নিজস্ব প্রতিবেদক
মির্জা অরুনিমা শাহপার (অহনা) ব্রেনটিউমারে আক্রান্ত হয়ে বিগত ২৩/০৮/২০১৪ইং তারিখে মাত্র সাড়ে চার বছর বয়সে অকালে মৃত্যু বরণ করেন । অহনার বাবা স্থপতি মির্জা শাহপার জলিল তার শিশু কন্যাটিকে বাঁচানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেন এবং বাংলাদেশের কখিত যশ চিকিৎসক এবং স্কয়ার হাসপাতালের মত করা সনামধন্য হাসপাতালে সুচিকিৎসা না পেয়ে তিনি একপর্যায়ে স্কয়ার হাসপাতাল থেকে অহনাকে নিয়ে এয়ার এম্বুলেন্সে করে ব্যাংককের সামিতি ভেজশ্রী নাকারিন চিলড্রেন হাসপাতালে যান ।
১৫/০৮/২০১৩ ইং তারিখে স্কয়ারে হাসপাতালে ব্রেনটিউমারে আক্রান্ত অহনার ভিপিশান্ট অপারেশনের পর আড়াইদিনেও তারা শিশু টির ব্রেইনের পোস্ট অপারেটিভ অবস্থা জানার জন্য একটি মাত্রও সিটিস্ক্যান অথবা এমআর আই করে নাই ।
১৭/০৮/২০১৩ইং তারিখে শিশুটির বাবা অহনার চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি নাদেখে নিতান্তই বাধ্য হয়ে অহনাকে ব্যাংককে নিয়ে যায় এবং ব্যাংককের হাসপাতালটি ১৭/০৮/২০১৩ইং তারিখেই অবতরণের সাথে সাথে অহনাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ফুল লাইফ সাপোর্ট-এরেখেসিটিস্ক্যান করে যাতে অহনার দুই দুইটা ব্রেইন হেমোরেজ সংঘটনের অস্তিত্ব পাওয়া যায় | পরবর্তীতে অনেক দীর্ঘ চিকিৎসা প্রক্রিয়ার পরও অহনাকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি |

পরবর্তীতে চিকিৎসার সহিত সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রাদি ঘাটাঘাটি করে এবং এই বিষয়ে অভিজ্ঞদের সাথে যোগাযোগ করে অহনার বাবা বুঝতে পারেন যে অহনার চিকিৎসাতে অবহেলা হয়েছে যা অহনার মৃত্যুর মূল কারণ ।
এই সংক্ষুব্ধতায় মির্জাশাহ পারজলিল বাদী হয়ে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ড: কাজী নওশাদ উন-নবী, ড: মো: মাসুদুর রহমান, অধ্যাপক ড: সানোয়ার হোসেন এবং স্কয়ার হাসপাতালকে আসামি করে বিগত ১১/০১/২০১৫ইং তারিখে দণ্ড বিধির৩০৪ক/৩৪ধারায় মামলা দায়ের করেন ।
উল্লেখ্য যে, ড: মো: মাসুদুর রহমান ঐ সময়ে স্কয়ার হাসপাতালের শিশু বিভাগ এবং পিআইসিইউ কন্সাল্ট্যান্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং অধ্যাপক ড: সানোয়ার হোসেন স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা বিভাগের পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন ।
বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট বাদীর অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখমুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) তৎকালীন ভিসিকে নির্দেশ দেন |
এই আদেশের দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটি একটি রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেন যেই রিপোর্টে তদন্ত কমিটি জানায় যে, রিপোর্টে উল্লেখিত কারণে ভিকটিমের মৃত্যুর জন্য কে দায়ী বা আদৌ দায়ী কিনা তার পূর্ণাঙ্গ মতামত দেয়া সম্ভব নয় ।
এই প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট বাদী পক্ষের বক্তব্য শুনানি অন্তে একটি বিশদ আদেশ দ্বারা আসামিদের মধ্য হতে কেবল মাত্র ড: কাজী নওশাদ উন-নবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ বিচারার্থে আমলে নিয়ে স্কয়ার হাসপাতালের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অত্র মামলার দায় হতে অব্যহতি প্রদান করেন ।
উক্ত আদেশে সংক্ষুব্ধ হয়ে বাদী বিজ্ঞ দায়রা আদালতে রিভিশন মামলা করলে, বিজ্ঞ দায়রা আদালত রিভিশন মামলাটি খারিজ করে দেন । সেই আদেশে সংক্ষুব্ধ হয়ে বাদী মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনের শরণাপন্ন হন ।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি মাহমুদুল হক-এর সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চএই মামলাতে রুল জারি করেন ।
পরবর্তীতে বিচারপতি এ, কে, এম, আবদুল হাকিম এবং বিচারপতি ফাতেমা নজীব -এর সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি কার্যক্রম শুরু হয় | দীর্ঘ প্রায় একমাস উভয় পক্ষের শুনানি অন্তে মহামান্য উচ্চ আদালত আগামী ২৩/০২/২০২১ইং তারিখ মামলাটির রায় প্রদানের জন্য দিন ধার্য করেছেন |
বাদী পক্ষে আদালতে মামলাটি পরিচালনা করছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার খান খালিদ আদনান |
Discussion about this post