নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০ দলীয় জোট (সম্প্রসারিত ২৩ দল) সঙ্গীদের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে বিএনপির এক ধরণের সমঝোতা হয়েছে। শরিকদের ৪০ থেকে ৪২ টি আসন দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। শরিক দলগুলো আরও দু’ চারটি আসন নিয়ে দরকষাকষি করছে।
সোমবার বা মঙ্গলবারের মধ্যে ২০ দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হবে। জোটের একাধিক শরিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
২০ দলকে যে ৪০-৪২টি আসন দিতে চাইছে বিএনপি তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন পাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। দলটিকে ২৪টি আসন দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।তবে জামায়াত আরও কয়েকটি আসনে নিজ দলের প্রার্থী দিতে চাইছে। বাকি ১৬ থেকে ১৮টি আসন পাবে ২০ দলের অন্য শরিকরা।
২০-দলীয় জোটে বিএনপিসহ দল আছে ২৩টি। এসব দলের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পাচ্ছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি। দলটিকে চারটি আসন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে আরও দুটি আসন চাইলে অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন এই দল।
জামায়াত যেসব আসন দেয়া হচ্ছে: জামায়াতকে যেসব আসনে বিএনপি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেগুলো হল- ঠাকুরগাঁও-২ মাওলানা আবদুল হাকিম, দিনাজপুর-১ মাওলানা আবু হানিফ, দিনাজপুর-৬ আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-৩ মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, লালমনিরহাট-১ আবু হেনা মো. এরশাদ হোসেন সাজু, রংপুর-৫ অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, কুড়িগ্রাম-৪ নূর আলম মুকুল, গাইবান্ধা-১ অধ্যাপক মাজেদুর রহমান, গাইবান্ধা-৪ ডা. আবদুর রহীম সরকার, বগুড়া-৪ মাওলানা তায়েব আলী, সিরাজগঞ্জ-৪ রফিকুল ইসলাম খান, পাবনা-১ আবদুল বাসেত, পাবনা-৫ ইকবাল হোসাইন, যশোর-২ আবু সাঈদ মুহাম্মদ শাহাদত হোসাইন, বাগেরহাট-৩ অ্যাডভোকেট আবদুল ওয়াদুদ, বাগেরহাট-৪ আবদুল আলীম; খুলনা-৫ মিয়া গোলাম পরওয়ার; খুলনা-৬ আবুল কালাম আযাদ, সাতক্ষীরা-২ মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৩ মুফতি রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা-৪ গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-২ শামীম সাঈদী, সিলেট-৫ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, সিলেট-৬ মাওলানা হাবিবুর রহমান, কুমিল্লা-১১ ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, চট্টগ্রাম-১৫ আ ন ম শামসুল ইসলাম, কক্সবাজার-২ হামিদুর রহমান আজাদ।
জামায়াত ছাড়া ২০ দলের শরিক দলগুলো বিএনপির নির্বাচনী প্রতীক ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে জামায়াত ইসলামী স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচন করার কথা ভাবছে। তবে ভোটের হিসাব-নিকাশ শেষ পর্যন্ত তারা ধানের শীষই বেছে নিতে পারে।
নিবন্ধন হারানো জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষস্থানীয় নেতা জানিয়েছেন, স্বতন্ত্র নয় আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন দলটির প্রার্থীরা। এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে আজকালের মধ্যে। জামায়াতের নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, তারা ৫৩ আসনের তালিকা বিএনপিকে দিয়েছেন। ২৮ নভেম্বর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তারা মনোনয়নপত্র দাখিল করবেন। ধানের শীষে মনোনয়নপত্র দাখিল করা হবে কিনা তা বলতে রাজি হননি তিনি।
জামায়াতের একজন কেন্দ্রীয় নেতা নিশ্চিত করেছেন, বিএনপি এখন পর্যন্ত ২৫ আসন ছাড়তে রাজি হয়েছে। জামায়াত আরও কয়েকটি আসনে ছাড় পেতে চেষ্টা করছে। শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩০ আসন পেতে পারে। জামায়াতের চাওয়া ৩৫টির আসনের মধ্যে নীলফামারী-২, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩, রাজশাহী-১, চুয়াডাঙ্গা-২, ঝিনাইদহ-৩, ঢাকা-১৫ ও চট্টগ্রাম-১৬ আসনে বিএনপি ইতিমধ্যে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। তিনি বলেন, প্রার্থী দিলেও অসুবিধা নেই। যেখানে বিএনপি মনোনয়ন পাবে, সেখানে জামায়াত থাকবে না। যেখানে জামায়াত পাবে, সেখানে বিএনপি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেবে। তবে ৯ ডিসেম্বর জোটের প্রার্থী চূড়ান্ত হবে।
উল্লেখ্য, ২০-দলীয় জোটের সঙ্গে আসন সমঝোতা করতে রবিবার দিনভর বৈঠক করে বিএনপি। দুপুরে এলডিপি, এনপিপিসহ জোটের কয়েকটি শরিকের সঙ্গে বৈঠক করেন দলটির নেতারা। গুলশান কার্যালয়ে ওই বৈঠকে শরিকরা তাদের সম্ভাব্য তালিকা বিএনপির কাছে হস্তান্তর করেন। এর পর বিএনপির নীতিনির্ধারকরা নিজেদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। পরে রাতে আবারও শরিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি নেতারা। সেখানে কোন কোন আসনে ছাড় দেয়া হবে তা জানিয়ে দেয়া হয়।



Discussion about this post