কুমিল্লায় চাচা কর্তৃক ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষিত হওয়ার ৬ মাস পর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ২ জুন জেলার বরুড়া একটি হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে ৫ মাসের একটি মৃত সন্তান প্রসাব করায়। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে গিয়ে অসহায় পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে একই এলাকার নিকটাত্মীয় চাচা আমজাদ হোসেন। পরে বিষয়টি সমঝোতার জন্য ধর্ষিত পরিবাররকে ২ লাখ টাকা দেয়ার নির্ধারণ করা হলেও মাতব্বরা ওই টাকা হাতিয়ে নিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার নোয়াবাজার সংলগ্ন নোয়াবাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী ও সদর দক্ষিণ উপজেলার জোরকানন পশ্চিম ইউনিয়নের হরিশ্চর গ্রামের দরিদ্র রিক্সা চালক হাসলাম মিয়ার কন্যা।
সরেজমিন ঘুরে স্থানীয় বিভিন্ন সুত্রে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, কুমিল্লা সদর দক্ষিনের জোরকানন পশ্চিম ইউনিয়নের হরিশচর গ্রামের দরিদ্র রিক্সা চালক আসলাম মিয়ার স্কুল শিশু কন্যা। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার নোয়াবাজার সংলগ্ন নোয়াবাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী। একই বাড়ির নিকটাতায়ী চাচা সম্পর্কিত নরপিচাশ দু’সন্তানের জনক আমজাদ উল্লার লালসার শিকার ওই ছাত্রী।
ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন সময়ে চাচা পরিচয়ের সুযোগে এটা-সেটা কিনো দিত। একই বাড়ির হওয়ার সুবাদে আমজাদ সময়ে অসময়ে ডেকে বাড়িতে নিয়ে যেত তাকে। একই সুযোগে প্রলোভন দেখিয়ে বিগত প্রায় ৬ মাস পূর্বে নিজ ঘরে ডেকে এনে ধর্ষন করে বিষয়টি যেন কেউ না জানে সে বিষয়ে সতর্ক করে দেয় শিশুটিকে। কেউ জানলে তাকে হত্যার হুমকীও দেওয়া হয়।
এরপর আমজাদ কৌশলে তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। পরে সময় সুযোগমত শিশুটিকে নিজ ঘরে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ধর্ষন করায় গর্ভবতী হয়ে পড়ে। পরে শিশুটির শরীরে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হওয়ায় পরিবারের লোকজনের চাপে স্কুল শিশুটি সব কথা খুলে বলে। তখন শিশুটির পিতা, মাতাসহ পরিবারের লোকজন চাচা সম্পর্কিত ওই নরপিচাশ আমজাদকে ডেকে ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে সে বিষয়টা অস্বীকার করে।
এরপরই ধর্ষকসহ তার পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লাগে। গ্রাম্য মাতব্বর মতিন ও বাবুলের সহযোগীতায় ধর্ষকের পিতা আলী আজ্জম ধর্ষিতার পরিবারকে অপোষ রফার প্রস্তাব দেয়। প্রথমে ৭০ হাজার টাকার অপোষ-রফার প্রস্তাব ধর্ষিতার পিতাসহ পরিবারের কাছে দিলে তারা সেটা প্রত্যাখ্যান করে। পরবর্তীতে গ্রাম্য টাউট-বাটপাররা ধর্ষকের কাছ থেকে বিষয়টি সমাধানের কথা বলে হাতিয়ে নেয় প্রায় দু’লাখ টাকা।
বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ধর্ষকের পরিবার ধর্ষিতাকে প্রাননাশের হুমকী দেয়। এতে নিরাপত্তাহীনতায় থাকা ধর্ষিতাকে তার পরিবারের সদস্যরা অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়। ২ জুন ৬ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা ওই স্কুল ছাত্রী শিশুটিকে একটি উপজেলার স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে সিজার অপারেশনের মাধ্যমে ইচ্ছার বিরুদ্ধে মৃত সন্তান প্রসব করায়। সন্তানটি মেয়ে ছিল বলেও সুত্র নিশ্চিত করে। অবৈধ সিজার অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানোর কারনে বর্তমানে ওই স্কুল ছাত্রীটি মৃত্যুও সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এ বিষয়ে আইনী সহযোগিতা পাচ্ছেনা অসহায় পরিবার। গ্রাম্য মাতব্বরদের ভয়ে পরিবারটি আইনের আশ্রয় নিতে পারছে না।
এ বিষয়ে সদর দক্ষিণ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রশান্ত পাল জানান- ভিকটিম কেহই থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেনি। সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন- গোপনে থানায় আসলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।




Discussion about this post