নিজস্ব প্রতিবেদক: জঙ্গি সংগঠন শহীদ হামজা ব্রিগেডকে নাশকতার জন্য অর্থায়নের অভিযোগে দায়ের হওয়া দুই মামলা থেকে অ্যাডভোকেট হাসানুজ্জামান লিটন ও অ্যাডভোকেট মাহফুজ চৌধুরী বাপনকে অব্যাহতি দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। দুই আইনজীবীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজিম।
পরে ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজিম বলেন, তাদের নামে অভিযোগ গঠনের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে আপিল করেছিলেন। শুনানি শেষে আজ (বৃহস্পতিবার) তাদের ওই দুই মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি হাটহাজারী উপজেলায় মাদরাসাতুল আবু বকর নামে একটি মাদ্রাসায় ‘জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে’ অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব। ২১ ফেব্রুয়ারি বাঁশখালী উপজেলার লটমণি পাহাড়ে র্যাবের অভিযানে অস্ত্রসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব-৭ এর কর্মকর্তারা জানান, হাটহাজারী ও বাঁশখালী থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা নতুন জঙ্গি সংগঠন শহীদ হামজা ব্রিগেডের সদস্য। শহীদ হামজা ব্রিগেডের তিনটি সামরিক উইং রয়েছে। এগুলো হলো- গ্রিন, ব্লু ও হোয়াইট। প্রত্যেক উইংয়ে সাতজন করে সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য আছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রাম নগরের ফয়’স লেকে একটি রেস্টুরেন্টে সভা করে এই জঙ্গি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। পরে ১৮ আগস্ট হামজা ব্রিগেডকে অর্থায়নের অভিযোগে ঢাকা থেকে আইনজীবী ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা (৩৯), অ্যাডভোকেট হাসানুজ্জামান লিটন (৩০) ও অ্যাডভোকেট মাহফুজ চৌধুরী বাপনকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। এরমধ্যে ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা বিএনপি নেতা সাবেক হুইপ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের মেয়ে। গ্রেপ্তারের করে তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। পরে তারা জামিনে মুক্তি পান।
পরে গত বছরের ২০ আগস্ট হাটহাজারীর মামলায় ৩৩ জন আসামি ও বাঁশখালীর মামলায় ২৮ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনে আদেশ দেন চট্টগ্রামের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আবদুল হালীম। তবে পলাতক থাকায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
এরপর অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করে অ্যাডভোকেট হাসানুজ্জামান লিটন ও অ্যাডভোকেট মাহফুজ চৌধুরী বাপন। গত বছরের ১১ নভেম্বর হাইকোর্ট বিভাগ আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। ২৬ নভেম্বর আপিল বিভাগ চার সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টে আপিল নিষ্পত্তি করতে বলেন।
Discussion about this post