কারাবিধির ৫৬৯ ধারা অনুযায়ী, যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা ২০ বছর কারাভোগের পর মুক্তির আবেদন করতে পারেন। তাদের বয়স, আচার-আচারণ, মামলার ধরণসহ বেশ কিছু বিষয় ক্ষতিয়ে দেখে মুক্তির বিষয়টি বিবেচনা করে সরকার। অথচ গত ৩ বছর যাবৎ প্রায় সাড়ে ৯শ’ কয়েদির আবেদন পড়ে আছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে। মানবাধিকার কর্মীদের মতে, এর ফলে তাদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। আর কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, মুক্তির প্রসঙ্গটি বন্দিদের সুযোগ নয়, সরকারের বিবেচনার বিষয়।
ধারা মোতাবেক ২০ বছর কারাভোগের পর দণ্ডপ্রাপ্তরা মুক্তির আবেদন করতে পারেন। এই রীতিতে প্রতি বছরই সুবিধা পান কয়েদিরা। কিন্তু গত ৩ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এই প্রক্রিয়া। এ অবস্থায় বন্দিদের অর্জিত অধিকার উপেক্ষিত হচ্ছে বলে মনে করেন জাতীয় মানবাধীকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘যাদের ৩০ বছরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছিলো তাদের ২০ বছর কারভোগ হয়ে গেছে। ২০১০ থেকে ২০১৪ সালে তাদের অনেকেরই কারবাস পূর্ণ হয়ে গেছে। আবেদন করেও তারা এখন পর্যন্ত ছাড়া পায়নি।’
মুক্তি প্রত্যাশিরা বিধি অনুযায়ী আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক। তবে তিনি বলছেন, মুক্তির বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভর করে। কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন বলেন, ‘ইতোমধ্যে অনেকেই ২০ বছর কারাবাস ভোগ করেছে। তাদেরকে সরকার বিশেষ বিবেচনায় কারমুক্ত করতে পারেন। এটা সম্পূর্ণ সরকারের এখতিয়ার।’
বিভিন্ন কারাগার পরিদর্শন করে মুক্তি প্রত্যাশিত কয়েদিদের সঙ্গে কথা বলেছেন ড. মিজানুর রহমান। কারামুক্তির জন্য মানবাধিকার সংগঠনের উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন তিনি। বলেন, ‘অনেকেই বৃদ্ধ হয়ে গেছে, বাইরে বের হয়ে আর কোন কিছু করার মত পরিস্থিতি নেই তাদের। অন্তত মানবিক কারণে হলেও বিবেচনায় মুক্তি দেয়া যেতে পারে। এই প্রক্রিয়াটা ইতোমধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে।’
দেশের ৬৮টি কারাগারে বন্দি প্রায় ৭২ হাজার। এদের মধ্যে নানা মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত প্রায় ২১ হাজার জন। আর ২০ বছর কারাবাসের পর মুক্তি প্রত্যাশায় আছেন প্রায় সাড়ে ৯শ’ জন। সূত্র: ইন্ডিপেনডেন্ট টিভি।
Discussion about this post