ডেস্ক রিপোর্ট
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর তিনটি মেডিকেল রিপোর্ট ও একটি ছাড়পত্রে অসামঞ্জস্যতার ব্যাখ্যা দিতে সিভিল সার্জন, পুলিশ সুপারসহ (এসপি) ১১ জনের নামসহ তলবের লিখিত আদেশ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
ওই ১১ জন হলেন- ব্রাক্ষণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিছুর রহমান, নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এটিএম আরিফুল হক, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান, ব্রাক্ষণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. একরামুল রেজা, ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা বোর্ডের সদস্য ডা. ফাহমিদা আক্তার, ডা. তোফায়েল হক, ডা. ফরিদা ইয়াসমিন এবং নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সৈয়দ মো. শাহরিয়ার, ডা. তাসনিম তামান্না, ডা. মো. শফিকুল ইসলাম।

আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।লিখিত আদেশে ওই ঘটনায় দুটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও পুলিশ মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রোববার (৩১ জানুয়ারি) স্বাক্ষরের পর ১২ পৃষ্ঠার এই আদেশ প্রকাশ করা হয়।
এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি সাত বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় তিন ধরনের প্রতিবেদনে গরমিল পাওয়ায় অসন্তোষ জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে তলব করে আদেশ দেন হাইকোর্ট।
আইনজীবীরা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ১১ বছর বয়সী আরেক শিশুর বিরুদ্ধে করা মামলায় ভুক্তভোগীর ডাক্তারি পরীক্ষায় একাধিক চিকিৎসকের ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবেদন দেয়া এবং তদন্তে গাফিলতির জন্য সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও এসপিসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১১ জনকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
আসামির জামিনের শুনানি নিয়ে ১৭ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে ওই দিন জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. শাহপরান চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম।সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম আদেশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।

আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ওই দিন এ বিষয়ে শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে চিকিৎসকদের বিষয়ে স্বাস্থ্য সচিব এবং পুলিশদের জন্য মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) তিন সদস্য বিশিষ্ট পৃথক কমিটি গঠন করে তদন্ত শেষে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আইনজীবীরা বলেন, ‘১১ বছর বয়সী ওই শিশুর জামিন আবেদনের ওপর শুনানির সময় দাখিল করা নথিতে ধর্ষণ বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য বা গরমিল পাওয়া যায়। তাই আদালত উষ্মা প্রকাশ করেন।’
এছাড়া ধর্ষণ মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আদালত এবং আইনের সংস্পর্শে আসা শিশু ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে কোনো রকম হয়রানি করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
Discussion about this post