নিজস্ব প্রতিবেদক: আইন ও বিচার বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সিলেটের শিশু সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যা মামলাটি যেমন দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয়েছিল, একইভাবে নুসরাত হত্যা মামলাটিও নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে। এই মামলার চার্জশিট দাখিলের পরপরই দ্রুত পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান আইনমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘জাতীয় আইনগত সেবা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মামলা আপিল বিভাগে দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এর আগে গত ১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের সুপারিশ-সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলাটি প্রয়োজনে দ্রুত বিচার আইনে পরিচালিত হবে। তিনি আরো বলেন, এ রকম মামলা যখনই হবে, তখনই ফাস্ট ট্র্যাক করা হবে। রাফি হত্যা মামলাটিকে ফাস্ট ট্র্যাক করার জন্য প্রসিকিউশনকে নির্দেশ দেওয়া হবে। প্রয়োজন হলে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে।
সেদিন সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, রাফির হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটি তদন্ত করছে। দ্রুত অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় এবং অপরাধে সহযোগিতার অভিযোগে প্রত্যাহার হওয়া সোনাগাজীর ওসিসহ যারাই জড়িত রয়েছে, তাদের প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় জড়িত কেউ বিন্দুমাত্র ছাড় পাবে না।
উল্লেখ্য, নুসরাত জাহান রাফি ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিমের পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে কৌশলে একটি বহুতল ভবনে ডেকে নিয়ে যায় অধ্যক্ষের ভাগ্নি পপি। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত।



Discussion about this post