বিডি ল নিউজঃ

বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, “ডু অর ডাই”। যা হবার তাই হবে। পিছু হটা যাবেনা। “মার এবং মরো।” এটা এক পক্ষের প্রধান সেনাপতি খালেদা জিয়ার নির্দেশ। এ নির্দেশ পালন করতে গিয়ে গত ১৬ দিনে পেট্রোল বোমা ও আগুনে কমপক্ষে ২৮ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। দ্বগ্ধ আরো অর্ধ শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে মৃৃত্যু যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন। রেহাই পাচ্ছেন না পুলিশ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরাও। এ সংখ্যা বাড়তে পারে যে কোন মুহুর্তে। অন্যদিকে গত কয়েকদিনে পুলিশের এ্যাকশনেও প্রাণ হারিয়েছেন বেগম খালেদার অনুগত তিন নেতা-কর্মী। ইতিমধ্যে র্যাব ও পুলিশের জালে শিবির ও ছাত্রদলের বড় মাপের বেশ কয়েকজন ক্যাডার পেট্রোলবোমাসহ ধরা পড়েছে।
গত ১৯ জানুয়ারী সোমবার কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন রাজধানীর খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান জনি (৩০)। নিহতের গায়ে ১৬ টি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর একদিন আগে বন্দুকযুদ্ধে নিহত জামাত নেতা ইমরুল কায়েসের (৩২) গায়েও ১৯টি গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে সূত্র জানায়।
১৬ জানুয়ারী চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট এলাকায় র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন ছাত্রদল নেতা মতিউর রহমান (২২)। এ ছাড়া গত ১৪ জানুয়ারী চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ট্রাকে আগুন দিতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন শিবিরকর্মী জোবায়ের। গত ১৬ দিনে অবরোধ চলাকালে ৬১৯ টি যানবাহনে আগুন ও ভাঙচুর এবং ৪ দফায় রেলে নাশকতা করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার “ডু অর ডাই” ঘোষণায় ইতোমধ্যে যাঁরা প্রাণ দিলেন এঁরা খালেদার রক্তের কেউ নন। নিহত ও আহতরা সাধারণ জনগণ অথবা বিএনপি, জামাত-শিবির অনুগত মাত্র।
চলমান “পেট্রোল বোমা অভিযান” কর্মসূচী অব্যহত থাকলে সেনাপতি মেডামের অনুগতরাও জনরোষ বা র্যাব-পুলিশের রোষে পড়বেন এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহতদের শরিরে গুলির সংখ্যাই তার জ্বলন্ত উদাহরণ। যুগান্তরের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত নিহত ছাত্রদল নেতা জনির মা”র আর্তনাদ সব মায়ের আর্তনাদ। প্রতিটি নিহতের ঘরে ঘরে আজ স্বজনদের অভিন্ন আহাজারি।
মেডামের দুই পুত্র স্বপরিবারে প্রবাসে। মেডাম পরিপাটি হয়ে নিরাপদে সুরক্ষিত অবস্থায় হুকুম করে যাচ্ছেন, ডু অর ডাই..। সোজা বাঙলায় আপনারা মারেন-মরেন। ভানু বন্দোপধ্যায়ের সেই জোকস্, “ঝুলে পড়েন আমি তো আছি”…। তিনিরা ক্ষমতায় না গেলেও পরিপাটি জৌলুস জীবন কাটাবেন, গেলেও তথৈবচ… ।
পক্ষান্তরে জনিদের স্বজনরা শুন্যতা নিয়ে সারাজীবন গুমরে কেঁদে বুক ভাসাবেন..। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড.সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম টিভি পর্দায় প্রশ্ন রাখেন, ক্ষমতায় কী এতো স্বর্গসুখ, নিরীহ মানুষ হত্যা করে হলেও ক্ষমতায় যেতে হবে?
ইতোমধ্যে সারাদেশে সহিংতার অভিযোগে অসমর্থিত সূত্র অনুযায়ী প্রায় ৭ হাজার গ্রেফতার হয়েছেন। গ্রেফতার অভিযান ক্রমশঃ জোরালো হচ্ছে। দ্রুত বিচার আইনে এদের বিচার করা হবে বলে সরকার ঘোষণা দিয়েছে। নিহত, আহত ও দণ্ডভোগের শিকারদের বলির পাঠা বানিয়ে জামাত শিবির সমর্থিত মেডাম খালেদার “ডু অর ডাই” রণনীতির ফলাফল যাই হোক স্বজন হারানোদের ক্ষত সারানোর উপায় কী কে দেবেন উত্তর? এতো রক্তের উপর দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া বা থাকার মানেটা কী?




Discussion about this post