
মাদকাসক্ত কারাবন্দিদের সুস্থ করতে দেশের প্রতিটি কারাগারে নির্মিত হচ্ছে মাদক নিরাময় কেন্দ্র। মাদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দিদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে এ উদ্যোগ নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাদকাসক্ত বন্দিদের মানসিক বিকাশ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কারাগারকে সংশোধানাগারে রূপান্তর করার কাজও শুরু হয়েছে।
কারা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এআইজি-প্রিজন) কর্নেল ফজলুল কবীর গণমাধ্যমকে বলেন, কারাগার থেকে বের হয়ে বন্দিরা যাতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন সেজন্য বিভিন্ন কাউন্সিলিং ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হচ্ছে নিয়মিত।
তাদের চিকিৎসার জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
কারা সূত্র বলছে, বর্তমানে দেশের ৬৮টি কারাগারের মোট ধারণ ক্ষমতা ৩৪ হাজার ৭৯৬ জন। এর বিপরীতে বন্দি আছেন ৭১ হাজার ১০৫ জন।
এর মধ্যে ৬৮ হাজার ৫৯৩ জন পুরুষ এবং দুই হাজার ৫১২ জন নারী বন্দি। দেশের ৬৮টি কারাগারের মোট মাদকাসক্ত বন্দি আছেন ৫ হাজার ৯৭০ জন।
‘কারাগারকে সংশোধনাগারে রূপান্তর করা হবে’ উল্লেখ করে কর্নেল ফজলুল কবীর বলেন, মাদকাসক্তদের শনাক্ত করে কারা মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হবে।
‘মাদক সংক্রান্ত মামলায় বন্দি সবাই যে মাদকাসক্ত, এমনটি নয়। যারা মাদকাসক্ত তাদেরই চিকিৎসা দেওয়া হবে,’ বলেন তিনি।
সূত্র জানায়, মাদকাসক্ত বন্দিদের বিভিন্ন কাউন্সিলিং করার বিষয়ে কারা কর্মকর্তা, কারারক্ষী ও কারা চিকিৎসকদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। মাদকাসক্ত বন্দিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে দেশের সব কারাগারের কর্মকর্তাকে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এরইমধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন কারাগারের কর্মকর্তাদের এ প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। পর্যায়ক্রমে খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগসহ সব কারাগারেই এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেড-এর সহযোগিতায় এ কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানান কারা কর্মকর্তারা।
কারা অধিদফতর সূত্র জানায়, দেশের সব কারাগারে একটি করে মাদক নিরাময় কেন্দ্র চালু করতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে দেশের বিভাগীয় পর্যায়ের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও বিভাগীয় কারা কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কর্মকর্তারা জানান, প্রথমে কারগারে একটি ওয়ার্ড নিয়ে কেন্দ্রটি চালু হবে। প্রয়োজনে পরে এর অবকাঠামো নির্মাণ করা হতে পারে।
যোগাযোগ করা হলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, মাদকাসক্ত বন্দিদের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতেই আমরা কাজ করছি।
পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ বেশ কয়েকটি কারাগারে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এতে আশাব্যঞ্জক সফলতা দেখা দিলে দেশের ৬৮টি কারাগারে একটি করে নিরাময় কেন্দ্র চালু করা হবে।




Discussion about this post