নিজস্ব প্রতিবেদক: গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য কাদের খানসহ ৭ জনের ফাঁসির আদশে দিয়েছেন আদালত।দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে চন্দন দাস পলাতক রয়েছেন। তিনি পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়ে আছেন। তাকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এ রায় ঘোষণা করেন গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলীপ কুমার ভৌমিক।
ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, (০১) কাদের খান (০২) কাদের খাঁনের পিএস শামছুজ্জোহা (০৩) গাড়ী চালক আব্দুল হান্নান (০৪) কাদের খানের ভাতিজা মেহেদি (০৫) ডিস ব্যবস্যায়ী শাহিন (০৬) চন্দন কুমার রায়।
রায়ে আদালত জানান, প্রধান আসামি কাদের খান হত্যাকাণ্ড পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে। কাদের খানসহ বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সন্দোতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান আদালত।
আসামিদের মধ্যে শুধু সুমন কসাই জেলা কারাগারে থাকা অবস্থায় মারা যাওয়ায় তাকে এই রায়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
রায়ের পর গাইবান্ধা জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এবং এই মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, এই হত্যাকাণ্ড যে পরিকল্পিত ছিল তা মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ, আসামিদের স্বীকারোক্তি ও যুক্তিতর্কে প্রমাণ হয়েছে।
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আবদুল হামিদ বলেন, এমপি লিটনকে যেমন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে, তেমনি এ মামলায় আসামি কাদের খাঁনকে ফাঁসানো হয়েছে। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবো আমরা।
এ রায়ে সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন নিহত এমপি লিটনের স্ত্রী।
এরআগে গত ১৯ নভেম্বর শুনানি শেষে গাইবান্ধার জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার ভৌমিক রায় ঘোষণার জন্য এই দিন ঠিক করেন।
প্রধান আসামি সাবেক এমপি জাতীয় পার্টির আব্দুল কাদের খানকে একই ঘটনায় অস্ত্র মামলার রায়ে গত ১১ জুন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন এই বিচারক। এছাড়া অস্ত্র মামলায় পৃথক এক ধারায় তাকে ১৫ বছর কারাদণ্ড দেয় আদালত।
২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গার মাস্টারপাড়ার নিজ বাড়িতে গুলিতে নিহত হন গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। মামলার প্রধান আসামি কাদের খানও ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত পোঁচ-ছয়জনের বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন লিটনের বড় বোন ফাহমিদা কাকুলী। তদন্ত শেষে কাদের খানসহ আটজনের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
ওই বছরই ২১ ফেব্রুয়ারি বগুড়ার বাসা থেকে গ্রেপ্তারের পর থেকে কাদের খান গাইবান্ধা জেলা কারাগারে রয়েছেন। অন্য পাঁচ আসামি হলেন কাদের খানের একান্ত সহকারী শামছুজ্জোহা, গাড়িচালক আবদুল হান্নান, মেহেদি হাসান, শাহীন মিয়া ও আনোয়ারুল ইসলাম রানা।




Discussion about this post