দুর্বৃত্তদের চাপাতি হামলায় নিহত জুলহাজ মান্নানের পরিবারের নিকট সহমর্মিতা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
বৃহস্পতিবার ইউএসএআইডির বাংলাদেশে মিশনের প্রধান ইয়ানিনা জারজালস্কি জুলহাজের বড় ভাই মিনহাজ মান্নানের কাছে ওবামার চিঠিটি তুলেদেন।
মিনহাজ মান্নান জানান, সকালে (বৃহস্পতিবার) মার্কিন দূতাবাস থেকে আমাদের ডাকা হয়। সেখানে যাওয়ার পর,চিঠিটি আমাদেরকে দেওয়া হয়।
গত ৫ মে লেখা চিঠিতে ওবামা বলেছেন, ‘জুলহাজকে হারিয়ে আপনাদের যে বেদনা তা বর্ণনাতীত। এমন কষ্ট ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমরা অন্তরের অন্তস্থল থেকে শোক প্রকাশ করছি। বাংলাদেশে একটি ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ায় অঙ্গীকার করেছিলেন জুলহাজ। যারা তাকে ভালোবাসতেন তাদের মাঝে জুলহাজের কীর্তি রয়ে যাবে।’
চিঠিতে আরো লিখেছেন, ‘জুলহাজের সাহসী, সহমর্মী উদ্যোম তার পরিচিত ও প্রীতিভাজন প্রত্যেকের মাঝে বেঁচে থাকবে আমার প্রত্যাশা এ বিষয়টি আপনাদের কিছুটা হলেও সান্তনা এনে দেবে।’
প্রসঙ্গত, মাকে নিয়ে যে বাড়িতে থাকতেন জুলহাজ, সেখানেই ২৫শে এপ্রিল বিকাল ৫টার দিকে জ্ঞাত চাপাতিধারিরা কুপিয়ে হত্যা করে। তাদের চাপাতির কোপে জুলহাজ ও তার বন্ধু তনয় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
বাংলাদেশে সমকামীদের অধিকারের কথা বলতে ২০১৪ সালে ‘রূপবান’ নামে একটি সাময়িকী প্রকাশ শুরু হয়, যার সম্পাদনা পরিষদে যুক্ত ছিলেন ৩৫ বছর বয়সী জুলহাজ।
পত্রিকাটির বছর পূর্তি উপলক্ষে পরের বছরের জানুয়ারিতে বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “বাংলাদেশে সমকামীরা অদৃশ্য জীবনযাপন করে, কিন্তু আমরা জানাতে চাই যে এই সমাজেই আমরা আছি এবং আমরা আপনাদের পরিবারেই সদস্য।”
“রূপবান সমকাম নয়, বরং সমপ্রেমে বিশ্বাসী মানুষের ভালবাসার অধিকারের বিষয়টি তুলে ধরতে চায়,” দাবি করে এধরনের পত্রিকা প্রকাশে সমস্যায় পড়ার কথাও বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির কর্মসূচি কর্মকর্তা জুলহাজ।
ইউএসএআইডিতে যোগ দেওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের প্রটোকল অ্যাসিটেন্ট হিসেবে কাজ করেছিলেন জুলহাজ।
‘রূপবান’র উদ্যোগে পহেলা বৈশাখে ‘রংধনু যাত্রা’ শিরোনামে শোভাযাত্রার উদ্যোগ এবারও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তা আটকে দেয়।
হত্যাকাণ্ডের এক দিন পর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় আনসার আল ইসলাম।




Discussion about this post