বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী কল্পনা চাকমা অপহরণের ২০ বছর পূর্তি হচ্ছে আজ রবিবার। কিন্তু দীর্ঘ সময় পর হলেও মামলাটির এখনো কোনো সুরাহা হয়নি।
গভীর রাতে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে তাকে নিজের বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তার আর কোনো খোঁজ মেলেনি। এঘটনায় ১৯৯৬ সালের ১২ই জুন কল্পনা চাকমার ভাই কালিন্দী কুমার চাকমা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছিলেন। কল্পনা চাকমা উইমেন্স ফেডারেশনে অর্গানাইজিং সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করতেন।
মামলার ওপর নজর রাখছেন আইন ও শালিশ কেন্দ্রের নীনা গোস্বামী জানান, ‘মামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত অনেক তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। শেষ পর্যন্ত এটা সিআইডির তদন্তাধীন ছিল। বর্তমানে মামলাটি পুন:তদন্তের জন্য আছে এবং এটির পরবর্তী তারিখ চলতি বছরের ১২ই জুলাই।
এর আগে ২০১৩ সালে কল্পনা চাকমার অপহরণ ঘটনায় সিআইডির দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের প্রত্যাখ্যান করে তার পরিবার। তারা পরবর্তীতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের আবেদনও জানায়। সেসময় কল্পনা চাকমার পরিবারের আইনজীবী জুয়েল চাকমা জানান, ‘এর আগে যেহেতু পুলিশ তদন্ত করেছে, সিআইডি তদন্ত করেছে কিন্তু তারা অপহরণের বিষয়ে কোনো তথ্য উদঘাটণ করতে পারেনি, সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্তের আবেদন জানিয়েছি।’
মামলাটির শুরু থেকেই একধরনের ‘সেনসেশান’ কাজ করেছে, মানুষের মধ্যে আলোচনা চলেছে আর সেটা এখনও আছে বলে মনে করেন নীনা গোস্বামী। তিনি বলেন, মামলার তদন্তের প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত মামলার কোনো অগ্রগতি হয় না।
১৯৯৬ সালের জুন মাসে কল্পনা চাকমার অপহরণের পর ওই ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। তার পরিবার বরাবরই অপহরণকারী হিসেবে রাঙামাটিতে কর্তব্যরত সামরিক বাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছেন। তখন এ ঘটনা প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে হতাহতের ঘটনাও ঘটে।
এখনও তদন্তের কাজ শেষ না হওয়াতে কল্পনা চাকমার অপহরণের বিচারের কাজও থেমে রয়েছে। মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আগেই পরলোকগমন করেছেন কল্পনা চাকমার মা। আর কল্পনা চাকমার পরিবার তার সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য না পাওয়ায় এখনো তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা থেকে বিরত রয়েছেন। সূত্র: বিবিসি




Discussion about this post