নিজস্ব প্রতিবেদক: তথ্য গোপন করে মামলা বাতিলের আবেদন করায় দুর্নীতি মামলার আসামি মো. ফজলুল হক ও হলফকারী মো. আবুল হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ২১ জুলাই সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার (এসপি) ও কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) দু’জনকে গ্রেফতার করে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না। আর আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ।
এ মামলায় আসামি সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের স্টোর কিপার ফজলুল হককে ২০১৭ সালের ২৮ মে সাতক্ষীরা সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্টেট জামিন প্রদান করেন। সেই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে দুদক সাতক্ষীরা সিনিয়র দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেন। রিভিশন শুনানি শেষে দায়রা জজ আদালত ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই রিভিশন মঞ্জুর করে এবং আসামির জামিন বাতিল করে তাকে ১৫ দিনের মধ্যে ম্যাজিস্টেট আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
তবে, ওই নির্দেশনা সত্ত্বেও আসামি আত্মসমর্পণ না করে দুদকের ওই রিভিশনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা বাতিলের আবেদন করেন। ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই করা ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত মামলাটি বাতিলের বিষয়ে রুল জারি করেন।
কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্দেশনা সত্ত্বেও আত্মসমর্পণ না করে এবং তথ্য গোপন করে নিয়মবহির্ভূতভাবে মামলা বাতিলের আবেদন ককরেন তিনি; যার বিধান নেই। শুনানিতে বিষয়েটি আদালতের নজরে এলে ফজলুল হক ও তার জামিন আবেদনের হলফকারী আবুল হোসেনকে হাইকোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এরপরও হাজির না হওয়ায় তাদের গ্রেফতার করে করে হাজির করার নির্দেশ দিলেন হাইকোর্ট।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এ কেএ ম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, আসামি ফজলুল হক সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসে স্টোর কিপার হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে সিভিল সার্জনের সঙ্গে যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৭ কোটি ১০ লাখ ৪৩ হাজার ৭৪৫ টাকার মালামাল আত্মসাৎ করেন। ওই অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. মাহতাব উদ্দিন ২০১৭ সালের ২১ মে সিভিল সার্জন ডা. সালাহ আহমেদ ও ফজলুল হককে আসামি করে সাতক্ষীরা সদর থানার মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে।
Discussion about this post