পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ১৩ এপ্রিল রাত পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে একটি সাদা মাইক্রোবাস থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে তাতে অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী ও রিকশাচালক আবদুল হাকিম নিহত হন।
এ ঘটনায় নিহত হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম অজ্ঞাতদের আসামি করে ১৫ এপ্রিল রাতে রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটির তদন্তভার গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আসে।
এই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গত ৩১ মে সাংসদপুত্র রনি ও তার গাড়িচালক ইমরান ফকিরকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার জানান।
তিনি বলেন, “গত ২৪ মে থেকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলাটি দেখছে। রনি নিজের লাইসেন্স করা বন্দুক দিয়ে গুলি ছুড়েছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।
“এটা আমরাও কনফার্ম। তবে আদালতে স্বীকার না করায় তাকে রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিল।”
তিনি বলেন, দুজনকে গ্রেপ্তারের পরদিন ১ জুন রনির গাড়িচালক ইমরান ফকির ঘটনার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। সে সময়ই রনির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিল আদালত।
তবে রিমান্ডে আনার দিনই রনি শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করলে তাকে প্রথমে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতাল এবং পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
অবস্থার উন্নতি হওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে বলে জানান এসআই দীপক।
“সেইদিন রাতে রনির কালো রঙের প্রাডো গাড়িতে আরও তিন জন উপস্থিত ছিল। তাদের খুঁজে বের করে আটকের চেষ্টা চলছে,” বলেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে রনির অবস্থান শনাক্ত করেন তারা।
ঘটনার একটি ভিডিওচিত্রও তাদের কাছে আছে বলে দাবি করেন তিনি।
তবে ছেলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে সাংসদ পিনু খান বলেছেন, “কেউ যখন তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থাকেন ঠিক একই সময় সে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় অন্য কোথাও এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে পারেন?”
আইনের প্রতি তার শ্রদ্ধা রয়েছে মন্তব্য করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। আমি ন্যায়বিচার চাই।”
নিহত রিকশাচালক হাকিমের গ্যারেজ মালিক মো. বাবু বলেন, “দুই সপ্তাহ আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আমারে ফোন দিছিলো। হাকিমের মা মনোয়ারা বেগমের লগে আমার যোগাযোগ আছে। আমরা মধ্যবাগে একই এলাকায় থাকি।”
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার রনির পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ আপনাদের হুমকি বা কোনো ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়েছেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কেউ আমার লগে বা হাকিমোর মায়ের লগে যোগাযোগ করে নাই।”




Discussion about this post