961) অনুসারে পরিচালিত হয়ে থাকে‌। কিন্তু বিবাহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিষ্ট্রেশন) আইন, ১৯৭৪ [Muslim marriages and Divorces (Registration) Act, 1974]–এর বিধান অনুযায়ী হয়ে থাকে।

বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন, ১৯২৯ এর অধীনে বরের বয়স অবশ্যই ২১ বৎসর এবং কনের বয়স ১৮ বৎসর হতে হবে। সমাজের যে কোন চুক্তি সম্পাদনের জন্য যেমন দুই পক্ষ কে প্রাপ্ত বয়স্ক ও সুস্থ মস্তিস্কের অধিকারী হতে হয়, তেমনি বিয়ের চুক্তির ক্ষেত্রেও পক্ষদ্বয়কে প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হয়, অন্যথায় সাধারণ চুক্তির মতো এই চুক্তিও আইন সম্মত হবে না, বাতিল যোগ্য হবে।পক্ষগনের সম্মতির ব্যাপারে বলা হয়েছে যে, একটি পক্ষ প্রস্তাব করার পর অন্য পক্ষ কর্তৃক উহা স্বেচ্ছায় গ্রহণ করতে হবে। এবং বৈধ বিবাহ সম্পাদনের ক্ষেত্রে উহার গুরুত্ব অপরিসীম। কোন সুস্থ মস্তিস্ক ও প্রাপ্ত বয়স্ক সম্পন্ন মুসলমানের বিয়ে যদি তার সম্মতি

ব্যতিরেকে সম্পন্ন হয় তাহলে উক্ত বিবাহ চুক্তিটি বৈধ বিবাহ বলে গন্য হবে না। একটি বৈধ বিবাহ সম্পাদনের জন্য বর কনেকে প্রস্তাব দেবে যাকে ইজাব বলা হয়, এবং কনে উক্ত প্রস্তাবটিতে নিজে সম্মতি প্রদান করিয়া কবুল বলিয়া গ্রহণ করিবে।একটি বৈধ বিবাহ সম্পাদনের ক্ষেত্রে সাক্ষিদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে। এই সাক্ষী সম্পর্কে হানাফি মত অনুসারে একজন পুরুষ ও দুজন মহিলার কথা বলা হয়েছে একজন পুরুষকে একজন পূর্ণ সাক্ষ্য এবং সাক্ষি হিসেবে একজন নারীকে একজন পুরুষের অর্ধেক ধরা হয়েছে, অর্থাৎ একজন নারী সাক্ষীর সাক্ষ্য গুণ একজন পুরুষ সাক্ষীর সাক্ষ্য গুণের অর্ধেক। কিন্তু বাংলাদেশের (সাক্ষ্য আইন) অনুযায়ী নারী ও পুরুষ সমান গুরুত্ব পেয়ে থাকেন। সুতরাং, বিয়ের সাক্ষি হিসেবে উপস্থিত দুই জনের দুই জন পুরুষ, দুই জন নারী অথবা একজন পুরুষ আর একজন নারী হতে পারে। বিয়ের প্রস্তাবটি সাক্ষীদের সামনে এমন ভাষায় প্রস্তাবিত হতে হবে যাতে করে উপস্থিত সবাই সেটা বুঝতে পারে যে এটা একটা বিবাহ চুক্তি সম্পাদন হইতেছে।

লেখকঃ ল ফর ন্যাশনস, ইমেইলঃ lawfornations.abm@gmail.com, ওয়েবসাইটঃ www.lawfornations.com, মোবাইল: 01842459590.

আইন সম্পর্কে আরো জানতে বিড়ি ‘ল’ নিউজ এর সঙ্গেই থাকুন ধন্যবাদ

 

 

Next Post
Income Tax Law in Bangladesh

দেনমোহর আইন ও পরিশোধের নিয়ম

Discussion about this post

নিউজ আর্কাইভ

July 2025
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
« Oct    
Facebook Youtube RSS


সম্পাদক: এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম,
আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।

অফিস ঠিকানাঃ

বকাউল ম্যানশন, ৩য় তলা, সেগুন বাগিচা মোড়, ৪২/১/খ, সেগুন বাগিচা, ঢাকা - ১০০০ ।
মোবাইলঃ 01842459590

© 2021 BDLAWNEWS.COM - A News portal founded by A.B.M. Shahjahan Akanda Masum.

No Result
View All Result
  • আন্তর্জাতিক
  • ’ল’ ক্যাম্পাস
  • অনিয়ম
  • অন্যান্য
    • একাদশ নির্বাচন
    • খেলাধুলায় আইন
    • আইন চাকুরী
    • আইন জিজ্ঞাসা
  • আইন পড়াশুনা
  • আইন সংস্থা
  • আইন-আদালত
  • আইনী ভিডিও
  • ইংরেজি
  • উচ্চ আদালত
  • কোর্ট প্রাঙ্গণ
  • খেলাধুলা
  • গুণীজন
  • জাতীয়
  • জেলা আইনজীবী সমিতি
  • দেশ ও দশ
  • দেশ জুড়ে
  • অপরাধ
  • দৈনন্দিন জীবনে আইন
  • বাংলাদেশ
    • খুলনা
    • চট্টগ্রাম
    • ঢাকা
    • বরিশাল
    • ময়মনসিংহ
    • রাজশাহী
    • বগুড়া
  • বিনোদন
  • ব্লগ
  • মতামত
  • মানবাধিকার
  • রাজনীতি
  • লিগ্যাল নোটিশ
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • শীর্ষ সংবাদ
  • সাক্ষাৎকার
  • যুগান্তকারী রায়

© 2021 BDLAWNEWS.COM - A News portal founded by A.B.M. Shahjahan Akanda Masum.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In